রামপুরহাট, 19 এপ্রিল : ‘‘বগটুই গণহত্যার মূল পান্ডা স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ শাসকদলের এই বিধায়কের নির্দেশেই ঘটেছে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ৷’’ বিস্ফোরক মন্তব্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিহিলাল শেখের ৷ প্রায় একমাস পরেও বগটুই কাণ্ড নিয়ে কার্যত উত্তাল রাজ্য ৷ আদালতের নেতৃত্বে তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে ৷ গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন-সহ 28 জনকে ৷ নাম জড়িয়েছে শাসকদলের একাধিক নেতার ৷ তার মধ্যেই এই মন্তব্য ঘটনায় নয়া মোড় আনল বলেই মনে করা হচ্ছে (Rampurhat MLA Asish Banerjee is responsible for Bagtui Massacre says Mihilal Sheikh) ৷
গত 21 মার্চ বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের পর বগটুই গ্রামে শিশু ও মহিলা-সহ 7 জনকে খুন করে একটি ঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় । পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ আরও দু'জন মহিলার মৃত্যু হয় ।
এই ঘটনাতেই মঙ্গলবার কার্যত বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মৃতদের পরিবারের সদস্য মিহিলাল ৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনা রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার তথা রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটেছে ।’’ মিহিলালের অভিযোগ, বগটুই গ্রামে ভাদু শেখ গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদ মেটানোর জন্য বহু আগেই আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা । কিন্তু তিনি সেই বিবাদ মেটানোর কোনও উদ্যোগই নেননি । পরে বিধায়কই আনারুল হোসেনকে দিয়ে এই কাণ্ড ঘটান ।
গোটা বিষয়টিই সিবিআই প্রতিনিধিদের কাছে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি । পাশাপাশি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে সমুর দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মিহিলাল । তিনি বলেন, ‘‘আমি এতদিন মুখ খুলিনি । ভেবেছিলাম সবাইকে জড়াব না । কিন্তু উপায় নেই । আমরা আমাদের সমস্যা নিয়ে বহুবার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছি । আমাদেরকে লাথ মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । ওঁর ভাইপো সমুও আমাদের উপর ভীষণ অত্যাচার করেছে । আনারুলকে ব্লক সভাপতির পদে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ই রেখে দিয়েছিলেন ।’’
আরও পড়ুন : আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে আনারুলকে পদে রেখেছিলাম, বিস্ফোরক অনুব্রত
এর আগে দলের বীরভূম জেলা সভাপতিও ঘুরিয়ে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছিলেন, তিনি আনারুলকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ৷ বিধায়কের জন্যই ওকে পদে রেখে দিতে হয়েছিল ৷ এই মর্মে সোশ্যাল মিডিয়ায় আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনারুলকে পদে রাখার অনুরোধ করে পাঠানো চিঠিও ভাইরাল হয় ৷ যদিও মিহিলালের এদিনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রামপুরহাটের বিধায়ক ৷ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘মিহিলাল শেখানো বুলি বলছে । দলেরই কেউ আমাকে নিয়ে চক্রান্ত তৈরি করছে । হঠাৎ ঘটনার একমাস পরে আমার নাম কেন এল ?’’