ETV Bharat / state

দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত সন্তান, দিশেহারা পরিবার

কি এই SSPE রোগ? জিপমার হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ঋষির মা রবি লোহার জানান, SSPE এমন একটি রোগ যাতে আক্রান্ত শিশুরা এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে । এই রোগে আক্রান্তের মস্তিষ্কের একটি অংশ বিকল হয়ে যায় । দিন দিন আরও অবনতি হয় ।

sspe
author img

By

Published : Aug 31, 2019, 8:12 PM IST

বাঁকুড়া, 31 অগাস্ট : নয় মাস আগেও জীবনটা ছিল অন্যরকম । আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই হেসে-খেলে দিন কাটত পাঁচ বছরের ঋষি লোহারের । ICDS-তে গিয়ে পড়াশোনাও করত । কিন্তু 9 মাস আগে হঠাৎই একদিন ভুল বকতে শুরু করে ঋষি । ভয় পেয়ে যান বাবা-মা । তড়িঘড়ি স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁরা । সুফল না মেলায় তাকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন । কিন্তু তাতেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি । এরপর বাঁকুড়া সম্মেলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে SSKM হাসপাতালে চিকিৎসা চলে তার । পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, ঋষির দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে । কোনও চিকিৎসা নেই ।

বাঁকুড়ার জয়পুরের বাসিন্দা বুধন লোহার ও রবি লোহারের দ্বিতীয় সন্তান ঋষি । SSKM হাসপাতাল থেকে ফেরার পর পেশায় রাজমিস্ত্রি বুধন লোহার শেষসম্বল হারিয়ে একপ্রকার ধার দেনা করেই ঋষিকে পুদুচেরির জিপমার হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখানে তার বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলে । জিপমার হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ঋষির SSPE (Subacute sclerosing panencephalitis) নামে এক দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে । ভারতে এখনও যার চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু হয়নি ।

কী এই SSPE রোগ? জিপমার হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ঋষির মা রবি লোহার জানান, SSPE রোগে আক্রান্ত শিশুরা এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে । এই রোগে মস্তিষ্কের একটি অংশ বিকল হয়ে যায় । আর তা দিনে দিনে আরও অবনতির দিকে যেতে থাকে ।

এমতবস্থায় ঋষির ওষুধ ও খাবারের জোগান দিতে লোহার পরিবারের প্রতি মাসে প্রায় 6 থেকে 7 হাজার টাকা খরচ হয় । কোনওরকমে দিনপাত করা বুধনবাবু প্রতি মাসে এই খরচ সামলে উঠতে পারছেন না । এই অবস্থায় বুধনবাবু জয়পুরের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারি (BDO) বিট্টু ভৌমিকের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন । যার জেরে মানবিক প্রকল্পে তাঁকে প্রতি মাসে 1000 টাকা ভাতা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক । তবে ওই টাকাতে ঋষির চিকিৎসা এবং ওষুধপত্রের জোগান দেওয়া কোনওমতেই সম্ভব নয় । এব্যাপারে বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন, "এই বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি । BDO-কেও জানানো হয়েছে । আমরা দেখছি, বাচ্চাটির জন্য আর কী কী সাহায্য করা যায় ।" পাশাপাশি রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "আমরা এই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই ।"

একদিকে ছেলের ওষুধপত্র ও খাবার, অন্যদিকে নিজেদের দু'বেলা দু'মুঠো ভাত । এই দুইয়ের মাঝে দিশেহারা জয়পুরের লোহার পরিবার । আর ঋষি? ঋষি এখন শয্যাশায়ী । নিশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য নাকে লাগানো পাইপই ভরসা । শুধুমাত্র তরল খেয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিছানাতে শুয়ে দিন কাটাচ্ছে সে ।

বাঁকুড়া, 31 অগাস্ট : নয় মাস আগেও জীবনটা ছিল অন্যরকম । আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই হেসে-খেলে দিন কাটত পাঁচ বছরের ঋষি লোহারের । ICDS-তে গিয়ে পড়াশোনাও করত । কিন্তু 9 মাস আগে হঠাৎই একদিন ভুল বকতে শুরু করে ঋষি । ভয় পেয়ে যান বাবা-মা । তড়িঘড়ি স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁরা । সুফল না মেলায় তাকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন । কিন্তু তাতেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি । এরপর বাঁকুড়া সম্মেলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে SSKM হাসপাতালে চিকিৎসা চলে তার । পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, ঋষির দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে । কোনও চিকিৎসা নেই ।

বাঁকুড়ার জয়পুরের বাসিন্দা বুধন লোহার ও রবি লোহারের দ্বিতীয় সন্তান ঋষি । SSKM হাসপাতাল থেকে ফেরার পর পেশায় রাজমিস্ত্রি বুধন লোহার শেষসম্বল হারিয়ে একপ্রকার ধার দেনা করেই ঋষিকে পুদুচেরির জিপমার হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখানে তার বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলে । জিপমার হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ঋষির SSPE (Subacute sclerosing panencephalitis) নামে এক দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে । ভারতে এখনও যার চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু হয়নি ।

কী এই SSPE রোগ? জিপমার হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ঋষির মা রবি লোহার জানান, SSPE রোগে আক্রান্ত শিশুরা এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে । এই রোগে মস্তিষ্কের একটি অংশ বিকল হয়ে যায় । আর তা দিনে দিনে আরও অবনতির দিকে যেতে থাকে ।

এমতবস্থায় ঋষির ওষুধ ও খাবারের জোগান দিতে লোহার পরিবারের প্রতি মাসে প্রায় 6 থেকে 7 হাজার টাকা খরচ হয় । কোনওরকমে দিনপাত করা বুধনবাবু প্রতি মাসে এই খরচ সামলে উঠতে পারছেন না । এই অবস্থায় বুধনবাবু জয়পুরের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারি (BDO) বিট্টু ভৌমিকের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন । যার জেরে মানবিক প্রকল্পে তাঁকে প্রতি মাসে 1000 টাকা ভাতা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক । তবে ওই টাকাতে ঋষির চিকিৎসা এবং ওষুধপত্রের জোগান দেওয়া কোনওমতেই সম্ভব নয় । এব্যাপারে বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন, "এই বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি । BDO-কেও জানানো হয়েছে । আমরা দেখছি, বাচ্চাটির জন্য আর কী কী সাহায্য করা যায় ।" পাশাপাশি রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "আমরা এই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই ।"

একদিকে ছেলের ওষুধপত্র ও খাবার, অন্যদিকে নিজেদের দু'বেলা দু'মুঠো ভাত । এই দুইয়ের মাঝে দিশেহারা জয়পুরের লোহার পরিবার । আর ঋষি? ঋষি এখন শয্যাশায়ী । নিশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য নাকে লাগানো পাইপই ভরসা । শুধুমাত্র তরল খেয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিছানাতে শুয়ে দিন কাটাচ্ছে সে ।

Intro:5 বছরের শিশুর দুরারোগ্য ব্যাধি, বিভিন্ন হাসপাতালে দেখিয়েও মিললো না চিকিৎসা। ঋষির খাবার ও ওষুধ যোগান দিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত তার বাবা-মা।


Body:বাঁকুড়ার জয়পুরের বাসিন্দা বুধন লোহার পেশায় রাজমিস্ত্রি, স্ত্রী রবি লোহার গৃহবধূ। তাদের দ্বিতীয় সন্তান রিষী। 9 মাস আগে একদিন হঠাৎ ঋষি ভুল বকতে শুরু করে। বাবা-মা ভয় পেয়ে যান। প্রথমে স্থানীয় ডাক্তার কে দেখান। কোন ফল না মেলায় তাকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। দিন ছয়েক সেখানে তার চিকিৎসা চলে তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। এরপর ঋষিকে পাঠানো হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে বেশ কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। এসএসকেএম বেশ কিছুদিন তাকে রাখা হয় এবং তার চিকিৎসা করা হয়। এরপর সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয় তার দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে যে রোগের কোন সমাধান নেই।
এরপর ধারদেনা করে ঋষির বাবা-মা তাকে পুদুচেরির জিপ মার হাস্পাতালে নিয়ে যায়। বেশ কিছুদিন সেখানেও তার চিকিৎসা চলে। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের সন্তানের এস এস পি ই বলে এক দুরারোগ্য ব্যাধি হয়েছে যা আমাদের দেশে কোনো চিকিৎসা নেই।
অথচ এই ঋষি আইসিডিএস সেন্টারে গিয়ে পড়াশোনা করতো আরো পাঁচটা স্বাভাবিক বাচ্চার মতোই। হঠাৎই তার জীবন একেবারে বদলে যায়। এখন ঋষি শয্যাগত। ডাকে তার পাইপ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য। খাবারও সে খেতে পারেনা। শুধুমাত্র কিছু তরল খাবার খেয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে শুধু প্রাণ টুকু ধারণ করে রয়েছে এই ঋষি।
তার ওষুধ এবং খাবার জোগান দিতে প্রতি মাসে 6 থেকে 7 হাজার টাকা খরচ হয় তার বাবা-মায়ের। পেশায় রাজমিস্ত্রি বুধন লোহার আর পারছেননা ছেলের চিকিৎসা এবং খাবারের যোগান দিতে।
এই অবস্থায় জয়পুর থানার খোশবাঁধ, মাঝি পাড়ার বাসিন্দা বুধন লোহার জয়পুরের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। মানবিক প্রকল্প তাকে প্রতি মাসে 1000 টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক। তবে ওই টাকাতে তার চিকিৎসা এবং তার ওষুধ পত্র কোনমতেই যোগান দেওয়া সম্ভব নয়।
কি এই এসএসপি ই রোগ? ঋষির মা রবি লোহার যা দাবি করছেন, যে তাদেরকে পুদুচেরি হাসপাতাল থেকে এসএসপি আক্রান্ত বলে জানানো হয়েছে। যদি তাই হয় তাহলে এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা এক থেকে তিন বছর বাঁচতে পারে। এই রোগ হাম হওয়ার পর তার শরীরের নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কের একটা অংশ বিকল করে দেয়। যা দিনে দিনে আরো অবনতির দিকে যেতে থাকে।
একদিকে ছেলে ওষুধপত্র ও খাবার, অন্যদিকে নিজেদের দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড়ের জীবনসংগ্রাম, সব মিলিয়ে দিশেহারা জয়পুরের এই লোহার পরিবার।


Conclusion:বাইট: বুধন লোহার, ঋষির বাবা
বাইট: রবি লোহার, ঋষির মা
বাইট: মানস মন্ডল, মহকুমা শাসক বিষ্ণুপুর
বাইট: শ্যামল সাঁতরা, রাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকার
বাইট: স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.