দিনহাটা, 24 এপ্রিল : রাতারাতি কোটিপতি ! তাঁর জীবনে এমনও দিন আসবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি কোচবিহারের কৃষক সিরাজুল শেখ ৷ তাই চুরির আশঙ্কায় সহজ সরল সিরাজুল টিকিটটি এক বন্ধুর জিম্মায় রেখেছিলেন ৷ আর তাতেই বাধল বিপত্তি ৷ এক কোটি টাকা প্রথম পুরস্কার ওঠা টিকিটের মালিকানা নিয়ে তিনজন পৌঁছল থানায় ৷ যে কারণে কোটিপতি হয়েও প্রথমবারের জন্য থানার লকআপে রাত কাটালেন সিরাজুল ৷
শনিবার সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ লটারি টিকিটে প্রথম পুরস্কার বাবদ 1 কোটি টাকা জেতেন কোচবিহারের চৌধুরীহাটের খাটামারি গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল শেখ (Farmer Wins Lottery)। চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি ৷ চৌধুরীহাট বাজারের জনৈক টিকিট বিক্রেতা ফোন করে তাঁকে এ খবর জানাতেই মনে আশঙ্কা দেখা দেয় ৷ যদি রাতে টিকিট চুরি হয়ে যায় বা চোরে নিয়ে পালায় ৷ এই ভেবেই ওই রাতেই লটারির টিকিটটি বন্ধু আশরাফুল আলমকে রাখার জন্য দেন । টিকিট পেয়ে মাথা ঘুরে যায় আশরাফুলের ৷ সোজা দিনহাটা-2 নম্বর ব্লকের সাহেবগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে দাবি করেন, ওই টিকিটের মালিক তিনি । পরে বিষয়টি জানতে পেরে প্রকৃত প্রাপক সিরাজুলও থানায় হাজির হন । খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই কিছুক্ষণ পর সিরাজুল ও আশরাফুলের আরও এক বন্ধু রবিউল হক থানায় গিয়ে দাবি করেন, টিকিটের মালিক তিনিই ।
অর্থাৎ তিনজনেই একে একে দাবি করে যে প্রথম পুরস্কার পাওয়া লটারি টিকিটটি তাঁদের । গোটা ঘটনায় ধন্দ্বে পড়ে যায় পুলিশ । পুলিশ কিছুই বুঝে উঠতে পারে না, একটি টিকিট কীভাবে তিন জনের হতে পারে ৷ তাই তিন বন্ধুকে দেয় সেই রাতে লকআপে ঢুকিয়ে দেয় ৷ রাতভর বন্দি থাকে তিনজন ৷
আরও পড়ুন : কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কোচবিহারে চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
রবিবার সকাল হতেই থানায় ডেকে পাঠানো হয় টিকিট বিক্রেতাকে । টিকিটের প্রকৃত প্রাপক কে তা জানতে চাওয়া হয় ৷ টিকিট বিক্রেতা সিরাজুল শেখের নাম জানালে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায় ৷ পুলিশ লটারিটি প্রকৃত পুরস্কার প্রাপক সিরাজুলের হাতে তুলে দেয় । বাকি দু'জনকে অবশ্য মুচলেখা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় । লটারি জিতে কোটিপতি হয়ে সিরাজুল জানান, ওই টাকা দিয়ে ছেলে ও বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাবেন ৷