পাথরপ্রতিমা, 5 অগস্ট: একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে এখনও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত। সাপে কাটা রোগীকে বাঁচাতে গ্রামবাংলার মানুষের আস্থা ওঝা-গুনিনের উপর। এই কুসংস্কারের মাশুল দিত হল এক পরিবারকে । মৃত্যু হল 8 বছরের এক নাবালকের (Snake Byte a Minor Boy) ৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনা পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্র খবর, শংকর বর ও মলতি বরের এক মাত্র ছেলে শুভ বর। সংসারের হাল ফেরাতে দম্পতি দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন । শুভ ঠাকুরদা ও ঠাকুরমার কাছে থাকত । শুক্রবার ভোরে ঠকুমার কাছে ঘুমাচ্ছিল ওই নাবালক ৷ সেইসময়ে হঠাৎই যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে শিশুটি। পাশেই ছিলেন ঠাকুমা এবং দিদি। নাতির কান্নায় ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের ৷ হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান বিছানার মধ্যে বিষধর সাপ এবং একটি ব্যাঙ । ঠাকুমা বুঝতে পারে নাতিকে কামড়েছে সাপ। চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে এলাকার নিরঞ্জন বর নামে ওঝার কাছে নিয়ে যান । চলে ঝাড়ফুঁক ৷ অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার সকাল 9টার সময় গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক ওই নাবালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
আরও পড়ুন: বেহুলা-লখিন্দরের স্মৃতি উসকে সাপে কাটা মৃতদেহ ভেলায় ভাসাল পরিবার
ঘটনার পরেই ওঝাকে আটকে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ দেখায় । পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশ এসে ওঝাকে আটক করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । এই প্রসঙ্গেই বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বরুন বর জানান, বারে বারে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করলেও এখনো মানুষ কুসংস্কারের অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে। মানুষকে কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।