বোলপুর, 26 নভেম্বর: পৌষমেলা (Poush Mela 2022) নিয়ে বৈঠক ডেকেও অনুপস্থিত থাকলেন বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) ! এর ফলে ভেস্তে গেল মেলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত জরুরি আলোচনা ৷ ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় ৷ এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা ৷ জেলাশাসক জানান, উপাচার্যকে বৈঠকে আসার জন্য ফোন করা হলে, তিনি ফোন ধরার সৌজন্যটুকুও দেখাননি !
ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার প্রস্তুতি কীভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতেই শনিবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে বৈঠক ডেকেছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ সেই মতো, যথা সময়েই উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ এবং জেলাশাসক বিধান রায় ৷ সেইসঙ্গে, বৈঠকে যোগ দিতে হাজির হয়ে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও, বোলপুর পৌরসভার আধিকারিক, বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিনিধি এবং শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা ৷ বিশ্বভারতীর তরফে উপস্থিত হন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাত-সহ অন্যরা ৷ কিন্তু, প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও উপাচার্য সেখানে পৌঁছননি ৷
আরও পড়ুন: প্রায় 10 ঘণ্টা পর ঘেরাও মুক্ত উপাচার্য, পড়ুয়াদের আন্দোলনে উত্তাল বিশ্বভারতী
বৈঠকে না আসার কারণ হিসাবে উপাচার্য জানান, তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ! সেই কারণেই পূর্বপল্লিতে নিজের বাসভবন 'পূর্বিতা' থেকে বের হতে রাজি হননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ একথা জানার পর বৈঠকে উপস্থিত বাকিদের পক্ষ থেকে উপাচার্যকে আনতে পুলিশ পাঠানো হয় ৷ তাঁকে আনতে যান বোলপুর থানার আইসি ও শান্তিনিকেতন থানার ওসি ৷ সঙ্গে ছিলেন প্রচুর পুলিশকর্মী ৷ কিন্তু, তারপরও বাসভবন থেকে বের হননি উপাচার্য ৷ ফলে পুলিশকেও ফিরে আসতে হয় ৷
বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এমন আচরণে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ৷ তিনি বলেন, "তিনি আসলে পৌষমেলা করতেই চান না ৷ তাই এরকম আচরণ করলেন ৷ এ তো বোঝাই যাচ্ছে ৷ আমরা প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করেছি ৷ তিনি বৈঠক ডেকেও এমন আচরণ করলেন ! এখনও ওঁর যদি শুভবুদ্ধি হয়, মেলা করতে চান, তাহলে আমরা সহযোগিতা করব ৷"
জেলাশাসক বিধান রায় সুর আরও চড়িয়ে বলেন, "এটা যে অবমাননা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ যেখানে স্বয়ং মন্ত্রী, আমি এবং জেলার পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত রয়েছেন, সেখান আসতে ওঁর নিরাপত্তার অভাব বোধ হয়েছে ! এখানে কিছু বলার নেই ৷ এমনকী, ওঁকে ফোন করা হলে ফোন ধরার সৌজন্যটুকুও দেখাননি ৷ এটা অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক ৷ তবে, পৌষমেলা হবে ৷ বিশ্বভারতী মাঠ না-দিলে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে ৷"