রামপুরহাট, 15 ডিসেম্বর: লালন শেখের (Lalan Sheikh) দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে (Second Time Postmortem) রাজি নন তাঁর স্ত্রী রেশমা বিবি ৷ বৃহস্পতিবার তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমার স্বামীর দেহের উপর অনেক অত্য়াচার করা হয়েছে ৷ আর আমি কাটাছেঁড়া চাই না ৷" উল্লেখ্য, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যুর (Lalan Sheikh Death in CBI Custody) পর ইতিমধ্য়েই একবার লালন শেখের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷ তারপর যাবতীয় রীতিনীতি মেনেই তাঁর দেহ কবরস্থ করা হয় ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি চলাকালীন লালনের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করানোর প্রস্তাব উঠে আসে ৷ এর ভিত্তিতে আদালত জানিয়ে দেয়, লালনের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হতে পারে ৷ কিন্তু, এক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রী'র অনুমতি বাধ্যতামূলক ৷
এই প্রসঙ্গেই রেশমা বিবি সাফ জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর স্বামীর দেহ কবর খুঁড়ে তুলে আনার পক্ষপাতী নন ৷ তিনি শুধুমাত্র ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট সিবিআই আধিকারিকদের আইন মাফিক শাস্তি চান ৷ এমনকী, তিনি যে ঘটনার সিআইডি তদন্তে খুশি, কার্যত তাও স্বীকার করে নেন রেশমা ৷
আরও পড়ুন: লালন শেখের মৃত্যুকে অস্ত্র করছে রাজ্য ! ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শুভেন্দুর
এদিকে, বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবারই অভিযোগ করেছিলেন, লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য সরকার ষড়যন্ত্র করছে ৷ এই মৃত্যু হাতিয়ার করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, যাতে গরুপাচার-সহ সংশ্লিষ্ট অন্য়ান্য মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে সিবিআই ! আর সেই কারণেই লালন শেখের স্ত্রীর করা এফআইআরে সিবিআই আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্যের নাম রয়েছে ! লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই সুশান্ত ভট্টাচার্য আদতে গরুপাচার মামলার তদন্তকারী আধিকারিক ৷ তাঁর সঙ্গে বগটুই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই ৷ তবুও তাঁকে লালন শেখের মৃত্যুর সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু ৷
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে লালনের স্ত্রী রেশমা জানান, "আমার স্বামীকে গ্রেফতার করার পর আমি ওঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম ৷ আমাকে তিনি বলেছিলেন, তাঁর উপর সিবিআই খুব অত্যাচার করছে ৷ বড় বড় মাথাদের নাম বলতে বলছে ! আমার স্বামীই আমাকে সুশান্ত ভট্টাচার্যের নাম বলে গিয়েছিলেন ৷ তাই ওদের নামে অভিযোগ করেছি ৷ আমি শুধু আদালতের কাছে সুবিচার চাই ৷" যদিও শুভেন্দুর দাবি ছিল, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে এবং ফিরহাদ হাকিমের মধ্যস্থতায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই স্থানীয় নেতা রেশমা বিবির হয়ে অভিযোগপত্র লিখে দিয়েছিলেন ৷ তাঁরাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সুশান্ত ভট্টাচার্যের নাম এফআইআরে জুড়ে দিয়েছেন !