বোলপুর, 10 জুন: পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যখন বিরোধীদের সঙ্গে শাসকদলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, সেখানে উলট পুরাণ বীরভূমে ৷ অনুব্রত-হীন বীরভূমে তৃণমূলের হাতে তখন আক্রান্ত খোদ তৃণমূল ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠল সিঙ্গি গ্রাম। অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর লোকেদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় কাজল শেখ গোষ্ঠীর লোকজন ৷ যার জেরে ফের একবার বীরভূমে অস্বস্তিতে শাসকদল ৷
গরুপাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডল ৷ তবে এখনও তিনিই বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন ৷ ওয়াকিবহল মহলের তৃণমূলে অনুব্রতই একমাত্র ব্যতিক্রম, যিনি দুর্নীতির অভিযোগে জেলে থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ছেঁটে ফেলেনি দল ৷ তাঁর উপরে যে এখনও মমতা-অভিষেকের অগাধ আস্থা তাও স্পষ্ট ৷ কিন্তু তারপরও পঞ্চায়েত ভোটে অনুব্রত ঘনিষ্ঠরাই আক্রান্ত হলেন তাঁর জেলাতেই ৷ বীরভূম জেলাকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী ? তা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তাল বোলপুর থানার সিঙ্গি গ্রাম।
অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর লোকজনের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ গোষ্ঠীর অনুগামীরা। বীরভূম জেলা কোর কমিটির সদস্য এই কাজল শেখ ৷ অনুব্রত গোষ্ঠীর বোলপুর-শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ নূর আলমের বাড়িতে রীতিমতো ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে কাজল শেখের লোকজনের বিরুদ্ধে ৷ জানা গিয়েছে, এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন তারা ৷ এর আগেই কাজল গোষ্ঠীর লোকজন তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে ৷ খবর পেয়ে বোলপুর থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স পৌঁছয় গ্রামে ৷
আরও পড়ুন: ডোমকলে তৃণমূল নেতার কোমর থেকে উদ্ধার পিস্তল, টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ সুকান্তর
প্রসঙ্গত, নানুর বিধানসভা এলাকায় অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর সঙ্গে তৃণমূল নেতা কাজল শেখ গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই দ্বন্দ্ব নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ নূর আলম অনুব্রত গোষ্ঠীর বলেই পরিচিত ৷ তাঁর স্ত্রী রেহেনা বানু বলেন, "এর আগেও আমাকে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে ছিল কাজল শেখ গোষ্ঠীর লোকজন। এদিন ওরা পিস্তল নিয়ে চলে আসে বাড়িতে ৷ আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে ৷ আমরা অনুব্রত'র দল করি ৷ তাই কাজলের লোকজন এসে হামলা চালায়।" নূর আলম বলেন, "আমরা শান্তিপ্রিয় ৷ ওরা কাজল গোষ্ঠীর লোকজন ৷ বরাবরই এই রকম ঝামেলা করে ৷ এদিন আমি বোলপুর যাচ্ছিলাম ৷ সেই সময় ওরা চড়াও হয় বন্দুক নিয়ে ৷"