কলকাতা, 26 অগস্ট: রাজস্থান ইউনাইটেড ম্যাচের পর ফুটবলারদের পারফর্ম্যান্সে সন্তুষ্ট কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন ৷ তবে, ডার্বির আবেগ কতটা, সে সম্পর্কে তিনিও ওয়াকিবহাল বলে জানিয়েছেন কনস্ট্যানটাইন ৷ তবে, ডুরান্ড কাপে পরের পর্বে যাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের (Durand Cup Derby) ৷ বাকি থাকা দু’টি ম্যাচ জিতলেও পরের পর্বে যাওয়া সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দুই শিবিরেই (East Bengal vs ATK Mohun Bagan) ৷
বৃহস্পতিবার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে রাজস্থান ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করার পর ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেন, ‘‘ডার্বির আবেগ আমি জানি ৷ আমার এই দলটা দু'সপ্তাহ আগেও সম্পূর্ণ ছিল না । 12 জনও হাতে ছিল না । মাত্র কয়েকদিনের অনুশীলনের পরে যে পারফর্ম্যান্স দল করেছে, তাতে আমি খুশি ৷’’ হাতে মাত্র একদিন ৷ এই পরিস্থিতিতে খাতায় কলমে শক্তিশালী হলেও, মোহনবাগান শিবিরও নিশ্চিত নয় ডার্বি জয় নিয়ে ৷ কারণ, মরশুমের প্রথম দু’টি ম্যাচ খেলে ফেললেও, একটিতে হার এবং আরেকটি ড্র করেছে গঙ্গাপাড়ের ক্লাব ৷
- কোথায় সমস্যা হচ্ছে এটিকে মোহনবাগানের ?
এটিকে মোহনবাগানের মাঝমাঠ দারুণ খেলছে ৷ হুগো বুমোস, জনি কাউকোরা খুব পরিশ্রম করছেন ৷ মাঝেমধ্যে কার্ল ম্যাকহিউও দারুণ কিছু বল বাড়াচ্ছেন ৷ তবে, বাগান কোচ মনে করছেন, দুই উইং বিশেষত ডানদিক থেকে আশিস রাইকে আরও সক্রিয় হতে হবে ৷ সমস্যা রয়েছে স্ট্রাইকারদের ক্ষেত্রেও ৷ মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসোরা বল গোলে রাখতে পারছেন না ৷ গত মরশুমের ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করা কিয়ান নাসিরিও ডুরান্ডের ম্যাচে সুযোগ মিস করেছেন ৷
ডিফেন্স নিয়েও যথেষ্ট চিন্তা থাকছে এটিকে মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টের ৷ কারণ, প্রথম ম্যাচে রাজস্থান ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে 3 গোল খাওয়ার পর, দ্বিতীয় ম্যাচে 1 গোলে এগিয়ে থেকেও ড্র করতে হয়েছে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ৷ 2 ম্যাচে 4 গোল খেয়েছে মোহনবাগান ৷ পাশাপাশি, ডিফেন্সে এখনও ফ্লোরেন্টিন পোগবা এবং প্রীতম কোটাল জুটির বোঝাপড়া সেভাবে তৈরি হয়নি ৷ এটাই চিন্তায় রাখছে জুয়ান ফেরান্দোকে ৷
- রণকৌশল কী হতে পারে ?
ডার্বিতে প্রীতমের সঙ্গে কার্ল ম্যাকহিউকে স্টপার হিসেবে ব্যবহার করতেই পারেন জুয়ান ফেরান্দো ৷ সে ক্ষেত্রে স্ট্রাইকারে খেলানো হতে পারে হুগো বুমোসকে ৷ দীপক টাংরিকে ব্লকার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ মাঝমাঠে প্রচুর পাস খেলছে ইমামি ইস্টবেঙ্গল ৷ সেটাকে যদি আটকাতে পারেন দীপক, তবে ডিফেন্সের উপর চাপটা অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছেন ফেরান্দো ৷ আবার দীপকের জায়গায় প্রণয়কেও খেলাতে পারেন তিনি ৷ তাতে মিডফিল্ডে ফুটবলার যেমন বাড়ানো যাবে তেমনি সুমিত পাসি, অ্যালেক্স লিমাদের আটকানো কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করছে মোহনবাগান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ৷
আরও পড়ুন: হার বাঁচলেও ডুরান্ডে টিকে থাকাই কঠিন ইস্টবেঙ্গলের
- স্ট্রাইকার সমস্যা ইমামি ইস্টবেঙ্গলে
গোলের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, কিন্তু গোল করতে পারছেন না ইমামি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা ৷ ভিপি সুহের, সুমিত পাসি, তুহিন দাসরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু ফল পাওয়া যাচ্ছে না ৷ দুই ম্যাচে একটাও গোল করতে পারেনি ইমামি ইস্টবেঙ্গল ৷ অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়েও একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছেন ফুটবলাররা ৷ মাঝমাঠেও কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ তাড়াহুড়ো করে পাস করতে গিয়ে ভুল করে ফেলছেন ফুটবলাররা এমনটাই মনে করছেন স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন ৷ তবে, ভাল খেলছেন রাইট উইঙ্গার অনিকেত যাদব ও অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় ৷ যা ইস্টবেঙ্গলের জন্য ভালো খবর বলে মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট ৷
- কী হতে পারে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের স্ট্র্যাটেজি ?
ডার্বিতে কিছুটা হলেও পিছিয়ে থেকে শুরু করছে স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের দল ৷ তাই গোল না খাওয়াই হবে প্রাথমিক লক্ষ্য ৷ এমনিতে, নিজের ডিফেন্স শক্ত করেই আক্রমণে যাওয়া পছন্দ করেন ব্রিটিশ কোচ ৷ আর চেষ্টাও সেটাই করবেন তিনি ৷ পাশাপাশি, যদি দুই জনের মধ্যে কোনও বিদেশি স্ট্রাইকারকে ডার্বিতে নামিয়ে দেওয়া যায় তবে, এটিকে মোহনবাগানের ডিফেন্সে চাপ বাড়ানো যেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি ৷ প্রসঙ্গত, দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাক হলেই কেঁপে যাচ্ছে সবুজ-মেরুন ডিফেন্স ৷ এই দৃশ্য গত দুই ম্যাচে দেখা গিয়েছে ৷ আর সেটা স্টিফেনের নজর এড়ায়নি ৷ তবে, লেফ্ট উইংকে আরও সচল করতে চাইছেন তিনি ৷ ডানদিক থেকে আক্রমণ হলেও বাঁ দিক থেকে সেভাবে সুযোগ তৈরি হচ্ছে না ৷