কলকাতা, ৬ এপ্রিল : বয়স তাঁর কাছে সংখ্যা মাত্র। তাই মধ্য তিরিশেও মেরি কম এখনও ক্ষুধার্ত। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন থেকে এশিয়ান গেমস, এমনকি অলিম্পিক পদক রয়েছে ট্রফি ক্যাবিনেটে। তবুও অবসর নেওয়ার ভাবনা নেই মনে। সক্রিয় রাজনীতিতে নামার পরিকল্পনা নেই। স্বপ্নপূরণ করতে ম্যাগনিফিসেন্ট মেরি আজও একই রকম আগ্রাসী।
ভারতীয় মেয়েরা যে বয়সে সংসারে থিতু হয়ে আরামের জীবন কাটায়, সেখানে সময়কে চ্যালেঞ্জ করে মেরি কম অক্লান্ত। ছয়টি পদক মণিপুরের সুপার মমের ঝুলিতে। তিন তিনটি সন্তান নিয়েও মেরি কম নতুন কীর্তির নেশায় মজে রয়েছেন। সময় বদলায় মেরির সাফল্য লাভের খিদে মেটে না। ভিন্টেজ মেরির মধ্যে ক্রিকেটের মহেন্দ্র সিং ধোনির ছায়া দেখছেন অনেকে। তুলনা উঠতেই মণিপুরি ললনার আগ্রাসী মেজাজটা বেরিয়ে এল। বলেন, "এখনকার মেয়েরা অল্পতেই সন্তুষ্ট। জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হলেই লক্ষ্যপূরণের সন্তুষ্টি চলে আসে। ভুলে যায় ছেলেদের খেলার সময়কালের পরিধি মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি। তাই স্বল্প পরিসরে মেয়েদের চ্যালেঞ্জ অনেক কঠিন। কঠোর অনুশীলনে লক্ষ্য পূরণের দৌড়টা শক্ত হাতে ধরতে হয়।" তাই মেরি কম প্রাপ্তির ঝুলি পূর্ণ হলেও নতুন স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলেছেন।
অলিম্পিক সোনা সুপার মমের এখনও অধরা। সেই স্বপ্নপূরণের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। নিজের পছন্দের বিভাগ অলিম্পিকে নেই। তাই অনভ্যস্ত ৫১ কেজি বিভাগে মানিয়ে নিয়ে সোনার পেছনে দৌড় শুরু। মাঝে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব রক্ষার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যা রাশিয়ার মাটিতে হবে। বক্সিং নিয়ে ডুবে থাকার মাঝে রাজ্যসভার সাংসদের দায়িত্ব পালন। তবে মেরি কম প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান। খেলাধুলোর পৃষ্ঠপোষকতা সরকারিস্তর থেকে চান তিনি। তাঁর জীবন নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে। বাণিজ্যিক দূত হওয়ার দৌড়ে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন। মেরি কম বলছেন, "পিছিয়ে থাকার মানসিকতা সরিয়ে মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। বাইপাসের ধারে তারকা হোটেলে এক ইস্পাত প্রস্তুতকারী কম্পানির অনুষ্ঠানে এসে আজ ম্যাগনিফিসেন্ট মেরি ভারতীয় মেয়েদের জন্যে স্বপ্নের জাল বুনে গেলেন।