কলকাতা, 3 ডিসেম্বর : কিংবদন্তি কোচ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোনালি সময়ের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের ফুটবলপ্রেমীরা পরিচিত নন । তারকা কোচ সুভাষ ভৌমিকের ক্যারিশমা প্রায় অস্তাচলে । পরবর্তী সময়ে লাল-হলুদ ডাগ আউটে বসে ইস্টবেঙ্গল জনতার হৃদয় জিতেছেন ট্রেভর জেমস মরগ্যান এবং বর্তমান কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেনদেজ় গার্সিয়া । দলে ভালো কুশলী ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভরসার নাম এখন "আলে স্যার"।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল,"বর্তমান দলে তো আপনি তারকা । ইস্টবেঙ্গল আই লিগ জিতবে কি না তার উত্তর সবাই আপনার কাছে জানতে চায় । এই প্রত্যাশা কি বাড়তি চাপ?" প্রশ্ন শুনে লাল-হলুদ কোচের মুখে তৃপ্তির হাসি পলকের জন্যে ফুটে উঠেই মিলিয়ে যায় । গম্ভীর্যের আড়ালে নিজেকে ফের ঢুকিয়ে নিয়ে লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচ বলেন, "সমর্থকদের জন্যে আমি লিগটা জিততে চাই ।"
গত মরশুমে আই লিগের আগে দায়িত্ব নিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে প্রায় চ্যাম্পিয়ন করে ফেলেছিলেন । এবার মরশুমের শুরু থেকে দল গড়েছেন নিজের হাতে । আই লিগ পাখির চোখ । তাই ডুরান্ড কাপ ও কলকাতা লিগকে প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট বলতে দ্বিধা করেননি আলেয়ান্দ্রো । তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি । এবার সেই লক্ষপূরণের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে ।
আই লিগের প্রস্তুতির জন্যে পছন্দসই পরিকাঠামো মেলেনি । বিদেশে প্রি-সিজন করার বদলে দেশেই সারতে হয়েছে । বিষয়টি পছন্দ না হলেও মানিয়ে নিয়েছেন । লক্ষ্যপূরণে পরিশ্রমই শেষ কথা তা প্রথমেই বলেছিলেন । একমাসের কড়া অনুশীলন ও গোটা পাঁচেক প্রস্তুতি ম্যাচের পরে আলেয়ান্দ্রো বলছেন তার দল তৈরি । তবে ঘণ্টা দুয়েকের বাস যাত্রা করে মাঠে পৌঁছানো আলেয়ান্দ্রোর না পসন্দ ।
দলের এক নম্বর বিদেশি ডিফেন্ডার বোরহা গোমেজ চোট সারিয়ে সবে মাঠে নেমেছেন । ম্যাচ ফিট হতে আরও দুসপ্তাহ দরকার । অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার লালরিনডিকা রালতেও চোট সারিয়ে ম্যাচ ফিট হওয়ার অপেক্ষায় । দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার "না পাওয়ার তালিকায়" থাকলেও আলে স্যার অকুতোভয় ।
ঘরের মাঠে আই লিগের প্রথম ম্যাচ রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে খেলতে হবে । গত মরশুম ঘরের মাঠে ড্র করলেও কাশ্মীরের মাটিতে জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল । এবার ডেভিড রবার্টসনের বিরুদ্ধে হিসাবটা উন্নত করতে চান লাল-হলুদ কোচ । মার্তি ক্রিসপি, আসির আখতার কিংবা মেহতাব সিং দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার । সাইডব্যাক হিসেবে সামাদ আলি মল্লিক ও অভিষেক আম্বেকর সম্ভবত খেলবেন । মাঝমাঠে অধিনায়ক কাশিম আইদারার সঙ্গে নওরেম ডিফেন্সিভ ব্লকার হিসেবে থাকবেন । দুই উইংয়ের দায়িত্ব সামলাবেন জুয়ান মেরা গঞ্জালেজ় ও পিন্টু মাহাত । আক্রমণে মার্কোসের সঙ্গে থাকছেন হাইমে কোলাডো ।
প্রতিপক্ষের টাফ ফুটবল যেকোনও দলের কাছে চ্যালেঞ্জ। ইস্টবেঙ্গল সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে তৈরি । অন্তত আলেয়ান্দ্রো স্যার সেরকমই আশ্বাস দিচ্ছেন । তিনি ইস্টবেঙ্গল জনতার স্বপ্নের ফেরিওয়ালা । তাঁকে ঘিরে আশার বলয় তৈরি হয়েছে তা জানেন আলেয়ান্দ্রো । তাই কল্যাণী স্টেডিয়ামে মিশন কাশ্মীর শুধু একটা ম্যাচ নয় কাঙ্খিত স্বপ্নপূরণের প্রথম পরীক্ষা ।