আলিপুরদুয়ার, 23 জুন : দলীয় কাউন্সিলররা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের লাখ লাখ টাকা লুট করেছেন । অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি প্রশান্ত নারায়ণ মজুমদার। আলিপুরদুয়ার পৌরসভার 20টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূলের দখলে থাকা 16টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রশান্তবাবুর । দলের রাজ্য সহ-সভাপতির অভিযোগের পর জেলা তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ।
উপভোক্তাদের অভিযোগ,পছন্দের ঠিকাদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা লুট করেছেন কাউন্সিলররা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় নতুন ঘর নির্মাণের জন্য ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট খুলতে হয় উপভোক্তাদের । উপভোক্তাদের সেই অ্যাকাউন্টের ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই করিয়ে কাউন্সিলর টাকা লুট করেছেন বলে অভিযোগ । কাউন্সিলররা নিজেদের ঠিকাদারদের দিয়ে ঘর তৈরি করাতে উপভোক্তাদের বাধ্য করেছেন । ঘর তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের বালি, ইট ।
প্রশান্তবাবুর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের ঘর প্রতি 3 লাখ 68 হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয় । অথচ সেই কাজ মাত্র 1 লাখ 70 হাজার থেকে 2 লাখ টাকার মধ্যে শেষ করে ফেলছে কাউন্সিলারদের ঠিকাদাররা । বাকি টাকা ভাগ হচ্ছে । গোটা পৌরসভা জুড়ে সিন্ডিকেট আর কাটমানি চক্র এই কাজ করছে । যদিও আলিপুরদুয়ার পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান আশিস দত্ত বলেন, "কিছু ক্ষেত্রে এধরনের ঘটনা ঘটলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপভোক্তারা নিজেরা ঘর বানাতে চান না। সেক্ষেত্রে কাউন্সিলর সাহায্য করে থাকেন । তবে অগ্রিম ব্ল্যাঙ্ক চেক নেওয়ার কোনও অভিযোগ পাইনি।"
আলিপুরদুয়ার পৌরসভার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে বেনিফিশিয়ারি লেট কন্ট্রাকশন । স্কিমে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, উপভোক্তা নিজেই তাঁর ঘর নির্মাণ করবেন । পৌরসভা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না । তবে উপভোক্তা তাঁর ঘর তৈরি করছেন কি না সেটা নজরদারি করবে পৌরসভার একটি মনিটরিং কমিটি ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণের জন্য উপভোক্তাকে কেন্দ্রীয় সরকার দেয় 1 লাখ 50 হাজার টাকা । রাজ্যে সরকার দেয় 1 লাখ 93 হাজার টাকা । উপভোক্তা নিজে দেবে 25 হাজার টাকা । মোট 3,68,000 হাজার টাকা ।
আরও পড়ুন : দলে যোগ 4 সদস্যের, আলিপুরদুয়ারে একটি পঞ্চায়েত দখলের পথে BJP
আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নোডাল অফিসার জয়দীপ সেনগুপ্ত জানান, কাউন্সিলররা যদি উপভোক্তাদের প্রতারণা করে থাকেন, তবে উপভোক্তা নিজে এসে অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি । পৌরসভার প্রশাসনের সামনে এই অভিযোগ এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব ।
অন্যদিকে, 12 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা আলিপুরদুয়ার শহর তৃণমূলের সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে কাউন্সিলররা জড়িত নয় । বেশিরভাগ উপভোক্তাই নিজেরাই ঘর তৈরি করছেন । বিরোধী বা দলীয়স্তরের যাঁরা অভিযোগ করছেন, তারাও দলটা করছে কি না আমার সন্দেহ আছে । যাঁরা দল করবেন, তাঁরা দলের পক্ষেই কথা বলবেন । "