কারশি (উজবেকিস্তান), 22 সেপ্টেম্বর : ক্রুশায়েন নরশেভের ঝড়ে লন্ডভন্ড এটিকে মোহনবাগান। এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে উজবেকিস্তানের এফসি নাসাফের বিরুদ্ধে লজ্জার হার সবুজ-মেরুন ৷ ম্যাচের ফল 6-0 ৷ মনে হতে পারে কোনও টেনিস ম্যাচের স্কোরবোর্ড। দর্শকঠাসা স্টেডিয়ামে বড় জয় পেয়ে ফাইনালে উজবেকিস্তানের ক্লাবটি ৷ ফাইনালে এফসি নাসাফের প্রতিপক্ষ হংকংয়ের লি ম্যান।
নরশেভের হ্যাটট্রিক ছাড়া নাসাফের বাকি তিন গোল প্রীতম কোটালের আত্মঘাতী, ব্রজরেভ এবং নারজুলেভের। তিন মিনিটে উজবেকিস্তানের ক্লাব দলটির বাঁ-দিক থেকে নেওয়া কর্নার বিপদমুক্ত করতে গিয়ে কার্ল ম্যাকহিউজের হেড প্রীতম কোটালের পিঠে লেগে গোলে ঢুকে যায়। দ্রুত গোল হজম সবুজ-মেরুন পালকে দিগভ্রান্ত করে দেয়। যা সময় যত গড়িয়েছে ততই ছারখার হয়েছে ৷ 17 মিনিটে ক্রূশায়েন নরশেভের 'গোলযাত্রা' শুরু ৷
17, 24, 31 মিনিটে হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করে ফেলেন তিনি ৷ 41 মিনিটে এফসি নাসাফ পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ না-হলে বিরতির আগেই হাফ-ডজন গোল হজম করতে হত এটিকে মোহনবাগানকে ৷ পেনাল্টি থেকে গোল করতে না-পারার আক্ষেপ ব্রজরভ মেটান 45 মিনিটে দলের পাঁচ নম্বর গোলটি করে। আন্তেনিও লোপেজ হাবাস ভারসাম্যের ফুটবলে বিশ্বাস করেন। অথচ এএফসি কাপের শেষ চারের লড়াইয়ে তিনি দল সাজালেন 4-3-3 ছকে। মাঝমাঠে জনি কাউকো চূড়ান্ত ব্যর্থ। ইউরো কাপ খেলে সবুজ-মেরুন জার্সি পড়েছেন তিনি। কিন্তু অভিষেক ম্যাচে নির্ভরতা দিতে ব্যর্থ।
শেষপর্যন্ত কিয়ান নাসিরিকে নামিয়ে কাউকোকে তুলে নেন হাবাস। শেখ সাহিলকে মাঝমাঠে ডিফেন্সিভ ব্লকার হিসেবে রাখা হয়েছিল। তিনিও এই জায়গায় ব্যর্থ। প্রতিপক্ষের আক্রমণের উৎস তিনি কাটতে পারেননি। ডেভিড উইলিয়ামস, মনবীর সিং, রয় কৃষ্ণরা বল জোগানের অভাবে এবং নাসাফ ডিফেন্ডার দের কড়া পাহারায় নড়তে পারেননি। পাশাপাশি এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণভাগে আশুতোষ মেহতা ছ'টি গোলের তিনটিতে দায়ী। নিজের জায়গায় ছিলেন না। শুধু তাই নয়, তাঁকে শারীরিকভাবে এই পর্যায়ের ম্যাচের যোগ্য মনে হয়নি। কলকাতার দলটি শারীরিক সক্ষমতায় অনেক পিছিয়ে ছিল।
আরও পড়ুন : ব্যাটসম্যান নয়, এবার থেকে ব্যাটার বলে পরিচিত হবেন বিরাটরা
এফসি নাসাফ এই ম্যাচে একজন বিদেশি ফুটবলারকে নিয়ে নেমেছিল। কিন্তু দলটির খেলায় রক্ষণ এবং আক্রমণের অসাধারণ ভারসাম্য। ফলে তাদের গোলরক্ষক কার্যত সময় কাটান। বিরতির পরে লিস্টন কোলাসো, সোসাইরাজদের মাঠ নামিয়েছিলেন হাবাস। কিন্তু হারিয়ে ফেলা ছন্দ খুজে পায়নি এটিকে মোহনবাগান। প্রথমার্ধে পাঁচ গোলের পর ছয় নম্বর গোল নাসাফের একাত্তর মিনিটে। গোলদাতা নারজুলেভের। গোলসংখ্যা আরও বাড়তে পারত যদি উজবেকিস্তানের ক্লাব দলের ফুটবলাররা সহজ সুযোগ নষ্ট না করতেন। এর আগে এএফসি কাপের ম্যাচে 9 গোল হজম করেছিল ডেম্পো স্পোর্টস। সেদিক থেকে ভারতীয় ফুটবলে লজ্জাজনক হারের তালিকায় এটিকে মোহনবাগানের নাম প্রথম তিনে থাকবে।