বোলপুর, 3 এপ্রিল: বেআইনি কয়লা কারবারি রাজু ঝা'কে গুলি করে খুনের ঘটনায়, শ্যুটআউটকাণ্ডে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন শেখ নূর হোসেন ৷ তিনি গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত আব্দুল লতিফের গাড়ির চালক ৷ সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ ঘটনার পর থেকে তাঁর মালিক আব্দুল লতিফ পলাতক বলে এই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন নূর হোসেন ৷ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় খুন, খুনের চেষ্টা-সহ অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিট ।
1 এপ্রিল সন্ধ্যায় শক্তিগড়ে শুট আউটে খুন হন কয়লা কারবারি তথা বিজেপি নেতা রাজু ঝা ৷ বেআইনি কয়লা কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে ৷ আহত হন তাঁর সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায় । যে গাড়িতে রাজু কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সেই গাড়িটি বীরভূমের ইলামবাজারের গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত আব্দুল লতিফ ওরফে হিঙ্গুর শেখের । গাড়িতে আব্দুল লতিফও ছিলেন । আর গাড়িটি চালাচ্ছিলেন লতিফের চালক শেখ নূর হোসেন ।
আব্দুল লতিফের গাড়ির চালকের দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি 5 বছর ধরে আব্দুল লতিফের গাড়ি চালান । 1 এপ্রিল দুপুর দেড়টা নাগাদ ইলামবাজার থেকে আব্দুল লতিফকে নিয়ে দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি ৷ সেখানে প্রথমে ব্রতীন মুখোপাধ্যায়কে গাড়িতে তোলা হয় । তারপর তাঁরা 3 জন যান দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে রাজু ঝায়ের হোটেলে ৷ হোটেলে রাজু ঝা ও আব্দুল লতিফ নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে বেরিয়ে যান । এরপর তাঁরা সাদা ফরচুনার গাড়িটি করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন । শক্তিগড়ে গাড়ি দাঁড় করাতে বলা হয় ৷
শেখ নূর হোসেন আরও জানিয়েছেন, রাজু ঝা ছাড়া বাকিরা গাড়ি থেকে নেমে ঝালমুড়ি খান । সেই সময় নীল রঙের একটি বেলেনো গাড়ি করে 3 জন এসে সাদা ফরচুনার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে ৷ গুলি লেগে গাড়ির দরজার দিকে লুটিয়ে পড়েন রাজু ঝা । ব্রতীন মুখোপাধ্যায় বাইরে থেকে ছুটে আসেন, তাঁর হাতে গুলি লাগে ৷ খবর পেয়ে শক্তিগড় থানার পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে । অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার পর থেকে আব্দুল লতিফকে দেখা যায়নি ৷
আরও পড়ুন: সম্পত্তি বৃদ্ধি পেলেও ছোটবেলার পাড়াকে ভোলেননি, সেখানকার 'মসিহা' ছিলেন রাজু
ইতিমধ্যেই এই অভিযোগের ভিত্তিতে 302, 307, 326, 120বি, 34 আইপিসি ও অস্ত্র আইনের 25, 27, 35 ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিট ৷ জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের হোটেলে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝায়ের সঙ্গে আব্দুল লতিফের টাকার বখরা নিয়ে বাকবিতন্ডা হয় ৷ উত্তেজিত হয়ে কাঁচের গ্লাসও ভাঙে ৷ এরপরে বিবাদ মেটাতে একই গাড়িতে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হন তাঁরা ৷ রাজ্য পুলিশ ও সিবিআই আব্দুল লতিফ ওরফে হিঙ্গুর শেখের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে । তবে ঘটনার 48 ঘণ্টা পরেও এই শ্যুটআউটের ঘটনায় একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ।