কোচবিহার, 10 জুন : অন্য বছরের মতো এবছরও কোচবিহারের ফুলচাষিরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ভালো ফলনের, ভালো মুনাফার মুখ দেখতে চেয়েছিল ৷ কে না চায়? বিশাল খরচ ও কঠিন পরিশ্রমে ফুল হয়েওছিল সেইমতো ৷ কিন্তু লাভের গুড়ে বালি ৷ লকডাউনের জেরে সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারে নেই চাহিদা ৷ যানবাহন না চলায় ফুলের জোগান দিতে পারেনি ভিনরাজ্যে ৷ লকডাউন কিছুটা উঠলেও ইন্টারস্টেট বাস সার্ভিস চালু না হওয়ায় অসমের গুয়াহাটিতে ফুল পাঠাতে পারছেন না ফুলচাষিরা । ফলে নষ্ট হয়েছে হাজার হাজার ফুল । লকডাউনের প্রভাবে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে কোচবিহারের ফুলচাষিদের । কবে লকডাউন উঠবে, আবার কবে বাংলার সাথে অসমের বাস যোগাযোগ চালু হবে সেদিকে তাকিয়ে কোচবিহারের ফুলচাষিরা ।
কোচবিহারের চকচকা গ্রামের ফুলচাষি দুলাল সরকার, জ্যোতিষ সরকাররা মূলত জারবেরা ও গোলাপের চাষ করেন । তাঁদের পলিহাউজ়ে উৎপাদিত হাজার হাজার ফুল যায় প্রতিবেশী রাজ্য অসমের গুয়াহাটিতে । কোচবিহারের স্থানীয় বাজারেও কিছু ফুল বিক্রি করা হয় । কিন্তু লকডাউন শুরু হতেই অসম ও বাংলার মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে অসমের ফুলবাজারে ফুল পাঠানো বন্ধ । অনুষ্ঠান না থাকায় স্থানীয় বাজারেও ফুল যাচ্ছে না । এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা কোচবিহারের ফুলচাষিরা । গাছ বাচানোর জন্য বহু ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে । লকডাউন শিথিল করা হলেও অসমের সঙ্গে বাস পরিষেবা চালু হয়নি । ফলে গুয়াহাটিতে ফুলের বাজার খুললেও ফুল পাঠানো যাচ্ছে না ।
ফুলচাষি দুলাল সরকার বলেন, ‘‘আমরা প্রধানত অসমে ফুল পাঠাই ৷ কিন্তু ইন্টারস্টেট বাস সার্ভিস চালু না হওয়ায় পাঠাতে পারিনি ৷ কয়েক লাখ টাকার ফুল ফেলে দিয়েছি । ঋণ নিয়ে ফুল চাষ করেছি । কীভাবে ঋণ শোধ করব জানা নেই ।’’
আর এক ফুলচাষি জ্যোতিষ সরকার বলেন, ‘‘গুয়াহাটিতে 6 টাকা পিস ফুল বিক্রি করতাম । এখন সব বন্ধ ।’’
এবিষয়ে জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানান, ভিনরাজ্যে বাস পরিষেবা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি । নির্দেশিকা এলে জানিয়ে দেওয়া হবে ৷
কবে চালু হবে কোচবিহার থেকে অসমে বাস চলাচল, সেদিকে তাকিয়ে ফুলচাষিরা ।