কলকাতা, 11 অক্টোবর: বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের আইএসএল স্বপ্ন দেখার কথা বললেন স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন (Stephen Constantine) ৷ বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আইএসএল-এর দ্বিতীয় ম্যাচে লাল-হলুদ ব্রিগেডের প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া (East Bengal vs FC Goa Preview) ৷ আইএসএল-এ (ISL 2022-23) অংশগ্রহণের তৃতীয় বছরে ঘরের মাঠে নিজেদের সমর্থকদের সামনে খেলতে নামবে ইভান গঞ্জালেসরা ৷ তবে, প্রথম ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে 3-1 গোলে পরাজয় লাল-হলুদ জনতার আবেগকে সামান্য হলেও ধাক্কা দিয়েছে ৷ তাই বুধবার সন্ধ্যায় প্রিয় দলের খেলা দেখতে কতজন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারিতে থাকবেন তা বোঝা যাচ্ছে না ৷ যেখানে এটিকে মোহনবাগান বনাম চেন্নাইয়িন এফসি ম্যাচে মোট দর্শক উপস্থিত ছিল 23 হাজার ৷
গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে নিজেদের মেলে ধরার রোমাঞ্চ উপভোগ করতে আগ্রহী ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ইভান গঞ্জালেস ৷ কোচের পাশে বসে জানালেন, গ্যালারিতে দর্শকদের সমর্থন ভালো খেলতে উদ্বুদ্ধ করে ৷ তাই প্রিয় সমর্থকদের খুশি মনে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা তাঁরা করবেন এবং সেই চেষ্টায় যে ত্রুটি থাকবে না সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন গঞ্জালেস ৷
আইএসএল এর বল গড়ানোর আগেই ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন বলেছিলেন, দল নক আউটে পৌঁছলে সেটা হবে মিরাক্যাল ৷ কেরালার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হারের পর, তার সেই কথাটা যেন আরও বেশি করে লাল-হলুদের প্রস্তুতির অভাবের ছবিটা সামনে নিয়ে এসেছে ৷ অনেকেই বলছেন, কোচের এই ভবিষ্যৎবাণী আদতে সাজঘরের আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা ৷ তবে, স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিলেন ৷
তিনি বলেন, “দেখুন মাত্র 4 সপ্তাহের প্রস্তুতিতে আমরা আইএসএল খেলতে নেমেছি ৷ অন্য দলগুলি যখন তিনমাস ধরে তৈরি হয়েছে, তখন পুরো দলটা আমরা প্রথম থেকে হাতে পাইনি ৷ এই অবস্থায় আমাদের বাস্তবটা মানতে হবে ৷ প্রথম ছয় না প্রথম চারে থাকব, তা নিয়ে বলার বিলাসিতা আমার নেই ৷ আমরা একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চাই ৷ বুধবার তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়াই লক্ষ্য থাকবে ৷ দলে এখনও অনেক উন্নতির প্রয়োজন এবং সেটা প্রতিটি বিভাগে দরকার ৷ তাই আমরা প্রতিটি ম্যাচেই উন্নতির চেষ্টা করব ৷’’
আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচেই ডুবল পালতোলা নৌকো, প্রত্যাবর্তনের আইএসএলে মুখ পুড়ল যুবভারতীরও
প্রথম ম্যাচে দল গঠন থেকে পারফরম্যান্স সবই সমালোচকদের আতস কাচে ৷ সুমিত পাসির ভূমিকা, অনিকেত যাদবের না-থাকা এবং কিরিয়াকুর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ কনস্ট্যান্টাইন বলছেন, “সুমিত পাসি ফরওয়ার্ড হিসেবে খেলেননি ৷ অনিকেত যাদবের চোট বা অন্য কোনও সমস্যা নেই ৷ আমার দলে কিরিয়াকু যে জায়গায় খেলেছে সেই জায়গার দু’জন ফুটবলারই চোটের কবলে ৷ কিরিয়াকু রক্ষণের প্রতিটি জায়গায় খেলতে পারেন ৷ তাই তাঁকে ব্যবহার করা হয়েছে ৷’’
একইভাবে ইস্টবেঙ্গলের গোল করার দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ এই ব্যাপারেও ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন ৷ তিনি বলেন, “আপনি যদি প্র্যাকটিস ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখেন, তাহলে দেখবেন এগারোটি গোল আমরা করেছি ৷ একটি গোল হজম করেনি আমার রক্ষণ ৷ তাই গোল করার দক্ষতায় টান, এ কথা মানতে পারছি না ৷’’
আরও পড়ুন: 'রিমুভ এটিকে' নিয়ে মোহনবাগানের অন্দরে আমরা-ওরা
কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে সত্তর মিনিট ইস্টবেঙ্গল ছক অনুযায়ী খেললেও, তার পর সবকিছু ঘেঁটে যায় তাদের ৷ ওই অবস্থায় অন্য কোনও দল আরও ভেঙে পড়ত বলে মনে করেন স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন ৷ আর এখানেও চার সপ্তাহের প্রস্তুতিতে কোনও বড় লিগে শক্তিশালী হয়ে দল নামানো যায় না বলে দাবি করেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ ৷ একাধিক ফুটবলারের তাঁর কোচিংয়ে প্রথমবার খেলার কথাও তুলে ধরেছেন ৷ এই অবস্থায় বেশি সংখ্যক ম্যাচ খেলাতেই ত্রুটি সামলে, দল গড়ে ওঠার উত্তর লুকিয়ে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷
কোচের কথার সমর্থনে গলা মিলিয়েছেন অধিনায়কও ৷ দু’বছর এফসি গোয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে, চলতি মরশুমে লাল-হলুদে সই করেছেন ইভান গঞ্জালেস ৷ মাঠের খারাপ অবস্থা, ফুটবলারদের এক সঙ্গে না-পাওয়া, এমনকি গোলরক্ষক কোচ পর্যন্ত না-থাকার কথাও এসেছে তাঁর মুখে ৷ তবে, কোনও কিছুকেই অজুহাত হিসেবে খাড়া করতে নারাজ ইভান গঞ্জালেস ৷ বরং সমস্যা থাকলে, তার সমাধানের কথা বলেন তিনি ৷
প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া প্রতিপক্ষ হিসেবে কঠিন, বলছে লাল হলুদ থিঙ্কট্যাঙ্ক ৷ নতুন কোচ যোগ দিলেও, এফসি গোয়ার কোচের ফুটবল দর্শনে বদল হচ্ছে না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ইভান এবং স্টিফেন ৷