ETV Bharat / state

পঙ্গপাল কীভাবে ক্ষতি করে ? প্রতিকার কী ? - Interview of scientist about locusts

বিশ্বে মোট 12 প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে ৷ ভারতে রয়েছে তিন প্রকারের ৷ পঙ্গপাল শুধু যে ফসল খেয়ে ক্ষতি করে, তা নয় ৷ মাংসাষী পঙ্গপালও রয়েছে ৷ তবে, পঙ্গপাল মেরে নয়, তাদের সংগ্রহ করে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার পদ্ধতি বের করেছেন গবেষক ও অধ্যাপক পরিমলেন্দু হালদার ৷

পঙ্গপালের আক্রমণ
পঙ্গপালের আক্রমণ
author img

By

Published : Jun 14, 2020, 3:56 PM IST

Updated : Jun 27, 2020, 12:34 PM IST

শান্তিনিকেতন, 14 জুন : কোরোনা আতঙ্কের মাঝেই দেশে শুরু পঙ্গপালের উৎপাত ৷ ইতিমধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের দিকে ধেয়ে এসেছে এই পঙ্গপালের দল ৷ মধ্যপ্রদেশে ও রাজস্থানের কয়েকটি জেলার ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ৷ বিশ্বে মোট 12 প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে ৷ ভারতে রয়েছে তিন প্রকারের ৷ পঙ্গপাল শুধু যে ফসল খেয়ে ক্ষতি করে, তা নয় ৷ মাংসাষী পঙ্গপালও রয়েছে ৷ তবে, পঙ্গপাল মেরে নয়, তাদের সংগ্রহ করে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার পদ্ধতি বের করেছেন গবেষক ও অধ্যাপক পরিমলেন্দু হালদার ৷ দীর্ঘ 40 বছর ধরে এই পঙ্গপাল নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন তিনি ৷ বিশ্বভারতীর প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন ৷ ETV ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তাঁর গবেষণার কথা ৷

1984 সাল থেকে বিশ্বভারতীতে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন পরিমলেন্দুবাবু ৷ 2012 সালে অবসর নেন ৷ অবসরের পর থেকে শান্তিনিকেতনের বাড়িতে একটি গবেষণাগার তৈরি করে সেখানেই চলছে পঙ্গপাল সংক্রান্ত গবেষণা ৷ পঙ্গপাল সংক্রান্ত তথ্য নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রসংঘ থেকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷ এছাড়া ফ্রান্স, তুরস্ক, রোম, চিন প্রভৃতি দেশেও একাধিক পঙ্গপাল বিষয়ক গবেষণা ও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন ৷

পঙ্গপাল কী ?

পরিমলেন্দু হালদার : মূলত বিভিন্ন মরুভূমির বিভিন্ন জ়োনে জন্ম নেয় পঙ্গপাল । উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে এরা সংখ্যায় খুব দ্রুত বাড়ে । একসঙ্গে কয়েক লাখ ডিম পাড়ে । সংখ্যায় বেশি হয়ে গেলে এদের নিজেদের মধ্যে খাদ্যাভাব দেখা দেয় । তখন হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এরা বিভিন্ন দেশে হানা দেয় । এরা বিভিন্ন সময়ে রং বদল করে ও ক্ষতির ধরনও বদলায়।

ভারতে মূলত তিন প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে, 'সিস্টাসরেকা গেগরিয়া', 'লোকাস্টা মাইগেটোরিয়া' ও 'পটাঙ্গা সাকসিনেটা' । এছাড়া, সারা বিশ্বে 12 প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে । সবথেকে ক্ষতিকারক পঙ্গপাল হল 'নোমাডার্কিস্ট' । তবে এরা মূলত রাশিয়ার দিকে থাকে । ভারতের দিকে আসে না ।

এক ধরনের পঙ্গপাল শুধুমাত্র খাদ্যশস্য, গাছপালা খেয়ে বেঁচে থাকে ৷ আর এক ধরনের পঙ্গপাল মাংসাষী হয় ৷ যারা মুরগি, মাছ প্রভৃতি খেয়ে তার কঙ্কাল ফেলে রেখে চলে যায় ৷ তবে, মাংসাষী পঙ্গপালের সংখ্যা কম ৷ উদাহরণ দিয়ে বলি, এক গবেষণাগারে গবেষণা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক বিজ্ঞানী ৷ পঙ্গপাল তাঁকে খেয়ে ফেলেছিল ৷ পড়ে ছিল শুধুমাত্র তাঁর কঙ্কাল ও জামা ৷

কীভাবে ভারত ঢোকে এই পঙ্গপাল ?

পরিমলেন্দু হালদার : পঙ্গপাল সাহারা মরুভূমি থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে থর মরুভূমি হয়ে ভারতে ঢোকে ৷ সেখান থেকে বিভিন্ন রাজ্য হয়ে বাংলাদেশ, মায়ানমারের দিকে চলে যায় ৷ ভারতে বেশি খাদ্যশস্য পেয়ে এরা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে ৷ বংশ বৃদ্ধি করে ৷

কীভাবে ও কী ধরনের ক্ষতি করে পঙ্গপাল?

পরিমলেন্দু হালদার : একসঙ্গে কয়েক লাখ পঙ্গপাল সাত-আট বর্গ কিলোমিটার জায়গা সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন করে দেয় । তিন-চার মিটার পুরু হয়ে একসঙ্গে উড়তে পারে । এতটাই দলবদ্ধভাবে তারা ওড়ে যে, সূর্যালোক ওদের ভেদ করে নিচে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না । দিনের বেলাকে এরা অন্ধকারাচ্ছন্ন করতে পারে । যে জায়গা দিয়ে যায়, সেই জায়গার সমস্ত সবুজ খাদ্যশস্য, গাছের পাতা খেয়ে ফেলে । পড়ে থাকে শুধু মাত্র ডালপালা ।

এদের দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর ৷ এরা জল, স্থল সবেরই ক্ষতি করে ৷ নিম-সহ আরও চার-পাঁচটি গাছ রয়েছে, যেগুলি পঙ্গপাল খায় না । পঙ্গপালের ঘনত্ব ও বিস্তারে ট্রেন আটকে যেতে পারে, রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, কুয়ো-জলাশয় প্রভৃতি বন্ধ হয়ে যেতে পারে । মাংসাষী পঙ্গপাল পশুদের খেয়ে ফেলতে পারে ৷

40 বছর ধরে পঙ্গপাল নিয়ে গবেষণা করছেন পরিমলেন্দু হালদার

পঙ্গপাল থেকে প্রতিকারের উপায় কী?

পরিমলেন্দু হালদার : প্রতিকার হিসেবে বিশ্বে আট-নয় রকমের পদ্ধতি রয়েছে ৷ এরা সাহারা থেকে এত দূর উড়ে আসছে মানে এদের এনার্জি প্রচুর ৷ এদের ভিতরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, নানা ধরনের প্রয়োজনীয় গুণ রয়েছে ৷ সেটা ভেবেই আমি আমার গবেষণার পরিবর্তন করি ৷ তাদের না মেরে কীভাবে কাজে লাগানো যায় ৷ সেটা নিয়েই 40 বছর ধরে আমি গবেষণা করছি ৷

এই পঙ্গপাল থেকে যে ফিড (উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার) হয়, তা মৎস্য চাষ বা পোল্ট্রি ফার্মের জন্য খুবই ভালো ৷ আমি গবেষণার জন্য মুরগি ও মাছের উপর এটি প্রয়োগ করি ৷ দেখা যায়, এতে মুরগির ডিম সংখ্যায় বাড়ে ৷ বিকাশ বেশি হয় ৷ স্বাদও ভালো হয় ৷ মরা পঙ্গপালগুলি অন্য প্রাণীরা খেয়ে নিলে তাদেরও স্বাস্থ্যের উপকার হবে ৷ এদিকে পঙ্গপালও নির্মূল হবে ৷

কীভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে পঙ্গপালদের ?

পরিমলেন্দু হালদার : PHLMN-20 এই প্রক্রিয়ায় এদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷ তারা যে এক দল বেঁধে উড়তে থাকে, সেটাকে হেলিকপ্টারের সঙ্গে জাল বেঁধে তাদের উপর ফেলা হয় ৷ তাহলে তাদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷ তারপর তাদের বেস ক্যাম্পে এনে বস্তাবন্দী করে কোল্ড স্টোরেজের মধ্যে যদি রাখা হয়, বা গাছের মতো উঁচু লম্বা ডাল দিয়ে জাল বেঁধেও তাদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷

চাষিরা নিজেরাও এই পঙ্গপালদের পতঙ্গ ধরার জাল দিয়ে ধরে বস্তাবন্দী করতে পারে ৷ সরকার এটা ধানের মতো কিনে নিতে পারে ৷ এর ফলে পরিবেশ দূষণ হবে না ৷ মাটি দূষণ হবে না ৷ পরিবেশ ঠিক থাকবে ৷

পঙ্গপাল এত দূর থেকে আসে মানে তার মধ্যে বিপুল শক্তি রয়েছে । এই শক্তিকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে । হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জাল ফেলে যদি এই পঙ্গপাল সংগ্রহ করা যায়, তাহলে তার থেকে বিভিন্ন উপকারী জিনিস তৈরি করা যেতে পারে । যেমন মানুষ ও প্রাণীদের ওষুধ, কীটনাশক প্রভৃতি । পঙ্গপাল মেরে নির্মূল করা খুব কঠিন । তার থেকে জাল দিয়ে এদের সংগ্রহ করে কাজে লাগানো সহজ কাজ ।

পঙ্গপাল কীভাবে কাজে লাগানো যায় এই সংক্রান্ত দীর্ঘ 40 বছর ধরে গবেষণা করে চলেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন এই অধ্যাপক ।

শান্তিনিকেতন, 14 জুন : কোরোনা আতঙ্কের মাঝেই দেশে শুরু পঙ্গপালের উৎপাত ৷ ইতিমধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের দিকে ধেয়ে এসেছে এই পঙ্গপালের দল ৷ মধ্যপ্রদেশে ও রাজস্থানের কয়েকটি জেলার ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ৷ বিশ্বে মোট 12 প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে ৷ ভারতে রয়েছে তিন প্রকারের ৷ পঙ্গপাল শুধু যে ফসল খেয়ে ক্ষতি করে, তা নয় ৷ মাংসাষী পঙ্গপালও রয়েছে ৷ তবে, পঙ্গপাল মেরে নয়, তাদের সংগ্রহ করে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার পদ্ধতি বের করেছেন গবেষক ও অধ্যাপক পরিমলেন্দু হালদার ৷ দীর্ঘ 40 বছর ধরে এই পঙ্গপাল নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন তিনি ৷ বিশ্বভারতীর প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন ৷ ETV ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তাঁর গবেষণার কথা ৷

1984 সাল থেকে বিশ্বভারতীতে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন পরিমলেন্দুবাবু ৷ 2012 সালে অবসর নেন ৷ অবসরের পর থেকে শান্তিনিকেতনের বাড়িতে একটি গবেষণাগার তৈরি করে সেখানেই চলছে পঙ্গপাল সংক্রান্ত গবেষণা ৷ পঙ্গপাল সংক্রান্ত তথ্য নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রসংঘ থেকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷ এছাড়া ফ্রান্স, তুরস্ক, রোম, চিন প্রভৃতি দেশেও একাধিক পঙ্গপাল বিষয়ক গবেষণা ও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন ৷

পঙ্গপাল কী ?

পরিমলেন্দু হালদার : মূলত বিভিন্ন মরুভূমির বিভিন্ন জ়োনে জন্ম নেয় পঙ্গপাল । উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে এরা সংখ্যায় খুব দ্রুত বাড়ে । একসঙ্গে কয়েক লাখ ডিম পাড়ে । সংখ্যায় বেশি হয়ে গেলে এদের নিজেদের মধ্যে খাদ্যাভাব দেখা দেয় । তখন হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এরা বিভিন্ন দেশে হানা দেয় । এরা বিভিন্ন সময়ে রং বদল করে ও ক্ষতির ধরনও বদলায়।

ভারতে মূলত তিন প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে, 'সিস্টাসরেকা গেগরিয়া', 'লোকাস্টা মাইগেটোরিয়া' ও 'পটাঙ্গা সাকসিনেটা' । এছাড়া, সারা বিশ্বে 12 প্রকারের পঙ্গপাল রয়েছে । সবথেকে ক্ষতিকারক পঙ্গপাল হল 'নোমাডার্কিস্ট' । তবে এরা মূলত রাশিয়ার দিকে থাকে । ভারতের দিকে আসে না ।

এক ধরনের পঙ্গপাল শুধুমাত্র খাদ্যশস্য, গাছপালা খেয়ে বেঁচে থাকে ৷ আর এক ধরনের পঙ্গপাল মাংসাষী হয় ৷ যারা মুরগি, মাছ প্রভৃতি খেয়ে তার কঙ্কাল ফেলে রেখে চলে যায় ৷ তবে, মাংসাষী পঙ্গপালের সংখ্যা কম ৷ উদাহরণ দিয়ে বলি, এক গবেষণাগারে গবেষণা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক বিজ্ঞানী ৷ পঙ্গপাল তাঁকে খেয়ে ফেলেছিল ৷ পড়ে ছিল শুধুমাত্র তাঁর কঙ্কাল ও জামা ৷

কীভাবে ভারত ঢোকে এই পঙ্গপাল ?

পরিমলেন্দু হালদার : পঙ্গপাল সাহারা মরুভূমি থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে থর মরুভূমি হয়ে ভারতে ঢোকে ৷ সেখান থেকে বিভিন্ন রাজ্য হয়ে বাংলাদেশ, মায়ানমারের দিকে চলে যায় ৷ ভারতে বেশি খাদ্যশস্য পেয়ে এরা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে ৷ বংশ বৃদ্ধি করে ৷

কীভাবে ও কী ধরনের ক্ষতি করে পঙ্গপাল?

পরিমলেন্দু হালদার : একসঙ্গে কয়েক লাখ পঙ্গপাল সাত-আট বর্গ কিলোমিটার জায়গা সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন করে দেয় । তিন-চার মিটার পুরু হয়ে একসঙ্গে উড়তে পারে । এতটাই দলবদ্ধভাবে তারা ওড়ে যে, সূর্যালোক ওদের ভেদ করে নিচে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না । দিনের বেলাকে এরা অন্ধকারাচ্ছন্ন করতে পারে । যে জায়গা দিয়ে যায়, সেই জায়গার সমস্ত সবুজ খাদ্যশস্য, গাছের পাতা খেয়ে ফেলে । পড়ে থাকে শুধু মাত্র ডালপালা ।

এদের দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর ৷ এরা জল, স্থল সবেরই ক্ষতি করে ৷ নিম-সহ আরও চার-পাঁচটি গাছ রয়েছে, যেগুলি পঙ্গপাল খায় না । পঙ্গপালের ঘনত্ব ও বিস্তারে ট্রেন আটকে যেতে পারে, রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, কুয়ো-জলাশয় প্রভৃতি বন্ধ হয়ে যেতে পারে । মাংসাষী পঙ্গপাল পশুদের খেয়ে ফেলতে পারে ৷

40 বছর ধরে পঙ্গপাল নিয়ে গবেষণা করছেন পরিমলেন্দু হালদার

পঙ্গপাল থেকে প্রতিকারের উপায় কী?

পরিমলেন্দু হালদার : প্রতিকার হিসেবে বিশ্বে আট-নয় রকমের পদ্ধতি রয়েছে ৷ এরা সাহারা থেকে এত দূর উড়ে আসছে মানে এদের এনার্জি প্রচুর ৷ এদের ভিতরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, নানা ধরনের প্রয়োজনীয় গুণ রয়েছে ৷ সেটা ভেবেই আমি আমার গবেষণার পরিবর্তন করি ৷ তাদের না মেরে কীভাবে কাজে লাগানো যায় ৷ সেটা নিয়েই 40 বছর ধরে আমি গবেষণা করছি ৷

এই পঙ্গপাল থেকে যে ফিড (উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার) হয়, তা মৎস্য চাষ বা পোল্ট্রি ফার্মের জন্য খুবই ভালো ৷ আমি গবেষণার জন্য মুরগি ও মাছের উপর এটি প্রয়োগ করি ৷ দেখা যায়, এতে মুরগির ডিম সংখ্যায় বাড়ে ৷ বিকাশ বেশি হয় ৷ স্বাদও ভালো হয় ৷ মরা পঙ্গপালগুলি অন্য প্রাণীরা খেয়ে নিলে তাদেরও স্বাস্থ্যের উপকার হবে ৷ এদিকে পঙ্গপালও নির্মূল হবে ৷

কীভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে পঙ্গপালদের ?

পরিমলেন্দু হালদার : PHLMN-20 এই প্রক্রিয়ায় এদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷ তারা যে এক দল বেঁধে উড়তে থাকে, সেটাকে হেলিকপ্টারের সঙ্গে জাল বেঁধে তাদের উপর ফেলা হয় ৷ তাহলে তাদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷ তারপর তাদের বেস ক্যাম্পে এনে বস্তাবন্দী করে কোল্ড স্টোরেজের মধ্যে যদি রাখা হয়, বা গাছের মতো উঁচু লম্বা ডাল দিয়ে জাল বেঁধেও তাদের সংগ্রহ করা যেতে পারে ৷

চাষিরা নিজেরাও এই পঙ্গপালদের পতঙ্গ ধরার জাল দিয়ে ধরে বস্তাবন্দী করতে পারে ৷ সরকার এটা ধানের মতো কিনে নিতে পারে ৷ এর ফলে পরিবেশ দূষণ হবে না ৷ মাটি দূষণ হবে না ৷ পরিবেশ ঠিক থাকবে ৷

পঙ্গপাল এত দূর থেকে আসে মানে তার মধ্যে বিপুল শক্তি রয়েছে । এই শক্তিকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে । হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জাল ফেলে যদি এই পঙ্গপাল সংগ্রহ করা যায়, তাহলে তার থেকে বিভিন্ন উপকারী জিনিস তৈরি করা যেতে পারে । যেমন মানুষ ও প্রাণীদের ওষুধ, কীটনাশক প্রভৃতি । পঙ্গপাল মেরে নির্মূল করা খুব কঠিন । তার থেকে জাল দিয়ে এদের সংগ্রহ করে কাজে লাগানো সহজ কাজ ।

পঙ্গপাল কীভাবে কাজে লাগানো যায় এই সংক্রান্ত দীর্ঘ 40 বছর ধরে গবেষণা করে চলেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন এই অধ্যাপক ।

Last Updated : Jun 27, 2020, 12:34 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.