বাঁকুড়া, 19 এপ্রিল : এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে শিশুটির পরিবারের বিরুদ্ধে । এর প্রতিবাদে রাতেই কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা । হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মৃত শিশুর পরিবারের সদস্য়রাও । পরে পুলিশ ঘটনাস্থানে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে ।
কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিল বিষ্ণুপুর শহরের কৃষ্ণগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা রাজীব রায়ের শিশুকন্যা । ভরতি ছিল বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে । গতকাল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সন্ধেয় সেখানেই মৃত্যু হয় তার । অভিযোগ, এরপরই শিশুটির এক আত্মীয় কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের ছবি তুলতে থাকেন মোবাইলে । যা দেখে বাধা দেন ডাক্তাররা । এই নিয়ে দু-এক কথায় শুরু হয় বচসা । হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, বচসার মাঝেই মৃত শিশুর পরিবারের লোকজন তাঁদের মারধর করেন । যার প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করে দেন তাঁরা । হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শিশুটির পরিবারের লোকজনও । বেশ কিছুক্ষণ এমন চলার পর পুলিশ এসে এদের মধ্যে তিনজনকে আটক করে । অন্যদিকে, হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করলে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি তুলে নেন ।
যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকজন সিনিয়র ডাক্তার জুনিয়রদের উস্কানি দিয়েছেন । আর সেজন্যই তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করেন । এবিষয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জানান, শুক্রবারই জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপার হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং সেখানে জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা বলেছিলেন । তার মধ্যে নিরাপত্তার বিষয়টিও ছিল । হাসপাতালে নিরাপত্তা আরও জোরদার করার দাবিকে সমর্থনও করেছিলেন পুলিশ সুপার । কয়েকদিনের মধ্যেই হাসপাতালে নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মী দেওয়া হবে । আর রোগীমৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তার জন্য সবসময় ডাক্তারদের দায়ী করা ঠিক নয় । কারণ, অনেক সময়ই একেবারে শেষ মুহূর্তে মুমূর্ষদের এই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । তবুও এখানকার চিকিৎসকরা নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে থাকেন ।
জুনিয়র ডাক্তারদের মারধরের অভিযোগ খারিজ করেছে মৃতার পরিবার । তাদের দাবি, অকারণে তাদের বাড়ির লোকেদের আটক করেছে পুলিশ । ডাক্তারদের মারধর করা হয়নি। তবে তাঁদের ছবি তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল । শিশুটির চিকিৎসা আরও দ্রুত শুরু করা হলে এভাবে মৃত্যু হত না ।