কলকাতা, 2 অগাস্ট : ভারতীয় দলের কোচ নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের ক্রিকেট অ্যাডভাইজ়রি কমিটি গঠিত হয়েছে । কিন্তু, কোচ বাছাইয়ের আগেই কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্যের ছবি ধরা পড়ল ৷ কোচ নির্বাচনে বিরাট কোহলির মতামত বিবেচনা করা নিয়ে অংশুমান গায়কোয়াড়ের ভিন্ন সুর শোনা গেল কপিল দেবের গলায় ৷
কে হবেন পরবর্তী ভারতীয় কোচ ? সেই সিদ্ধান্তের জন্য 1983 সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়কের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়েছে ৷ প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ অংশুমান গায়কোয়াড় ও শান্তা রঙ্গোস্বামীও কমিটিতে রয়েছেন ৷ কোচ নির্বাচনে অধিনায়কের মতামত চাওয়া হবে কি না তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয় ৷ বিরাট অবশ্য বলেন, "ক্রিকেট অ্যাডভাইজ়রি কমিটি এখনও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি ৷ তারা যদি আমার মতামত চায়, তাহলে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব ৷ রবি ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের দুর্দান্ত পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে ৷ তিনি যদি (ভারতীয় কোচ হিসেবে) কাজ করে যান, তাহলে অবশ্যই খুশি হব ৷ কিন্তু, আমার সঙ্গে এবিষয়ে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি ৷ "
এনিয়ে অংশুমান গায়কোয়াড় বলেন, "অধিনায়ক কোনও কথা বলতেই পারেন ৷ তা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না ৷ আমরা একটি কমিটি ৷ " আর এখানেই অংশুমানের সঙ্গে কপিলের মতভেদ ফুটে উঠেছে ৷ গতকাল কলকাতায় ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন কপিল ৷ সেখানে জানান, বিরাটের মন্তব্যে কোনও অন্যায় দেখছেন না ৷ তাঁর কথায়, "এটা (কোচ হিসেবে শাস্ত্রী বিরাটের প্রথম পছন্দ) ওর (কোহলির) মত ৷ সকলের মতামতকেই সম্মান জানানো উচিত ৷ " একই কথা বলেছিলেন কমিটির অপর সদস্য শান্তা রঙ্গোস্বামীও ৷ ক্রিকেটমহলের বক্তব্য, অংশুমানের থেকে একেবারে ভিন্নসুরে কথা বললেন কপিল ৷ ফলে কোচ নির্বাচনে অধিনায়কের মত চাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেল ৷
এই সংক্রান্ত আরও খবর : কোচ নির্বাচনে বিরাটের মতামত জানানোর অধিকার আছে : সৌরভ
অন্যদিকে, কোচ নির্বাচনের মতো গুরুদায়িত্ব কি তাঁর উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে? এনিয়ে কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জবাব, "যদি আপনি আপনার কাজ সঠিকভাবে না করেন তাহলে তা চাপ হয়ে দাঁড়ায় ।" লাল-হলুদের অনুষ্ঠানে বিরাট ও রোহিত শর্মার সম্পর্কের অবনতির জল্পনা নিয়েও মুখ খোলেন কপিল ৷ বলেন, "নিজের কাজ করে যাওয়াই সেরা উপায় । সংবাদমাধ্যম গুজব ছড়িয়ে যেতেই থাকবে । একজন ক্রীড়াবিদের কাজ, জয় পাওয়ার লক্ষ্যে নিজেকে নিংড়ে দেওয়া । যখন মাঠে কোনও খেলোয়াড় খেলেন তখন গুজব থাকে না । সেই সময় একজন ক্রীড়াবিদ নিজের সঙ্গে কথা বলেন । মাঠের বাইরে আপনার মতের সঙ্গে অন্যের মত না মিলতে পারে । কিন্তু, খেলার সময় জয় ছাড়া অন্য ভাবনা থাকে না । মতের অমিলের অর্থ অন্যকে ছোটো করা নয় ।"
আজ থেকে 27 বছর আগে 1992 সালের 22 জুন লাল-হলুদের হয়ে খেলার জন্য চুক্তি সই করেছিলেন । তার ছ'দিন পর মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রদর্শনী ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন কপিল দেব । দেখেছিলেন, সমর্থকদের উন্মাদনা, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস । কপিল মনে করেন, সেই উন্মাদনাই কোনও ক্লাবকে শতবর্ষে নিয়ে যায় । একই সঙ্গে ঐতিহ্যের উপরও জোর দেন । উদাহরণ হিসেবে উইম্বলডনের কথা তুলে ধরেন । তাঁর মত, ঐতিহ্য একটা পরিচিতি গড়ে তোলে ৷ ফুটবল সম্রাট পেলের কথা বললেও দিয়াগো মারাদোনার খেলা পছন্দ করেন । ব্রাজ়িলের ফুটবল পছন্দের তালিকায় । মারাদোনার হ্যান্ড অব গডের কথাও এসেছে কপিল দেবের স্মৃতিচারণায় । তবে ক্রিকেটের তুলনায় ফুটবল যে এগিয়ে তা মানছেন ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ৷