দোহা,10 ডিসেম্বর: নেইমারের জ্বলে ওঠার দিনে বিদায় ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে পরাজিত পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ফল 5-3। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচে গোল হয়নি । অতিরিক্ত সময়ে খেলা শেষ হয় 1-1 ফলাফলে। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে ফল 4-2 (Croatia beats Brazil in the tiebreaker) । দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে মোট চারটে সাক্ষাতের তিনটিতে ক্রোয়েশিয়া পরাজিত। কিন্তু বিশ্বকাপে দুই দলের প্রথম দ্বৈরথে এগিয়ে গেল ক্রোটরা। অতিরিক্ত সময়ে নেইমারের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। এই সময় মনে হয়েছিল সেলেকাওদের শেষ চারে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। জাত হিসেবে স্লোভাকরা যুদ্ধবাজ। পিছিয়ে পড়ে তাই হাল না ছেড়ে প্রতিআক্রমণে গোল শোধ করেন পেটকোভিচ। ম্যাচের বয়স তখন 116 মিনিট। টাইব্রেকারে খেলা গড়ালে গোল বাঁচিয়ে নায়ক ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ।
নির্ধারিত 90 মিনিটে ক্রোট রক্ষণের জঙ্গলে স্তব্ধ সুন্দর ফুটবল। পাসের মায়াজাল থামাতে রক্ষন জমাট করা ছাড়া উপায় ছিল না গত বিশ্বকাপের রানার্স দলের। নেইমার এবং ভিনিসিয়াস জুনিয়রের জন্য ডাবল জোনাল মার্কিংয়ে ব্রাজিলের ছন্দ নষ্ট করার ছক সাজিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। প্রতিপক্ষের বাকিদের জন্য ছিল জোনাল মার্কিং। প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়া ব্রাজিলকে জায়গা দিয়েছিল। সেই ভুল ক্রোটরা করেনি। পাকুয়েতা, রিচার্লসনদের ঘুরতেই দেয়নি তারা। ফলে গত চারটে ম্যাচে ব্রাজিল যে পাসের মায়জাল ছড়িয়েছিল তা এই ম্যাচে হয়নি। প্রথমার্ধে সেভাবে গোলের মুখ খুলতে পারেনি ব্রাজিল। প্রতিআক্রমণে ক্রোয়েশিয়াও অ্যালিসনকে সমস্যায় ফেলতে পারেনি।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিল বিদায় নিতেই কোচের পদে ইস্তফা তিতের
বিরতির পরে চাপ বাড়ায় ব্রাজিল। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও নেইমার রিচার্লসন পাকুয়েতাদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন ক্রোট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। সময় যত গড়িয়েছে তত দুর্ভেদ্য হয়েছেন তিনি। যা টাই ভাঙার সময় অব্যাহত। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে ম্যাচের 105 মিনিটে নেইমারের অসাধারC ব্যক্তিগত মুন্সিয়ানায় হার মানেন লিভাকোভিচ। ক্রোট রক্ষণ ভাঙল। এই গোলের সঙ্গেই পেলেকে স্পর্শ করলেন পিএসজি তারকা নেইমার। এরপর বাকি 15 মিনিট অনাবশ্যক রক্ষনাত্মক হতে গিয়েই ডুবল ব্রাজিল। 116 মিনিটে প্রতি আক্রমন থেকে পেটকোভিচ গোল করেন। তাঁর শট মারকুইনসের পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। অ্যালিসন বেকার মরিয়া চেষ্টা করেও তা ঠেকাতে ব্যর্থ। 120 মিনিটে এটাই ক্রোটদের একমাত্র গোল লক্ষ্য করে গোল এবং লক্ষ্যভেদ। সেলেকাওদের বিদায়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নেইমার। আরও একবার সুন্দর ফু্টবলে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরা রয়ে গেল।