বিষ্ণুপুর, 5 জুন : বিজেপির একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে হঠাৎ বেরিয়ে যান বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) ৷ তারপরই রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে যায় ৷ শুরু হয় জল্পনা ৷ তবে কি ফের তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখাবেন সৌমিত্র ? ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েন সৌমিত্র জায়া সুজাতাও ৷ স্বামীকে পুরানো দল ফেরার আহ্বান জানান ।
সুজাতা খাঁ বলেন, ‘‘নোংরা, আবর্জনায় ভরা বিজেপি ছেড়ে দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় ।’’এর পরই রাজ্য রাজনীতিতে ফের চর্চায় চলে আসেন সৌমিত্র খাঁ ৷ ঘটনার সূত্রপাত আজ সকাল 8 টা বেজে 33 মিনিট নাগাদ । বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি সুজিত আগস্তি মিডিয়া শাখার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) সভা সংক্রান্ত একটি বার্তা পোস্ট করেন । এর পরই এই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান সৌমিত্র খাঁ ।
সুজিত আগস্তি জানান, আজকের বিকেলের এই সভার কথা তিনি সৌমিত্রবাবুকে ফোন করে জানিয়েছিলেন । তারপর এই লেফটের ঘটনা নিয়ে তিনিও কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না ।
তবে এরপর সমস্ত জল্পনায় জল ঢালেন খোদ সৌমিত্র খাঁ ৷ বলেন, ‘‘বিজেপিতে আমি নিঃশ্বাসও ভালো পাচ্ছি । আর বিজেপিতে আমার দম বন্ধও হচ্ছে না । আমি বিজেপির একজন দায়িত্বশীল নেতা । বিজেপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী । দলের সঙ্গে আমার কোনও মতান্তর নেই । আড়াই বছর আগে যখন বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম, তখন কোনও বিধায়ক ও সাংসদ যোগদান করেনি । সেই জায়গা থেকে এখন দলে 75 জন বিধায়ক আছে । 2 কোটি 27 লাখ মানুষের ভোট পেয়েছি ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর শান্তিপ্রিয় এলাকা । লকডাউনে এলাকার মানুষের পাশে থেকেছি । একমাস ধরে যা কাজ করছি, নিজের এলাকায় করছি । কোথাও ছবি দেখাতে হবে এটা প্রয়োজন বলে মনে করি না । সাংসদকে সব জায়গায় যেতে হবে । এটার কোনও মানে নেই । আমার ছেলেরা কাজ করছে ।’’
স্ত্রীর তৃণমূলে আহ্বানের জবাবও দেন সৌমিত্রবাবু ৷ বলেন, ‘‘সুজতা বললে কিছু যায় আসে না । ও রাজনীতিতে নবাগত । তৃণমূল করে শান্তি পাচ্ছে, করুক ।’’
সৌমিত্র খাঁ জানান, যেহেতু রাজ্যজুড়ে কোভিড পরিস্থিতি ভয়াবহ এবং রাজ্যে লকডাউন চলছে, তাই তিনি ব্যক্তিগতভাবে সভা, সমিতি, মিটিং, মিছিলের বিরোধী । এখন সভা স্থগিত রাখা উচিত বলেই তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত । এই জন্যই তিনি দিলীপ ঘোষের সভায় উপস্থিত থাকছেন না । এর পিছনে অন্য কারণ খোঁজা বৃথা । তবে, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার সঙ্গে মিডিয়ার একাংশ বিজেপি ছাড়ার যোগসূত্র যেভাবে জুড়ে দিচ্ছেন, তা একেবারে ভিত্তিহীন বলেও জানান তিনি ৷
আরও পড়ুন : পিসি একা নন, সঙ্গে ভাইপোও; অভিষেকের উত্তরণ ঘটিয়ে মমতার কুশলী চাল
এদিকে, দিলীপ ঘোষের বিষ্ণুপুরের সভায় সৌমিত্র'র হাজির না থাকার সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিজেপির অন্দরে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে । দলের অনেকেই মনে করছেন ফের দিলীপ ঘোষ ও সৌমিত্র খাঁয়ের দ্বৈরথ শুরু হয়ে গেল ৷ গত বছর মহাসপ্তমীর দিন থেকে রাজ্যের যুব মোর্চার কমিটি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় সৌমিত্রের । তারপর আবার দু‘জনের মধ্যে সন্ধিও হয় । বিধানসভা ভোটের আগে সব অভিমান ভুলে সৌমিত্র বলে বসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন দিলীপ ঘোষ । যা নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি ।