রামপুরহাট, 25 জুন : বছরে বেতন প্রায় দু’কোটি টাকা ৷ ছেলে এমন চাকরি পেলে যেকোনও মা গর্বিত হবেন ৷ বীরভূমের রামপুরহাটের (Rampurhat) শিবানী মণ্ডলও ব্যতিক্রম নন ৷ কিন্তু এই আনন্দের দিনে কিছুটা হলেও কষ্ট পাচ্ছেন তিনি ৷ কারণ, ছেলে বিশাখের এত বেশি বেতনের চাকরি হয়েছে, তা দেখে যেতে পারলেন না তাঁর দিদা ৷
শনিবার সকালে রামপুরহাটের বাড়িতে বসে সেকথাই বলছিলেন শিবানীদেবী ৷ তিনি বললেন, ‘‘মা বলেছিলেন, তুমি রাজার মা হবে ৷ সেই রাজার মা হলাম ৷’’ কিন্তু বিশাখের দিদা গত বছর নভেম্বরেই প্রয়াত হয়েছেন ৷ ফলে নাতির সাফল্য চাক্ষুষ করতে পারলেন না তিনি ৷
যদিও ছেলে বিশাখ যে একদিন ভাল কিছু করবে, সেটা গোড়া থেকেই বিশ্বাস ছিল শিবানীদেবীর ৷ তাই প্রথম থেকেই ছেলের কেরিয়ার গড়তে গড়তে যা যা আত্মত্যাগ করতে হয়, তা করেছেন বারবার ৷ মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন রামপুরহাটে ৷ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের (ICDS) চাকরির ভরসায় ছেলেকে পড়িয়েছেন ৷ তাঁর এই লড়াইয়ে, তাঁর মা বরাবর পাশে ছিল বলে জানালেন শিবানী মণ্ডল ৷
রামপুরহাটের জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন থেকে পাস করা বিশাখ এখন যাদবপুরের (Jadavpur University) ছাত্র ৷ তিনি চাকরির অফার পেয়েছেন ফেসবুক ও গুগল থেকে ৷ কোন চাকরিতে তিনি যোগ দেবেন, তা এখনও ঠিক করেননি ৷ তবে যেখানে যান, তাঁর বেতন হবে বছরে প্রায় দু’কোটি টাকা ৷ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল যে ফেসবুকে যোগ দিতে চাইছেন বিশাখ ৷ সেক্ষেত্রে তাঁর কর্মস্থল হতে পারে লন্ডন ৷
বিশাখের বাবা ছোট কৃষক ৷ তবে ছেলের সাফল্যে তাঁর অবদান কতটা, সেই বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে ৷ এই বিষয়ে তেমন কিছু বলতে শোনা যায়নি শিবানী মণ্ডলকে ৷ তিনি শুধু বলেছেন ছেলের কথা ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতাম আমার ছেলে একদিন অনেক বড় হবে । অনেক কষ্ট করেছি, কিন্তু ছেলেকে বুঝতে দিইনি । আমার পাশে ছিলেন আমার মা । গত বছর নভেম্বর মাসে মারা গিয়েছেন । এটাই দুঃখ বিশাখের দিদুন এত বড় খবরটা জানতেই পারলেন না ।" এর পর তিনি বলেন, "আমাকে বলছিলেন মা, তোমার ছেলে রাজা হবে । সত্যি মায়ের আশীর্বাদ আমাকে রাজার মা করল ৷"
আরও পড়ুন : Pranab Mukherjee: প্রণবকে নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে বই ! অপেক্ষায় দুই বাংলা