শান্তিনিকেতন, 7 অগস্ট : স্কুল ঘরের চাবি চুরির অভিযোগে একটি পরিবারকে প্রায় 2 বছর ধরে সামাজিক বয়কটে রেখে অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল । সালিশি সভা বসিয়ে মোড়লের নিদানে ওই পরিবারকে গ্রামের কল, পুকুর ব্যবহার, দোকান থেকে জিনিস কিনতে দেওয়া হয় না ৷ এমনকি গ্রামের কেউ তাঁদের সঙ্গে ভয়ে কথা বলেন না । ঘটনাটি শান্তিনিকেতন থানার বালিপাড়া আদিবাসী গ্রামের । জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের নির্যাতিতা সদস্যা কালীদাসী চোরে ৷
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের গ্রাম বালিপাড়া আদিবাসী গ্রাম ৷ এই গ্রামে একটি পরিবারকে প্রায় 2 বছর ধরে সামাজিক ভাবে বয়কট করে রাখা হয়েছে ৷ 160টি পরিবার বাস করে এই গ্রামে । 2019-এর নভেম্বর মাসে স্থানীয় স্কুল ঘরের চাবি চুরি করার অভিযোগে সালিশি সভা হয় গ্রামে । সভায় মোড়ল সুনীল হাঁসদা ওরফে রোহিত হাঁসদা 7 জনের ওই পরিবারকে একঘরে করার নিদান দেয় । মারধর করা হয় পরিবারের সদস্যা কালীদাসী চোরেকে । তাছাড়া, ওই পরিবারকে 10 হাজার টাকা জরিমানা করা হয় । যাঁরা কথা বলবেন, তাঁদেরও সামাজিক ভাবে বয়কটের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল সালিশি সভায় ৷
আরও পড়ুন : Illegal Toll : জাতীয় সড়কে টোল নিচ্ছে বীরভূম জেলা পরিষদ ! জানে না প্রশাসন
কালীদাসী চোরে বলেন, "আমাকে বলেছে পাড়ার ছেলের সামনে রেপ করাব ৷" এরপরও তিনি মোড়লের কাছে গিয়ে কাকুতি মিনতি করেছেন ৷ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, মহিলা থানাতেও গিয়েছিলেন, কিন্তু কিছু হয়নি ৷ কালীদাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে মোড়লের কাছে থানা থেকে কাগজ আসার পর তারা কালীদাসীকে এই কেস তুলে নিতে বলেন ৷ কেস তোলেননি তিনি ৷ তাতে তাঁকে গ্রামছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৷ বলা হয়েছে, "তিনি মহিলা হয়ে এরকম কী করে করতে পারেন?" কালীদাসীর প্রশ্ন, "মেয়ে হয়ে জন্মেছি, এটা কি আমার অন্যায় ?"
গত বছর 22 সেপ্টেম্বর বীরভূম জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার-সহ বোলপুর মহকুমাশাসক, শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা কালীদাসী । ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়ে গ্রামের মোড়ল সুনীল হাঁসদা ওরফে রোহিত হাঁসদা বলেন, "এটা আমার একার সিদ্ধান্ত নয় । গ্রামের সবাই একসঙ্গে বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে । আমি তাতে সায় দিয়েছি ।"