বোলপুর, 18 মার্চ: বিশ্বভারতীর সমবায় ব্যাংক দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ৷ দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে না নির্বাচন, গ্রাহকেরা সঠিক পরিষেবা পাচ্ছে না, লগ্নিকারীরা পাচ্ছেন না লভ্যাংশ ৷ পাওয়া যাচ্ছে না ঋণ। এই সকল অভিযোগে বিশ্বভারতীর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডে বিক্ষোভ দেখালেন একাধিক গ্রাহক ও লগ্নিকারীরা (Protest Against Visva Bharati Co-operative Bank) ৷ এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ৷
1927 সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়েই বিশ্বভারতীতে স্থাপিত হয় এই সমবায় ব্যাংক ৷ এখানে বেশিরভাগই বিশ্বভারতী কর্মী, আধিকারিক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে ৷ কেউ কেউ আবার লগ্নি করেছেন, কেউ বা ঋণ নিয়ে থাকেন ৷ অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যাংকে কোনও ডিরেক্টর না থাকায়, বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে ৷ যেমন বিশ্বভারতীর সমবায় ব্যাংকে হচ্ছে না নির্বাচন ৷ গ্রাহকেরা সঠিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ এমনকি যাঁরা লগ্নি করেছেন, তাঁরা প্রাপ্য লভ্যাংশ পাচ্ছেন না, আবেদন করেও ঋণ মিলছে না ৷
এমন নানান ইস্যুতে এদিন ব্যাংক আধিকারিকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহক ও লগ্নিকারীরা ৷ বিশ্বভারতীর এই সমবায় ব্যাংক বর্তমানে দূর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে, এই অভিযোগে হওয়া আজকের বিক্ষোভের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী ৷ পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে একটি ডেপুটেশন দেওয়া হয় ৷ 7 দিনের মধ্যে সমস্যাগুলি সমাধানের দাবি জানানো হয়েছে সেই ডেপুটেশনে ৷
লগ্নিকারীদের মধ্যে সুব্রত মণ্ডল ও ভ্রমর ভাণ্ডারী জানান, 2 বছর ধরে তাঁরা লভ্যাংশ পাচ্ছেন না ৷ তাঁদের দাবি নির্বাচন করতে হবে, লভ্যাংশ দিতে হবে, পরিষেবা সঠিক ভাবে দিতে হবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ৷ তাঁরা এও দাবি করেছেন, বিশ্বভারতীর সমবায় ব্যাংকে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন ৷ অভিযোগ ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউকে অযথা বিলম্ব করানো হয় ৷ আবার কাউকে এক রাতের মধ্যে ঋণ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ এর পিছনে কোন অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা ৷ এই সব কিছু ঠিক করার জন্য 7 দিনের সময় কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা ৷
আরও পড়ুন: জমি বিতর্কে ক্ষমা না-চাইলে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি অমর্ত্য সেনের আইনজীবীর
বিশ্বভারতী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের ম্যানেজার নিলয় দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বোর্ডের ডিরেক্টর না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে৷ দূর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়৷ আমরা পরিবারের মত ব্যাঙ্কটি চালাই ৷’’