বাঁকুড়া, 19 জুন : নদীর ওপারে রয়েছে পঞ্চাশটি গ্রাম ৷ মাঝখানে রয়েছে দ্বারকেশ্বরের ওপরে রেলসেতু ৷ চলাচলের জন্য সেতু না থাকার জন্য তার ওপর দিয়েই প্রত্যহ যাতায়াত মানুষের । নদীপথই একমাত্র ভরসা শ্যামপুর, সুর্পানগর, বীরবাঁধ, সোনাতপল, বেলাড়া-সহ পঞ্চাশটি গ্রামের বাসিন্দাদের । রেললাইনের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৷ তবু নিরুপায় মানুষকে বেছে নিতে হয়েছে এই সেতুকেই ৷
দ্বারকেশ্বরের ওপার থেকে রুজির টানে প্রতিদিন শহরে আসতে হয় বহু মানুষকে ৷ পারাপার করার জন্য অস্থায়ী সেতু নির্মাণ হলেও গত চারদিনে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে খুড়কুটোর মতো তলিয়ে গিয়েছে সেই সেতু ৷ রেল দফতরের কড়া সতর্কীকরণ সত্ত্বেও পারাপারের মাধ্যম হিসাবে বাধ্য হয়ে বেছে নিতে হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ সুর্পানগর রেল সেতুকেই ।
কারণ ঢলডাঙা মোড় দিয়ে ঘুরে যেতে হলে একপিঠেই পেরোতে হবে 9 কিলোমিটার রাস্তা ৷ ঘুরপথে শহর যেতে সময় লেগে যায় এক-দেড় ঘণ্টা ৷ কাজের জায়গায় পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় ৷ প্রতিদিন এমন দেরি হতে থাকলে চলে যেতে পারে চাকরি ৷ শ্রম নির্ভর মানুষগুলো তাই এই দশ মিনিটের রেলসেতুর পথকে বাধ্য হয়েই বেছে নেন ৷ তাঁরা একাধিকবার পাকা সেতুর দাবি জানিয়েছেন ৷ সমস্ত প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক স্তরে দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা ৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম পেরিয়ে গেলেও অবস্থা একই রকম রয়ে গিয়েছে বলে দাবি বয়স্কদের ।
স্থানীয় বাসুদেব দাস বলেন, "আমাদের বাবা, কাকা, জ্যাঠারা একই রকম সমস্যা ভোগ করে এসেছেন ৷" টুসি বাউড়ি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "আমাদের পায়ে হেঁটে লোকের বাড়িতে কাজে আসতে হয় ৷ তাই নিরুপায় হয়ে এই পথ বেছে নেওয়া ৷ একটা পাকা সেতু নির্মাণ হলে খুব ভালো হয় ৷"
বর্ষা মানেই যেন অন্ধকার নেমে এল ৷ তখন তো ঝুঁকি দ্বিগুণ হয় ৷ তবু রেললাইন পেরিয়েই কাজে যেতে হয় প্রতিদিন ৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে মানুষগুলোর একটাই আর্তি, একটা পাকা সেতুর ৷ যাতে তাঁরা তাঁদের জীবনযুদ্ধে সাবলীল ভাবে বাঁচতে পারেন ৷ নিশ্চিন্তে কাজ বাঁচিয়ে পরিবারের মুখে দু-মুঠো অন্ন তুলে দিতে পারেন ৷
আরও পড়ুন : যশের দোসর নিম্নচাপ, হুগলির সবজি চাষিদের মাথায় হাত