কোচবিহার, 10 মার্চ : কোচবিহারে কি এবার কাকা-ভাইপোর বিরোধ মিটতে চলেছে (uncle-nephew going to settlement)। জেলা প্রতিনিধি সভাপতি পদে দ্বিতীয় বার বসার পর জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের কথাতেই এমনই ইঙ্গিত মিলছে।
বুধবার জেলায় ফিরে তিনি বলেন, "রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আমার রাজনৈতিক অভিভাবক। আমি ওঁর সঙ্গে অবশ্যই দেখা করে জেলায় দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করব।" আর এতেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে যে, তাহলে কি এবার কাকা-ভাইপোর বিরোধ মিটতে চলেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ পার্থপ্রতিম রায়ের। রবীন্দ্রনাথকে তিনি কাকা বলে ডাকেন ৷ তাই কোচবিহার রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথ-পার্থপ্রতিম কাকা-ভাইপো নামে পরিচিত ৷ পরবর্তীতে পার্থপ্রতিম সাংসদ হন। এরপরই দলের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, এ নিয়ে দু‘জনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল তৎকালীন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে প্রার্থী না করে পরেশচন্দ্র অধিকারীকে প্রার্থী করে তৃণমূল । রাজনৈতিক মহলের অভিমত, পার্থপ্রতিমকে প্রার্থী না করার পিছনে তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ছিল। লোকসভা নির্বাচনে পরেশ অধিকারী পরাজিত হন। জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। জেলা সভাপতি করা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে। এরপর গত বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে। যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের প্রভাব রয়েছে। অপরদিকে, নাটাবাড়িতে প্রার্থী করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। এখানে পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়ি।
সূত্রের খবর, দুই নেতাই চেষ্টা করছিলেন নির্বাচনে একে অপরকে হারাতে। বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোলে দেখা যায় শীতলকুচিতে তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় যেমন হেরেছেন, তেমনি হেরেছেন নাটাবাড়ি তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় তৃণমূলের ফল খারাপ হওয়ায় জেলা সভাপতির পদ থেকে পার্থপ্রতিম রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। মাস ছয়েক পর ফের জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে ফিরিয়ে আনা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে। আর জেলা সভাপতি হওয়ার পর পার্থপ্রতিম রায় বুঝে গিয়েছেন যে জেলায় গোষ্ঠীবাজি করে টিকে থাকা যাবে না। তাই তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, "দল ও সংগঠনের স্বার্থে নতুন জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।"