কোচবিহার, 14 এপ্রিল : শীতলকুচিতে গুলিতে মৃত বিজেপি কর্মীর দাদুকে জোর করে মুখ্যমন্ত্রী সভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে । বুধবার বিকেলে এমনই দাবি করলেন মৃত বিজেপি কর্মী আনন্দ বর্মণের বাবা জগদীশ বর্মণ ও মা বাসন্তী বর্মণ ।
10 এপ্রিল চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিন পাঠানটুলি গ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী আনন্দ বর্মণের ৷ প্রথমবার ভোট দিতে এসে প্রাণ হারান 18 বছরের আনন্দ ৷ বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি করেছে । এরপর ওইদিনই শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় আরও চারজনের ৷ তিনদিন কোচবিহারে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন ৷ নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে দেখা করতে যান মৃতদের পরিবারের সঙ্গে ৷ এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিজেপির কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মৃত বিজেপি কর্মী আনন্দ বর্মণের পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা দেখা করবেন না এবং কোনওরকম সাহায্যও নেবেন না । কিন্তু আজ সকালে মাথাভাঙায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি কর্মী আনন্দ বর্মণের দাদু ক্ষিতীশ রায় । এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পরিবারের দুজনের চাকরির দাবিও করেন । পরে ক্ষিতীশবাবু জানান, " মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দু'জনের চাকরির দাবি জানিয়েছি । মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ।" তিনি এও বলেন,"আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আছি ।" গতকালের পরিবারের তরফ থেকে করা বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এরকম সুর বদলে অবাক হন অনেকেই ৷
কিন্তু এবিষয়ে মৃত আনন্দ বর্মণের বাবা জগদীশ বর্মণ বলেন, আনন্দের দাদুকে ওখানে জোর করে, টাকার লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । এবিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না । দাদু কী বলল তাতে কিছু এসে যায় না ৷ এমনই বক্তব্য আনন্দের বাবার ৷ তাঁর স্পষ্ট কথা, তাঁর ছেলে সুতরাং তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন ৷ জগদীশবাবু এদিন স্পষ্ট এও জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে তাঁরা কোনও সাহায্য নেবে না ৷ তৃণমূল সরকার তাঁর ছেলেকে মেরেছে ৷
আরও পড়ুন : দিদি আমার বাচ্চাকে কোলে নিলেন, সাহস পেলাম ; বললেন নিহতের স্ত্রী
পাশাপাশি আনন্দের বাবা পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি তাঁর বড় ছেলের জন্য তিনি চান না ৷ তাঁরা চান রাজ্যে বিজেপি সরকার আসুক এবং বিজেপি সরকার এলে যেন তাঁর আরেক ছেলেকে চাকরি দেওয়া হয় ৷ আনন্দের মা বাসন্তী দেবীর কথায়, তাঁর সঙ্গে তাঁর বাবা কোনওরকম কথা না বলেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গেছেন ৷ তিনি এবিষয়ে কিছুই জানেন ৷