কোচবিহার, 19 নভেম্বর : চিরাচরিত প্রথা মেনে রাসচক্র ঘুরিয়ে 200 বছরের প্রাচীন রাস উৎসবের সূচনা হল কোচবিহারে । বৃহস্পতিবার রাত 9টা নাগাদ কোচবিহার মদনমোহন বাড়িতে বিশেষ পুজোর পর রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করেন কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান । এরপর দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মদনমোহন বাড়ির দরজা । আগে রাজারা এই রাসচক্র ঘুরিয়ে এই উৎসবের সূচনা করতেন । এখন রাজা না থাকায় পদাধিকারবলে জেলাশাসকই এই উৎসবের সূচনা করেন ।
রাসমেলার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী । জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, "এদিন পুজো দিয়ে ভগবান মদনমোহনের কাছে কোচবিহারবাসীর মঙ্গল কামনা করেছি ।" কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, 1812 সাল নাগাদ মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ ভেটাগুড়িতে রাসপূর্ণিমা দিন বিশেষ পুজো করে রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করেন । সেই উপলক্ষ্যে ভেটাগুড়িতে 15 দিনব্যাপী মেলা বসে । পরবর্তীতে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির গড়ে তুললে সেখানে রাস উৎসব শুরু হয় । পাশাপাশি মন্দিরের পাশের মাঠে বিশাল এলাকা জুড়ে বসে মেলা যা রাসমেলা বলেই পরিচিত ।
আরও পড়ুন: রাসমেলার সরকারি অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধি, বিতর্ক কোচবিহারে
শুরু থেকে রাজারা রাসচক্র ঘুরিয়ে এই উৎসবের সূচনা করলেও বর্তমানে কোচবিহারের জেলাশাসক এই রাস উৎসবের সূচনা করেন । রীতি মেনে এদিন সন্ধ্যায় প্রথমে 'পসার ভাঙা' হয় । সন্ধ্যা 6টা নাগাদ ওড়িশার ব্রাহ্মণকে দিয়ে এই পসার ভাঙা হয় । আর এই অনুষ্ঠানের পরেই শুরু হয় রাসের বিশেষ পুজো । পুজো শেষ হওয়ার পর রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করেন জেলাশাসক । করোনা প্যানডেমিকের কারণে গত বছর মেলা অনুষ্ঠিত না হলেও এবার মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । তবে মেলায় এবার 50 শতাংশ স্টল বসেছে ।