মাড়গ্রাম (বীরভূম), 9 জুন: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের প্রথম দিনই অশান্তির ছবি ধরা পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৷ যেন 2018 সালের পুনরাবৃত্তি দেখা গেল শুক্রবার ৷ অশান্তির আঁচ থেকে রেহাই পেল না বীরভূমের মাড়গ্রামও। পুলিশের সামনেই মারধর করা হয় কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মহম্মদ শাহজাহান আলিকে। আর সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সাংবাদিক, চিত্র সাংবাদিকরাও।
বৃহস্পতিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ আর শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে মনোনয়ন পেশের কাজ ৷ এদিনই ছিল রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিন। আর প্রথমদিনই কার্যত দিকে দিকে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করল বিরোধীরা ৷ এদিন বীরভূমের রামপুরহাট দুই নম্বর ব্লকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন বিডিও। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রামপুরহাটের ব্লক সভাপতি মহম্মদ শাহজাহান আলি। বৈঠক শেষে তিনি ব্লক অফিস থেকে বেরিয়ে লাগোয়া মাড়গ্রাম থানার পাশে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে ফের ব্লক অফিসে যাচ্ছিল নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু বিষয় জানতে। সেই সময় ব্লক অফিসের সামনেই পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁর স্কুটি থামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছিঁড়ে দেওয়া হয় জামাও। হুমকি দেওয়া হয় পুনরায় মনোনয়ন জমা দিতে এলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
এদিন মুর্শিদাবাদের সালারে, খড়গ্রামে, দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়েও আক্রান্ত হয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা ৷ আক্রান্ত হয়েছেন খোদ প্রার্থী ৷ তেমনই বীরভূমেও কংগ্রেসের ব্লক সভাপতিকে মারধরের অভিযোগে সরব কংগ্রেস ৷ শাহজাহান আলি বলেন, "যারা মারধর করেছে সকলে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একইভাবে মনোনয়নে বাধা দেয় এরা। ফলে আমরা মনোনয়ন জমা দিতে পারিনি। 2018 সালের মতোই আবার আতঙ্কিত হয়ে গেলাম।" এদিন তিনি দাবি করেন, "আমরা নমিনেশন করতে যাইনি। বিডিও ডেকেছিল তাই গিয়েছিলাম। গিয়ে হেনস্থা হতে হলো। আমার মনে হচ্ছে এবারও আমাদের মনোনয়ন জমা দিতে দেবে না তৃণমূল। যুবরাজ মুখে বলে শান্তিতে ভোট হবে। কিন্তু বাস্তবে এরা গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে চায়।"
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় কংগ্রেস, তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের হুমকির অভিযোগ সুকান্তর
পাশাপাশি পুলিশের সামনে মারধর করা হলেও পুলিশ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বলেও অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিনই অশান্ত হলো বীরভূমের মাড়গ্রাম। প্রশ্নের মুখে শাসক দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার যাত্রায় এসে বীরভূমে বলে গিয়েছিলেন, "বিরোধীরা যদি মনোনয়নপত্র জমা না দিতে পারেন আমাকে বলবেন আমি গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেব।" কিন্তু এই কথার বাস্তবিক মূল্যায়ন দেখা গেল না হাঁসন বিধানসভার মারগ্রাম ব্লক অফিসে।