বাঁকুড়া, 28 এপ্রিল: অভিনব পদ্ধতিতে ছেলের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান সারলেন বাঁকুড়ার শিক্ষক দম্পতি । প্রায় 700 দুস্থ মানুষের খাবারের আয়োজন করেন তাঁরা । নিয়ম মেনে বাড়িতে ছোটো করে মুখে ভাতের অনুষ্ঠান হয় । ছিল না কোনও জাঁকজমক ।
সজল সাহু ও স্ত্রী সংগীতা সাহু বাঁকুড়ার ধলডাঙা এলাকার বাসিন্দা । দু'জনেই পুরুলিয়ার সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন । গতকাল তাঁদের পুত্র ওমের অন্নপ্রাশন ছিল । এখন লকডাউন চলছে । খাবার জুটছে না বহু মানুষের । তার উপর জমায়েত, ভিড় না করতে বলা হচ্ছে । সেই ভাবনা থেকেই দুস্থদের খাওয়ানোর কথা মাথায় আসে তাঁদের । সেইমতো 700 জন দুস্থের খাবারের আয়োজন করেছিলেন ।
বাঁকুড়ার লালবাজারে একটি ক্লাবের উদ্যোগে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন দুস্থ, অসহায় মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে । বিষয়টি সজলবাবুর নজরে এসেছিল । এরপর তিনি ওই ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । নিজের ইচ্ছের কথা তাঁদেরকে জানান । ওই ক্লাব তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় । সজলবাবুর প্রস্তাবমতো গতকাল সকাল থেকে প্রায় 700 মানুষকে অন্নপ্রাশনের মেনু অনুযায়ী খাবার বিতরণ করেন ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবীরা ।
ক্লাবের সদস্য তৃপ্তি বিশ্বাস এবং অভিষেক বাজোরিয়া বলেন, "আমরা লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন গরিব মানুষদের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দিচ্ছি । আমাদের এই চেষ্টা দেখে সজলবাবু যোগাযোগ করেন । তিনি জানিয়েছিলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ছেলের অন্নপ্রাশনে মেনু অনুযায়ী খাবার দিতে চান দুস্থ মানুষদের । আমরা সজলবাবুর এই উদ্যোগকে সমর্থন জানাই । গতকাল সেইমতো খাবার বিতরণ করা হয় । দেখে খুবই ভালো লাগছে যে মানুষের মধ্যে একটা নতুন চেতনা তৈরি হয়েছে এই সমস্ত অসহায় মানুষের জন্য ।"
সজলবাবুর আত্মীয় চিন্ময় পাল বলেন, "নাতির অন্নপ্রাশন এইভাবে আয়োজন করায় আমরা ভীষণ আনন্দিত ।"