বীরভূম, 14 জুন: অনুব্রতহীন বীরভূমে জেলা পরিষদের আসনে 90 শতাংশ নতুন মুখ ৷ জেলা পরিষদের 52টি আসনের মধ্যে 45 আসনে নতুনদের প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ আর তার থেকেও বড় বিষয়, প্রার্থী তালিকায় বাদ গিয়েছে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নেতাদের নাম ৷ সেই সঙ্গেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে, তবে কী ক্ষমতার তৃণমূল স্তর থেকে অনুব্রত মণ্ডলের প্রভাব মুছে ফেলার কাজ শুরু হল বীরভূমে ? এভাবেই কী একদা দোরদণ্ডপ্রতাপ কেষ্টর ডানা ছাঁটা শুরু করল দল ? উঠছে সেই প্রশ্ন ৷
গরুপাচার ও হাওয়ালা মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ৷ তাঁকে ছাড়াই এই প্রথম হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ অর্থাৎ, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নেই ‘অনুব্রতর দাওয়াই’ ৷ প্রার্থী কারা হবেন ? সেনিয়ে তাঁর মতামতেরও কোনও প্রশ্নই ওঠে না ৷ পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেসে কারা প্রার্থী হবেন ? তা মূলত ঠিক করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের বাকি শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ আর প্রার্থী তালিকায় কিছুটা সংযোজন হয়েছে জেলার শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীদের পাঠানো গুটি কয়েক নাম ৷ এমনটাই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গিয়েছে ৷
বীরভূম জেলা পরিষদে 2018 সালে 42টি আসন ছিল ৷ 10টি বেড়ে এবার আসন সংখ্যা 52-তে দাঁড়িয়েছে ৷ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা গেল, গতবার যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন বা ভোটে জিতেছিলেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র 7 জনের নাম রয়েছে ৷ বাকি 45 জন নতুন মুখকে জেলা পরিষদের প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ পুরনো প্রায় সব প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে ৷ যা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন, তবে কি ধীরে ধীরে অনুব্রত মণ্ডলের ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া শুরু করেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন নতুন তৃণমূল ?
আরও পড়ুন: অনুব্রত বিরোধী কাজলের মনোনয়ন পেশ, 'গুরু' কেষ্টর বুলি আওড়ে বললেন 'খেলা হবে'
পঞ্চায়েত নির্বাচনের তপ্ত বাজারে এই প্রশ্নটাই ঘোরাফেরা করছে বীরভূম জেলার প্রতিটি ব্লকের প্রতিটি মোড় ও তার অলি-গলিতে ৷ প্রসঙ্গত, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান এবার টিকিট পাননি ৷ সেই জায়গায় নানুরে টিকিট পেলেন অনুব্রতর যুযুধান নেতা কাজল শেখ ৷ একই রকম উদাহরণ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৷ আর কেষ্টর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর হিসেবে পরিচিত কাজল শেখ এ দিন মনোনয়ন পেশ করে বলেন, ‘‘আমি অনুব্রত মণ্ডলকে আদর্শ মানি ৷’’ তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, "নতুন-পুরনো মিলিয়েই টিকিট বণ্টন হয়েছে ৷ নতুনদেরও তো সুযোগ দিতে হবে ৷ দল যেটা ভালো বুঝেছে সেটাই করেছে ৷"