মুরারই, 16 ডিসেম্বর: মৃত স্বামীর শুক্রাণু ধারণ করে মা হলেন এক মহিলা। মৃত স্বামীর সংরক্ষিত শুক্রাণু ব্যবহার করে, 'ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন' (আইভিএফ) পদ্ধতিতে 48 বছর বয়সে সন্তানের মা হলেন বীরভূমের মুরারই এলাকার এক মহিলা। সন্তান সুস্থ থাকলেও, মা আপাতত রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি থাকলেও তিনিও সুস্থই রয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই মহিলা।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারইয়ের বাসিন্দা সঙ্গীতা কেশরীর সন্তান ধারণে সমস্যায় ছিলেন। দীর্ঘদিন আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান লাভের চেষ্টাও চালান ওই দম্পতি। দু'বছর আগে কলকাতার একটি পরীক্ষাগারে ওই মহিলার স্বামীর শুক্রানু সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে কোভিডে স্বামী অরুণ প্রসাদ কেশরী মারা যান। সন্তান লাভের জন্য মৃত স্বামীর শুক্রাণু ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন মহিলা। শেষ পর্যন্ত 48 বছর বয়সে পুত্র সন্তানের মা হন সঙ্গীতা কেশরী। গত মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করে পুত্র সন্তানের জন্ম হয় রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মহিলার পাশে নেই পরিবারে কেউই। মহিলার এই সাহসিকতার জন্য কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সঙ্গীতার বাপে বাড়ি উত্তর 24 পরগনার নৈহাটিতে। মুরারইয়ের বাসিন্দা অরুন প্রসাদ কেশরীর সঙ্গে 27 বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। মুরারইয়ে একটি তাদের মুদিখানার দোকানও রয়েছে। দু’বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর সঙ্গীতা কেশরী সেই মুদিখানার দোকানই চালান। স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ি বা বাপের বাড়ির লোক কেউ তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেনি বলেই জানা গিয়েছে। হাসপাতালে তিনি এখন একাই লড়াই করে চলেছেন।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, “ওই মহিলা কঠিন পরিস্থতির মধ্যে দিয়ে মা হয়েছেন। সন্তানের জন্ম দেওয়ার বয়সের শেষে দাঁড়িয়ে তিনি স্বামী শুক্রাণু ধারণ করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার যে ঝুঁকি নিয়েছিলেন সেটার তাঁকে স্যালুট জানাতে হয়। আমরা খুশি, কারণ এই মুহূর্তে মা ও বাচ্চা দু'জনেই ভালো রয়েছে ৷”
আরও পড়ুন: