সিউড়ি, 22 অক্টোবর: দেউচা-পাচামিতে জমি অধিগ্রহণ করতে সিঙ্গুর প্রসঙ্গকেই হাতিয়ার করছে রাজ্য সরকার । দিনকয়েক আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছিলেন, সিঙ্গুর থেকে সিপিআইএম টাটা'দের তাড়িয়েছে । যেই মন্তব্যে এখনও উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি । এবার ফের সুপ্রিমোর সুরই শোনা গেল জোড়াফুল শিবিরের শীর্ষনেতার গলায় (Firhad Hakim claims big) । দেউচা-পাচামি খোলামুখ কয়লাখনির জমিদাতাদের চাকরির নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে এসে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "এখনও বলছি, সিপিএম সরকারই ষড়যন্ত্র করে টাটাকে তাড়িয়েছে (CPIM chase out Tata from Singur) ।"
রাজ্যের পূর্ত ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এদিন বার্তা দেন, সিঙ্গুরের মত এখানে (দেউচা-পাচামি) জোর করে জমি নেওয়া হবে না । বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলামুখ কয়লাখনি হতে চলেছে দেউচা-পাচামি । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে । জমিদাতাদের আর্থিক প্যাকেজ ও চাকরি দেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে ৷
সিউড়ির রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কয়লাখনির জমিদাতাদের চতুর্থ শ্রেণির (গ্রুপ ডি) চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় ৷ এছাড়াও, জমি দিয়েছে কিন্তু সেই পরিবারের কোনও সদস্যের 18 বছর বয়স হয়নি, এমন যুবক-যুবতীদের মাসিক 10 হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার অঙ্গিকারপত্র তুলে দেওয়া হয় ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্ত ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধানসভার উপ-অধ্যক্ষ আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সিঙ্গুরে পিটিয়ে, লাথি মেরে জমি নিয়েছে বামেরা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে বুঝিয়ে, আর্থিক প্যাকেজ দিয়ে জমি নিচ্ছে দেউচা-পাচামিতে । লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন হবে, প্রায় 40 হাজার মানুষ চাকরি পাবে ৷ সারা বাংলা জুড়ে শুধু কুৎসা করছে । এখনও বলছি এই সিপিএম, তখনকার বামফ্রন্ট সরকার ষড়যন্ত্র করে টাটাকে তাড়িয়েছে ।"
আরও পড়ুন: টাটাকে আমি তাড়াইনি, সিপিএম তাড়িয়েছে, দাবি মমতার
প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলে খোলামুখ কয়লাখনির জন্য প্রায় 21 হাজার মানুষের বসতি সরাতে হবে ৷ যার মধ্যে অধিকাংশই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা । এছাড়া, ধ্বংস হবে বৃহৎ বনাঞ্চল, জলাশয়, চারণভূমি । তাই কয়লাখনির জমি দিতে নারাজ বড় অংশের মানুষ । তাই খনি প্রকল্প ঘোষণা হতেই শুরু হয়েছে আন্দোলন । সেই আন্দোলন এখনও অব্যাহত ।