কোচবিহার, 17 নভেম্বর : রাত পোহালেই ঐতিহাসিক রাস উৎসবের সূচনা হতে যাচ্ছে কোচবিহারে ৷ আর এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে সাজো সাজো রব কোচবিহার শহরে ৷ রাস উৎসব উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মদনমোহন মন্দির প্রথমে ‘পসার ভাঙা’ হবে ৷ তার পর শুরু হবে রাসের বিশেষ পুজো ৷ এর পর রাত ন’টায় রাস চক্র ঘুরিয়ে 200 বছরের প্রাচীন রাস উৎসবের সূচনা হবে কোচবিহারে ৷
কোচবিহার দেবত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, 1812 সাল নাগাদ মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ ভেটাগুড়িতে রাসপূর্ণিমার দিন বিশেষ পুজো করে রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করেন ৷ সেই উপলক্ষ্যে ভেটাগুড়িতে 15 দিন ব্যাপি মেলা বসে ৷ পরবর্তীতে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির গড়ে তুললে, সেখানে রাস উৎসব শুরু হয় ৷ পাশাপাশি মন্দিরের পাশের মাঠে বিশাল এলাকা জুড়ে বসে মেলা ৷ যা উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম মেলা বলে পরিচিত ৷ আগে রাজারা রাসচক্র ঘুরিয়ে এই উৎসবের সূচনা করলেও, বর্তমানে কোচবিহার জেলা প্রশাসন এই রাস উৎসবের সূচনা করে ৷
আরও পড়ুন : Kashmir Winter: শ্রীনগরে মরসুমের শীতলতম রাত, তাপমাত্রা নামল হিমাঙ্কের নিচে
রীতি মেনে রাসপূর্ণিমার সন্ধ্যায় প্রথমে ‘পসার ভাঙা’ হবে ৷ সন্ধ্যা 6টা নাগাদ এক ওড়িয়া ব্রাহ্মণকে দিয়ে এই পসার ভাঙার রেওয়াজ রয়েছে ৷ এই অনুষ্ঠানে একটি মাটির হাঁড়িতে চাল, তিল, যব, দুধ, ধূপকাঠি প্রভৃতি দিয়ে মদনমোহনের সামনে নৃত্য পরিবেশন করা হয় ৷ এর পর সেই মাটির হাড়ি ফেলে দিয়ে ভাঙা হয় ৷ একে ‘পসার ভাঙা’ বলে ৷ বংশপরম্পরায় একটি পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন এই আচার-অনুষ্ঠানে ৷ আর এই অনুষ্ঠানের পরেই শুরু হয় রাসের বিশেষ পুজো ৷ পুজো শেষ হওয়ার পর রাত ন’টা নাগাদ কোচবিহারের রাস উৎসবের সূচনা হবে ৷ আগে কোচবিহারের রাজারা রাস উৎসবের উদ্বোধন করলেও এখন পদাধিকারবলে কোচবিহারের জেলাশাসক উৎসবের সূচনা করেন ৷
করোনার কারণে গত বছর মেলা অনুষ্ঠিত না হলেও, এবার মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৷ তবে, মেলায় এবার 50 শতাংশ দোকান নিয়ে মেলা বসবে ৷ মেলা চলবে 15 দিন ৷ কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক শেখ রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘রাস উৎসবের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে ৷ নিয়ম মেনেই বৃহস্পতিবার রাতে রাস উৎসবের সূচনা হবে ৷’’