কোচবিহার, 9 অক্টোবর: যে রাসচক্র ঘুরিয়ে কোচবিহারের রাস উৎসবের সূচনা হয় তিন পুরুষ ধরে সেই রাসচক্র তৈরি করে আসছেন কোচবিহার শহর সংলগ্ন তোর্ষা নদীর পাড়ের এক মুসলিম পরিবার (Cooch Behar Rash)। রবিবার লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন উপোষ করে ওই রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করলেন আলতাফ ।
জানা গিয়েছে, 1893 সাল নাগাদ মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের উদ্যোগে বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির গড়ে তোলা হয় ৷ সেখানেই প্রতিবছর রাস পূর্ণিমা তিথিতে রাস উৎসব শুরু হয় । আগে রাজারা রাসচক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করতেন । এখন দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক এই উৎসবের সূচনা করেন । হিন্দু, মুসলিম ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় এই রাসচক্র ।
আরও পড়ুন: বিশ্বজনীন স্বীকৃতিতে আরও রঙিন কোভিড পরবর্তী তিলোত্তমার প্রথম পুজো কার্নিভাল
প্রথমদিকে রাজাদের তরফে এই রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় কোচবিহারের হরিণচওড়া এলাকার বাসিন্দা পান মামুদ মিঞাঁকে । পরবর্তীতে তাঁর ছেলে আজিজ মিঞাঁ ওই রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব পান । এরপর তাঁর ছেলে আলতাফ মিঞাঁ ওই রাসচক্র তৈরি করে আসছেন । লক্ষ্মীপুজোর দিন উপোস থেকে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করেন আলতাফ । পরবর্তীতে একমাস নিরামিষ খাবার খান । এরপর রাসপূর্ণিমার দিন মদনমোহন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পুরো রাসচক্র তৈরি করেন । পাশাপাশি আলতাফ মিয়াকে ট্রাস্টের তরফে 7000 টাকা মাসিক মাইনের চাকরি দেওয়া হয়েছে । এবছরও রাস পূর্ণিমার দিন ওই রাসচক্র ঘুরিয়ে এই উৎসবের সূচনা হবে । তাই রবিবার লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করলেন তিনি ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ঢাক বাজানো, সাঁওতালি নাচে জমজমাট পুজো কার্নিভাল
আলতাফ মিঞাঁ জানান, রাজ আমল থেকেই প্রথা রয়েছে লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করা হয় । আমিও সেই প্রথা মেনে আসছি ।