তারাপীঠ, 27 মে: তাঁর কনভয়ে হামলা প্রসঙ্গে ঘুরপথে বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে মিশে গিয়ে বিজেপি এই হামলা চালিয়েছে । স্বপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে অভিষেক বলেন, হামলার সময় তিনি 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি শুনতে পেয়েছিলেন। কুড়মি সমাজ এই ধরনের ধ্বনি ব্যবহার করে না। তাই অভিষেকের অনুমান, হামলার নেপথ্যে বিজেপির চক্রান্ত আছে । এবার এ নিয়েই পালটা দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তাঁর কটাক্ষ, ভয় পেলেই অভিষেক ও তাঁর পিসি 'জয় শ্রী রাম' শুনতে পান।
শনিবার বিজেপির একটি প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হল বীরভূমের তারাপীঠে। সেই শিবিরে যোগ দিতে শুক্রবার রাতেই তারাপীঠে পৌঁছে যান সুকান্ত মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শ্রী বিএল সন্তোষজিও। সকাল 9টা থেকে প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে মা তারার পুজো দেন সুকান্ত মজুমদার ও বিএল সন্তোষজী।
প্রশিক্ষণ শিবির শুরুর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গতকাল রাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার প্রশ্নে সুকান্ত বলেন, "তৃণমূল চাইছে আদিবাসী ও কুড়মি সমাজের মধ্যে লড়াই তৈরি করে দিতে। নিজেরা করে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া তৃণমূলের স্বভাব। আমরা হিংসায় বিশ্বাস করি না । সব কিছু আলোচনার মাধ্যম দিয়ে সমাধান করা সম্ভব।" কুড়মি সমাজের হামলার পিছনে প্রত্যক্ষভাবে বিজেপির হাত রয়েছে বলেও সরাসরি লোধাশুলির সভা থেকে অভিযোগ করেন অভিষেক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, আদতে আদিবাসী কুড়মি সমাজের নাম করে বিজেপি পিছন থেকে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আড়াল থেকে বিজেপি কর্মীরা এর মদত দিচ্ছে।
পাশাপাশি কুড়মি আন্দোলনকারীদের মুখে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পিসি, এদের দু'জনের কানে জয় শ্রীরাম বাজে। এখন যেখানে সেখানে জয় শ্রী রাম শুনতে পাচ্ছেন। আসতে ওদের বিজেপি ফবিয়া হয়ে গিয়েছে। জয় শ্রীরাম ফবিয়া হয়ে গিয়েছে। যেখানেই ভয় পান সেখানে জয় শ্রীরাম শুনতে পান।" উল্লেখ্য, শুক্রবার ঝাড়গ্রাম থেকে যখন লোধাশুলির পথে অভিষেক যান রাতে তখন স্থানীয় গড় এলাকায় রাস্তার পাশে জমায়েত করেন কুড়মি আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন: সতর্ক পুলিশ! কড়া নিরাপত্তা পশ্চিম মেদিনীপুরে অভিষেকের সভায়
এরপর অভিষেকের কনভয় আসতেই শুরু হয়ে যায় স্লোগান-বিক্ষোভ। পুলিশি নিরাপত্তা দ্রুত বের করে নিয়ে যাওয়া হয় কনভয়। বস্তুত, কিছুটা দূরে গিয়ে যখন গাড়ি থেকে হাঁটতে শুরু করেন অভিষেক, তখনও তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান কুড়মিরা ৷ এদিকে অভিষেকের কনভয়ের পিছনে ছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। বাইকে চালিয়ে আসছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও। স্রেফ তাঁদের উপর হামলা নয়, মন্ত্রীর গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।