ফলতা, 26 এপ্রিল: মোটর চালিত নৌকায় বোঝাই সারি সারি বস্তা ভরতি কয়েন। যা নিয়ে শোরগোল দক্ষিণ 24 পরগনার নৈনান ঘাটে ৷ খবর পেতেই সাধারণ মানুষ ভিড় জমাতে থাকেন কয়েনের বস্তা দেখতে। এমনকী কয়েনের বস্তা নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে আটকেও রাখেন এলাকার বাসিন্দারা। এত বস্তা কয়েন কোথা থেকে এল, প্রশ্ন ছিল সবার মনে। তাই রহস্যভেদ করতেই বস্তা ভরতি কয়েনের নৌকা আটকে পুলিশকে খবর দেন এলাকার বাসিন্দারা । ঘটনা নিয়ে তদন্তের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে রহস্যভেদ করলেন ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুনকুমার দে ।
তিনি জানান, হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার মোল্লাহাট এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সিং ৷ ইটের ব্যবসা করতেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই তাঁর সঙ্গে নামখানা এলাকার লালপোলের বাসিন্দা নিউ লোকনাথ বিল্ডার্সের প্রোপাইটার রাধাকৃষ্ণ মান্নার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। এমনকী ব্যবসায়িক লেনদেনে রাধাকৃষ্ণ মান্নার কাছে তিনি 3 লক্ষেরও বেশি টাকা পেতেন । তাই ধার পরিশোধ করতে রাধাকৃষ্ণ মান্না এক টাকার কয়েন ভরতি 125 বস্তা বিশ্বজিৎ সিংকে গত 23 এপ্রিল রবিবার দেন । প্রতিটি বস্তায় আড়াই হাজার টাকা করে কয়েন ছিল বলে জানান এসডিপিও ।
এই টাকাই কয়েন আকারে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে এলাকার এক ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছিল ৷ যে ঠিকাদারের কাছে টাকা পেতেন রাধাকৃষ্ণ মান্না। সেই ঠিকাদার খুচরো এক টাকার কয়েন দিয়ে রাধাকৃষ্ণ মান্নার টাকা পরিশোধ করেন ৷ এরপর সেই টাকাই রাধাকৃষ্ণ বিশ্বজিৎ সিংকে দিয়ে ধার শোধ করেন । সেই মর্মে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে একটি লিখিত দেওয়া হয় । এরপরেই বিশ্বজিৎ সিং সেই বস্তা ভরতি কয়েনগুলি নিয়ে ফিরছিলেন ৷ যখন তিনি নৈনান ঘাট থেকে নৌকায় চেপে হাওড়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন ৷ সেইসময়ই এলাকার বাসিন্দারা এত টাকা দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন ।
রামনগর থানার পুলিশকে খবর দেন তাঁরা । পরে রামনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ৷ সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেন আধিকারিকরা ৷ বিশ্বজিৎ সিংকে টাকা-সহ নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় । অবশ্য এই খুচরো টাকার পেছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মিতুনকুমার দে ।
আরও পড়ুন: গোসাবাতে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত চার দুষ্কৃতী