কলকাতা, 13 ডিসেম্বর : সামনেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন ৷ আর সেদিকে তাকিয়ে বারবার বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতা নেত্রীদের ৷ নিজেদের ভাষণে বারবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে টেনে এনেছেন তাঁরা ৷ তবে এবার সেই রবীন্দ্রনাথের লেখা দেশের জাতীয় সংগীত বদল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রমনিয়ন স্বামী ৷ তাঁর চিঠি দেওয়ার কথা টুইটও করেছেন তিনি ৷ তাঁর এই দাবির সমালোচনা করলেন ঠাকুর পরিবারের বংশধর সুপ্রিয় ঠাকুর ও বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন ।
জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে স্বামীর দাবি, ‘‘শুধু তাঁর নয়, রবীন্দ্রনাথের লেখা এই জাতীয় সংগীত বদলের দাবি দেশের যুব সমাজের একটা বড় অংশের ৷’’ তাঁর আপত্তির অন্যতম কারণ জাতীয় সংগীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার । স্বামীর মতে, ‘‘বর্তমান জাতীয় সংগীতের কিছু কিছু শব্দ ধন্দ তৈরি করে ।’’ রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গাওয়া ‘জন গণ মন’-র আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সংগীত ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তি ‘‘শুভ সুখ চ্যান’’ গানটি ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি ।
-
The Subhash Bose modified Jana Gana Mana national anthem must replace the Original Tagore version adopted in 1949.The INA adopted version is more patriotic and accurate. In the Constituent Assembly while concluding Rajendra Prasad announced that its verses can be amended
— Subramanian Swamy (@Swamy39) November 30, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">The Subhash Bose modified Jana Gana Mana national anthem must replace the Original Tagore version adopted in 1949.The INA adopted version is more patriotic and accurate. In the Constituent Assembly while concluding Rajendra Prasad announced that its verses can be amended
— Subramanian Swamy (@Swamy39) November 30, 2020The Subhash Bose modified Jana Gana Mana national anthem must replace the Original Tagore version adopted in 1949.The INA adopted version is more patriotic and accurate. In the Constituent Assembly while concluding Rajendra Prasad announced that its verses can be amended
— Subramanian Swamy (@Swamy39) November 30, 2020
তবে তাঁর এই দাবিতে দেশের নানা মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে ৷ তাঁর এই দাবিকে অবান্তর বলে দাবি করেন ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর ৷ তিনি বলেন , ‘‘এর থেকে অনাসৃষ্টির কথা আমি আগে কখনও শুনিনি ৷ জাতীয় সংগীত অনেক ভেবে চিন্তে করা হয়েছে ৷ এবং সেটা বদল করে কোনও অন্য এক কবির লেখা জাতীয় সংগীত হতে পারে, এ আমি কল্পনাও করতে পারি না ৷ এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ৷ জাতীয় সংগীতে যে গান আছে তা আর কোনওদিন হয়নি এবং হবেও না ৷ তাই এটা বদল করার কোনও প্রশ্ন ওঠা উচিত নয় ৷ সবাইকে অবমাননা করা হচ্ছে ৷ এটা ভারতের দুঃখের দিন ৷’’
আরও পড়ুন:-আগামীকাল সকাল 8টা থেকে বিকেল 5টা পর্যন্ত অনশন, জানাল কৃষকরা
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, বিতর্কের জন্যই বিখ্যাত সুব্রমনিয়ন স্বামী ৷ তাঁর কথায়, ‘‘ যে বিজেপি নেতা এই জাতীয় সংগীত বদলের দাবি করেছেন তিনি বিতর্কের জন্যই বিখ্যাত ৷ বিতর্ক সৃষ্টি করে নিজেকে লাইম লাইটে আনতে চান তিনি ৷ তাই তিনি সফট টার্গেট হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে বেছে নিয়েছেন ৷ তাঁর আপত্তি ‘‘সিন্ধু’’ শব্দটিকে নিয়ে ৷ তা ইতিহাসকে কি পালটে দেওয়া অতই সহজ? সিন্ধু তো একদিন ভারতেই ছিল ৷ এবং গানটা সেইসময় লেখা হয়েছিল ৷ এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ৷ নেতাজির গান উনি জাতীয় সংগীত করতে চাইছেন ৷ কিন্তু নেতাজি থাকলে তিনিও এই গানটি পরিবর্তন করতে চাইতেন না ৷ আসলে যারা এই কথাগুলি বলছেন তাঁরা রবীন্দ্রনাথের ‘‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে’’ এই মতবাদে বিশ্বাস করে না ৷ তাঁরা বিভাজনে বিশ্বাসী ৷ তাঁরা ‘‘আমরা ওরা ’’ রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন ৷ তাঁরা আর রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণ করবেন কীভাবে ?’’