শান্তিনিকেতন, 23 আগস্ট : সাইকেলে চেপে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিশ্বভারতীতে পাঁচিল তোলা নিয়ে স্থানীয়দের মতামত জানলেন জেলা পুলিশ সুপার । ঠাকুর পরিবারের সদস্য সহ প্রবীণ আশ্রমিকদের মতামত নেওয়া হয় আজ। রবিবার সকালে রীতিমতো পাঞ্জাবি পরে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সাইকেল ব়্যালি করেন পুলিশকর্মীরা । জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানান, পাঁচিল তোলা নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। উপাচার্যের নির্দেশে পাঁচিলের কাজ শুরু হয়ছিল৷ যেদিন সেই কাজ শুরু হয়, তার পরদিন সকালে বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে বিশ্বভারতী জুড়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। ভাঙচুর করা হয় নির্মাণসামগ্রী সহ বিশ্বভারতীর অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস ও পৌষমেলার গেট। ঘটনায় নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তৃণমূল বিধায়ক, কাউন্সিলরদের। ঘটনাটি শান্তিনিকেতন থানার কাছাকাছি ঘটলেও পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ বিশ্বভারতীর৷ অন্যদিকে, একইভাবে শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিকদের বাড়ির সামনে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে । শান্তিনিকেতনকে অচলায়তনে পরিণত করা হচ্ছে, অভিযোগে বহু আশ্রমিকের। উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গরহাজির থাকলেও বহু আশ্রমিককে দেখা গিয়েছিল।
আজ পাঁচিল প্রসঙ্গে প্রবীণ আশ্রমিকদের মতামত জানতে শান্তিনিকেতন থানা থেকে সাইকেল ব়্যালি করেন জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং । ছিলেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) শিবপ্রসাদ পাত্র, SDPO অভিষেক রায় সহ অন্য পুলিশকর্মীরা। সকলের পরনে ছিল পাঞ্জাবি৷ পুলিশকর্মীরা আশ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি যান ও পাঁচিল দেওয়া নিয়ে তাঁদের মতামত শোনেন। আশ্রমিক উর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায়, সুজিত চট্টোপাধ্যায়, লীলা ভট্টাচার্য, ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর প্রমূখের সঙ্গে কথা বলেন জেলা পুলিশ সুপার। পরে শান্তিদেব ঘোষের বাড়ির সামনে দেওয়া পাঁচিলটি খতিয়ে দেখেন পুলিশ আধিকারিকরা।
আশ্রমিক ও ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, "পাঁচিল তোলার নামে জায়গাগুলোকে নষ্ট করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।"
আশ্রমিক নীলা ভট্টাচার্য বলেন, "বিশ্বভারতীর দিকে দিকে পাঁচিল দিয়ে জেলখানায় পরিণত করা হচ্ছে । আমরা এগুলো মানতে পারব না।"
জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, "আশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললাম। তাঁদের মত নিলাম। মতামত নোট করেছি। পাঁচিল নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"