বোলপুর, 21 অগস্ট: 'সেভ ফিমেল স্টুডেন্ট অফ গুরুদেব ইউনিভার্সিটি', এই ব্যানার লিখে অনশনে বসলেন বিশ্বভারতীর 6 জন ছাত্রী। অভিযোগ, অনশনকারী ছাত্রীদের মধ্যে 4 জনকে দিনের পর দিন মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করে চলেছেন এক অধ্যাপক। এই মর্মে 2021 সাল থেকে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব থেকে শুরু করে উপাচার্যকে অভিযোগ করেও কোনও ফল হয়নি ৷ তাই সোমবার, হাতে ব্যানার নিয়ে ঐতিহ্যবাহী তিন পাহাড় ও তালধ্বজের সামনের রাস্তায় অনশন শুরু করেন ছাত্রীরা। আর এই ঘটনায় আরও একবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ওই ছাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইন্টারনাল কমপ্লেন্স কমিটি তদন্ত করছেন।"একদিকে যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক ছাত্র মৃত্যু ঘিরে উত্তাল রাজ্য, ঠিক সেই সময় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, 2021 সালে থেকে নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক অর্ণব ঘোষ 4 জন ছাত্রীকে পৃথক পৃথক ভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করে চলেছেন ৷
3 জন গবেষণারত ছাত্রী ও 1 জন স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দেওয়া, না-মানলে পড়াশোনার জীবন শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন ওই অধ্যাপক। এই মর্মে প্রথমে বিভাগীয় প্রধান, পরে বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষ, ইন্টারনাল কমপ্লেন্স কমিটি (আইসিসি)-র কাছে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। এমনকী, বিশ্বভারতীর কর্মসচিব ও উপাচার্যের কাছেও অভিযোগ করা হয়। কিন্তু, কোনও ফল না-হওয়ায় আজ হাতে ব্যানার নিয়ে ঐতিহ্যবাহী তিন পাহাড় ও তালধ্বজের সামনের রাস্তায় অনশনে বসেন তাঁরা।
4 জন ছাত্রীর সঙ্গে অনশনে যোগ দেন তাঁদের দুই সহপাঠী। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দিয়ে ব্যানারে লেখা রয়েছে 'সেভ ফিমেল স্টুডেন্ট অফ গুরুদেব ইউনিভার্সিটি'। পাশাপাশি গুরুদেবের লেখা প্রতিবাদী কবিতার কয়েকটি লাইন ব্যানারে লিখে অনশন করেন ছাত্রীরা ৷ অনশনকারী দুই ছাত্রী বলেন, "দিনের পর দিন নানাভাবে আমাদের নির্যাতন করা হয়েছে। প্রথমে কুপ্রস্তাব দেন অধ্যাপক অর্ণব ঘোষ। না-মানলে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন ৷ আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।"
আরও পড়ুন: যাদবপুরের ঘটনায় সেখানকার ছাত্র সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য জানতে চাইল হাইকোর্ট
তাঁরা আরও বলেন, "উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, আইসিসি সব জায়গায় 2021 সাল থেকে একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছি। তাও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শেষ পর্যন্ত অনশনে বসতে বাধ্য হলাম ৷ এরপর আমরা পুলিশের দ্বারস্ত হব।" যদিও, নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক অর্ণব ঘোষ বলেন, "আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা বারণ। যা বলার পিআরও বলবে।"