বাঁকুড়া, 5 মে: বর্ষাকাল এলেই মানুষগুলোর চোখে নেমে আসত অন্ধকার ৷ আজ আছি তো কাল নেই, এমনই অবস্থা ছিল বাঁকুড়ার সতীঘাটে গন্ধেশ্বরী নদীর তীরবর্তী লোকজনের ৷ কারণ বর্ষায় গন্ধেশ্বরীর চোখ রাঙানিতে জলের তলায় চলে যেত অস্থায়ী সেতু ৷ ঘুর পথে বাঁকুড়া শহরে আসতে সময়ও লাগতো বেশ ৷ সেই সমস্যা থেকে অবশেষে মুক্তি ৷ আর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানালেন গন্ধেশ্বরীর ওপারের পুরন্দরপুর, মৌলাডাঙা, বিকনা এবং কেশিয়াকোল-সহ 15টি গ্রামের বাসিন্দারা ৷
গত 26 এপ্রিল নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পূর্ত দফতরের অধীনে তৈরি সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন ৷ সাধারণ মানুষের চলাচলও শুরু হয়েছে সেখান দিয়ে ৷ অন্ততপক্ষে 15 গ্রামের মানুষের বর্ষাকালে বাঁকুড়া শহরে যাওয়া খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে এই সেতুর কারণে ৷ এতদিন সেখানে বাঁকুড়া পৌরসভার তরফে তৈরি করা একটি কাঠের সাঁকো ছিল ৷ যেটি বর্ষাকালে জলের তলায় চলে যেত ৷ এমনকি মাঝে মধ্যে জলের তীব্র স্রোতে ভেঙে যেত ৷ তাই শহরে যেতে হলে ঘুর পথে যাতায়াত করতে হত ৷
তবে, এবার আর সেই সমস্যা হবে না ৷ গন্ধেশ্বরী নদীর উপর তৈরি এই স্থায়ী সেতুর ফলে পুরন্দরপুর, মৌলাডাঙা, বিকনা এবং কেশিয়াকোল-সহ 15টি গ্রামের বাসিন্দারা মুহূর্তের মধ্যে বাঁকুড়া শহরে যেতে পারছেন ৷ দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধানের জন্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷ জানিয়েছেন, সামান্য পারিশ্রমিকে দীনমজুরি করা মানুষজনের পক্ষে ঘুর পথে টোটোয় যাতায়াত করা কষ্টকর ছিল ৷ গাড়ি ভাড়া দিতে গিয়েই টাকা খরচ হয়ে যেত ৷ এবার সেই সব সমস্যার হাত থেকে রেহাই বলে জানাচ্ছেন তাঁরা ৷
বাঁকুড়া পৌরসভার তরফ থেকে অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করা হলেও বর্ষাকালে সেটা দিয়ে পারাপার তো দুরস্থ,জলের তলায় চলে যেত সেই সেতুটি। দিন আনা,দিন খাওয়া মানুষগুলো যারা খুব সামান্য পারিশ্রমিকে শহরে আসে কাজের তাগিদে,ঘুর পথে টোটো করে আসতে অনেকটা খরচ পড়ে যেত। হ্যাঁ আপাতত সে সব থেকে মুক্তি ৷ রাজশেখর চন্দ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, নদীর ওপারে গ্রামগুলির বাসিন্দাদের বর্ষাকালে যে সমস্যা হতো, তা একেবারে মিটে গেল ৷ বাউরি দাস ঘোষ নামে আরেক বাসিন্দা জানান, বর্ষাকালের যন্ত্রণা থেকে আপাতত তাঁদের মুক্তি ৷
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় প্রবল বৃষ্টিতে অস্থায়ী সেতু ভেঙে বিপত্তি
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৈরি হওয়া এই ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে ৷ তবে, এই কাজ আরও আগে শেষ হতে পারত বলে জানান তিনি ৷ করোনার জন্য কাজ শেষ করতে দেরি হয়েছে ৷ তবে, কোভিডের সমস্যা মিটে যাওয়ার পর, দ্রুত সেতু তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে জানালেন জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ ৷