ETV Bharat / sitara
একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক রামকমল ও প্রযোজক অরিত্র - Aritra Das
অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস মানেই এখন ভেসে আসে দুটো নাম - পরিচালক রামকমল মুখার্জি এবং প্রযোজক অরিত্র দাস। তিন বছরে মুম্বইতে বসে একের পর এক ছবি তৈরি করেছেন এই বাঙালি প্রযোজক-পরিচালক জুটি। ইতিমধ্যেই কাজ করে ফেলেছেন ইশা দেওল, সেলিনা জেটলি, লিলেট দুবের মতো তারকাদের সঙ্গে। অমিতাভ বচ্চন তাঁদের ছবির প্রথম পোস্টার লাঞ্চ করেছেন। মুম্বই থেকে ETV ভারত সিতারার সঙ্গে কথা বললেন রামকমল এবং অরিত্র।
Ramakamal Mukhopadhyay
By
Published : Sep 16, 2019, 11:34 PM IST
- ETV ভারত সিতারা : অনেক বড় বড় নাম আপনাদের ছবিগুলোর সঙ্গে জুড়ে গেছে। ভাবতে কীরকম মনে হয়? এরকম আশা করেছিলেন কখনও?
- রামকমল ও অরিত্র : একটা খুব ইন্টারেস্টিং সময় দিয়ে আমরা যাচ্ছি। যখন আমরা আমাদের প্রথম ছবি বানাতে চেয়েছিলাম, অনেক নেগেটিভিটি এসেছিল, অনেক সমস্যা হয়েছিল। প্রথমে কেউ আমাদের বিশ্বাস করতে চাননি। সবাই ভেবেছিল আমরা পাগল হয়ে গিয়েছি। তারপর যখন 'কেকওয়াক' বানালাম সবাই আমাদের খুব সিরিয়াসলি নিতে শুরু করল।
- ETV ভারত সিতারা : এই পরিচালক-প্রযোজকের জুটি, পরপর এতগুলো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করলেন, কীরকম মনে হচ্ছে এখন?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা চারটে ছবি তৈরি করা শেষ করেছি। তিনটে হিন্দি ভাষায়, আর একটি বাংলায়। আমাদের ইচ্ছে পঞ্চম ছবিটি দুর্গা পুজোতে শুটিং করব। এবং আমাদের ষষ্ঠ ছবিটির ঘোষণাও করব। এই দুটো ছবি হিন্দিতেই তৈরি করব। একে অপরের সঙ্গে চারটি বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করে আমরা দুজনেই ভীষণ খুশি। আমার পরিচালক রামকমল মুখার্জি ছবির বিষয়বস্তুকে খুব ভালো বুঝতে পারেন, বিষয়টির গভীরে চলে যেতে পারেন। বিভিন্ন OTT প্ল্যাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে কাজ করছি।
ক্রিয়েটিভ রিলেশনশিপে দু'জন
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দুজনের একসঙ্গে এই যাত্রা কীভাবে শুরু হল?
- রামকমল ও অরিত্র : 'বিন কুচ কাহে' ধারাবাহিকটি রামদা যখন শেষ করলেন, ঠিক করলেন একটি হিন্দি ছবি প্রযোজনা করবেন। দুটো প্রজেক্টে তিনি কাজ করেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে, সেই দুটি বন্ধ হয়ে যায়। রামদার নিজের অ্যাসোসিয়েটরাই তাঁকে ঠকিয়েছিল। খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন। খুব খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তারমধ্যে আমি আমার কর্পোরেট চাকরি করতে করতে বোর হয়ে যাই। এই একঘেয়েমি কাটাতে ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চেষ্টা করি। তখনই আমার সঙ্গে রামদার আলাপ হয় একটা সোশ্যাল গ্যাদারিংয়ে। রামদাই আমাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তারপর আমরা একসঙ্গে মিলে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস তৈরি করি। এটা ভেবে তৈরি করি, যে কোনও না কোনওদিন আমরা ছবি তৈরি করব। এভাবেই সবকিছু শুরু হয় আরকি...
- ETV ভারত সিতারা : মুম্বইতে বাঙালিরা ভালো বা বলা যায়, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাঙালিরা। শুরুটা মসৃণ ছিল, নাকি রোলার কোস্টারের রাইডের মতো কঠিন ছিল?
- রামকমল ও অরিত্র : মুম্বই খুব সুন্দর জায়গা। এই শহরটার মাহাত্ম্য এটাই, সকলকেই দুই হাত বাড়িয়ে আপন করে নেয়। আপনার যদি প্রতিভা থাকে এবং আপনি যদি পরিশ্রমী হন, এই শহর আপনাকে ফিরিয়ে দেবে না। শুরুর দিকে মসৃণ ছিল না একেবারেই, অনেক চড়াই-উৎরাই দিয়ে যেতে হয়েছে। তারপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি।
- ETV ভারত সিতারা : অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস আপনাদের সন্তান। একে বড় হতে দেখতে কী অনুভূতি হয়?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা সবাই গুটি গুটি পায়ে হাটা শুরু করেছি। আমাদের মাত্র তিন বছর বয়স। এক বছরে আমরা চারটে ছবি বানিয়েছি। তার মধ্যে দুটো রিলিজ় করেছে। আমরা পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ছবির কাজ শুরু করতে চলেছি দু'মাসের মধ্যে। এই বছরের শেষে আমরা আরও তিনটে ছবির ঘোষণা করব। একটি ননফিকশন শোয়েরও ঘোষণা করব। নিজেদের কোম্পানি বড় হচ্ছে দেখতে ভালো লাগে। এর জন্য আমরা আমাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা সব সময় আমাদের পাশে থেকেছেন।
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দু'জনের কেমিস্ট্রিকে কীভাবে বর্ণনা করবেন?
- রামকমল ও অরিত্র : রামদা আমার বড় ভাইয়ের মতো। রামদার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা। ইন্ডাস্ট্রিতে আগের থেকেই খুব ভালো রেপুটেশন ছিল। আমি দেখেছি প্রত্যেকটা কাজেই রামদা কীরকম মনোযোগী। সারাক্ষণ ধরে কিছু না কিছু ভেবে যাচ্ছেন, নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসছেন। অসম্ভব প্রফেশনাল এবং অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সকলেই তাঁর মতামতকে অসম্ভব মান্যতা দেয়। আমি নিজে রামদার থেকে অনেককিছু শিখেছি। খুব মজা করতে ভালোবাসেন। এক এক সময় সেন্স অফ হিউমার দিয়ে সকলকে মাত করে দেন। আমরা এমন একটা সম্পর্ক শেয়ার করি, যেটা সম্পূর্ণভাবে ট্রান্সপারেন্ট।
- ETV ভারত সিতারা : আপনারা সবচেয়ে বেশি কিসে বিশ্বাস করেন?
- রামকমল ও অরিত্র : পারফরম্যান্স এবং পার্সিভিয়ারেন্স।
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের মধ্যে ঝগড়া হয় না?
- রামকমল ও অরিত্র : হ্যাঁ নিশ্চয়ই। ঝগড়া হবে না? ঝগড়া না করলে তো ভালো কিছু পাওয়াই যায় না। কিন্তু সেই ঝগড়াটা হয় ভালো কনটেন্টের জন্যে, ভালো প্রযোজনার জন্য। ব্যক্তিগত কারণে আমরা কখনও ঝগড়া করি না। আমি জানি রামদা কখনওই চান না আমি হেরে যাই। রামদা আমার পথ প্রদর্শক। আমি যদি প্রযোজক হিসেবে সফল হই, সবচেয়ে বেশি রামদাই খুশি হবেন।
- ETV ভারত সিতারা : ঝগড়া হলে কে ক্যাটালিস্টের মতো এসে আপনাদের ঝগড়া মিটায়?
- রামকমল ও অরিত্র : সেই পর্যায়ে ঝগড়া হয় না। কোনও ক্রিয়েটিভ ঝগড়া হল, তারপর সবচেয়ে ভালো আইডিয়াটাই বেছে নেওয়া হয়।
- ETV ভারত সিতারা : এরপরে কোন ছবিতে কাজ করবেন?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা এই মুহূর্তে একটা সোশ্যাল ড্রামা, একটি রোম্যান্টিক থ্রিলার, একটি মার্ডার মিস্ট্রি এবং একটি বায়োপিকের উপর কাজ করছি। নামগুলো এখনই বলা যাবে না।
- ETV ভারত সিতারা : রামদা আপনি কি অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অফার পাচ্ছেন? অরিত্রর কি অন্য কোনও পরিচালকের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
- রামকমল ও অরিত্র : অন্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অনেক অফার পাচ্ছে রামদা। কিন্তু এই মুহূর্তে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সঙ্গে বেশকিছু প্রজেক্টে জড়িয়ে আছেন। এবং প্রযোজক হিসেবে আমারও রামদার সঙ্গেই এখন কাজ করার কথা। তবে আমরা নতুন লেখকের অভিনেতা-পরিচালকদের জন্য দরজা খোলা রেখেছি। নতুন কিছু করতে চাইছি। যেটা একেবারেই ইউনিক।
- ETV ভারত সিতারা : একে অপরকে কি কমপ্লিমেন্ট দিতে চান?
- রামকমল ও অরিত্র : না আমরা কোনও কমপ্লিমেন্ট দিতে চাই না। আমরা চাই মানুষ আমাদের কমপ্লিমেন্ট দিক। 'কেক ওয়াক'-এর জন্য আমরা খুব ভালো রিভিউ পেয়েছি। কিছু মানুষ আমাদের ব্যাপারে লেখেওনি আমাদের বাহবাও দেয়নি। এর মানে এটা নয় আমাদের নিজেদের ডাল তৈরি করতে হবে। কমপ্লিমেন্ট দেওয়া মাঝে মাঝে সত্যি হয় না। আমরা এই বিষয়টাকে এড়িয়ে চলি। হালকা চলে বলতে গেলে, মনে হবে 'কফি উইথ করণ' শোতে রয়েছি।
- ETV ভারত সিতারা : অনেক বড় বড় নাম আপনাদের ছবিগুলোর সঙ্গে জুড়ে গেছে। ভাবতে কীরকম মনে হয়? এরকম আশা করেছিলেন কখনও?
- রামকমল ও অরিত্র : একটা খুব ইন্টারেস্টিং সময় দিয়ে আমরা যাচ্ছি। যখন আমরা আমাদের প্রথম ছবি বানাতে চেয়েছিলাম, অনেক নেগেটিভিটি এসেছিল, অনেক সমস্যা হয়েছিল। প্রথমে কেউ আমাদের বিশ্বাস করতে চাননি। সবাই ভেবেছিল আমরা পাগল হয়ে গিয়েছি। তারপর যখন 'কেকওয়াক' বানালাম সবাই আমাদের খুব সিরিয়াসলি নিতে শুরু করল।
- ETV ভারত সিতারা : এই পরিচালক-প্রযোজকের জুটি, পরপর এতগুলো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করলেন, কীরকম মনে হচ্ছে এখন?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা চারটে ছবি তৈরি করা শেষ করেছি। তিনটে হিন্দি ভাষায়, আর একটি বাংলায়। আমাদের ইচ্ছে পঞ্চম ছবিটি দুর্গা পুজোতে শুটিং করব। এবং আমাদের ষষ্ঠ ছবিটির ঘোষণাও করব। এই দুটো ছবি হিন্দিতেই তৈরি করব। একে অপরের সঙ্গে চারটি বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করে আমরা দুজনেই ভীষণ খুশি। আমার পরিচালক রামকমল মুখার্জি ছবির বিষয়বস্তুকে খুব ভালো বুঝতে পারেন, বিষয়টির গভীরে চলে যেতে পারেন। বিভিন্ন OTT প্ল্যাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে কাজ করছি।
ক্রিয়েটিভ রিলেশনশিপে দু'জন
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দুজনের একসঙ্গে এই যাত্রা কীভাবে শুরু হল?
- রামকমল ও অরিত্র : 'বিন কুচ কাহে' ধারাবাহিকটি রামদা যখন শেষ করলেন, ঠিক করলেন একটি হিন্দি ছবি প্রযোজনা করবেন। দুটো প্রজেক্টে তিনি কাজ করেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে, সেই দুটি বন্ধ হয়ে যায়। রামদার নিজের অ্যাসোসিয়েটরাই তাঁকে ঠকিয়েছিল। খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন। খুব খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তারমধ্যে আমি আমার কর্পোরেট চাকরি করতে করতে বোর হয়ে যাই। এই একঘেয়েমি কাটাতে ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চেষ্টা করি। তখনই আমার সঙ্গে রামদার আলাপ হয় একটা সোশ্যাল গ্যাদারিংয়ে। রামদাই আমাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তারপর আমরা একসঙ্গে মিলে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস তৈরি করি। এটা ভেবে তৈরি করি, যে কোনও না কোনওদিন আমরা ছবি তৈরি করব। এভাবেই সবকিছু শুরু হয় আরকি...
- ETV ভারত সিতারা : মুম্বইতে বাঙালিরা ভালো বা বলা যায়, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাঙালিরা। শুরুটা মসৃণ ছিল, নাকি রোলার কোস্টারের রাইডের মতো কঠিন ছিল?
- রামকমল ও অরিত্র : মুম্বই খুব সুন্দর জায়গা। এই শহরটার মাহাত্ম্য এটাই, সকলকেই দুই হাত বাড়িয়ে আপন করে নেয়। আপনার যদি প্রতিভা থাকে এবং আপনি যদি পরিশ্রমী হন, এই শহর আপনাকে ফিরিয়ে দেবে না। শুরুর দিকে মসৃণ ছিল না একেবারেই, অনেক চড়াই-উৎরাই দিয়ে যেতে হয়েছে। তারপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি।
- ETV ভারত সিতারা : অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস আপনাদের সন্তান। একে বড় হতে দেখতে কী অনুভূতি হয়?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা সবাই গুটি গুটি পায়ে হাটা শুরু করেছি। আমাদের মাত্র তিন বছর বয়স। এক বছরে আমরা চারটে ছবি বানিয়েছি। তার মধ্যে দুটো রিলিজ় করেছে। আমরা পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ছবির কাজ শুরু করতে চলেছি দু'মাসের মধ্যে। এই বছরের শেষে আমরা আরও তিনটে ছবির ঘোষণা করব। একটি ননফিকশন শোয়েরও ঘোষণা করব। নিজেদের কোম্পানি বড় হচ্ছে দেখতে ভালো লাগে। এর জন্য আমরা আমাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা সব সময় আমাদের পাশে থেকেছেন।
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দু'জনের কেমিস্ট্রিকে কীভাবে বর্ণনা করবেন?
- রামকমল ও অরিত্র : রামদা আমার বড় ভাইয়ের মতো। রামদার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা। ইন্ডাস্ট্রিতে আগের থেকেই খুব ভালো রেপুটেশন ছিল। আমি দেখেছি প্রত্যেকটা কাজেই রামদা কীরকম মনোযোগী। সারাক্ষণ ধরে কিছু না কিছু ভেবে যাচ্ছেন, নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসছেন। অসম্ভব প্রফেশনাল এবং অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সকলেই তাঁর মতামতকে অসম্ভব মান্যতা দেয়। আমি নিজে রামদার থেকে অনেককিছু শিখেছি। খুব মজা করতে ভালোবাসেন। এক এক সময় সেন্স অফ হিউমার দিয়ে সকলকে মাত করে দেন। আমরা এমন একটা সম্পর্ক শেয়ার করি, যেটা সম্পূর্ণভাবে ট্রান্সপারেন্ট।
- ETV ভারত সিতারা : আপনারা সবচেয়ে বেশি কিসে বিশ্বাস করেন?
- রামকমল ও অরিত্র : পারফরম্যান্স এবং পার্সিভিয়ারেন্স।
- ETV ভারত সিতারা : আপনাদের মধ্যে ঝগড়া হয় না?
- রামকমল ও অরিত্র : হ্যাঁ নিশ্চয়ই। ঝগড়া হবে না? ঝগড়া না করলে তো ভালো কিছু পাওয়াই যায় না। কিন্তু সেই ঝগড়াটা হয় ভালো কনটেন্টের জন্যে, ভালো প্রযোজনার জন্য। ব্যক্তিগত কারণে আমরা কখনও ঝগড়া করি না। আমি জানি রামদা কখনওই চান না আমি হেরে যাই। রামদা আমার পথ প্রদর্শক। আমি যদি প্রযোজক হিসেবে সফল হই, সবচেয়ে বেশি রামদাই খুশি হবেন।
- ETV ভারত সিতারা : ঝগড়া হলে কে ক্যাটালিস্টের মতো এসে আপনাদের ঝগড়া মিটায়?
- রামকমল ও অরিত্র : সেই পর্যায়ে ঝগড়া হয় না। কোনও ক্রিয়েটিভ ঝগড়া হল, তারপর সবচেয়ে ভালো আইডিয়াটাই বেছে নেওয়া হয়।
- ETV ভারত সিতারা : এরপরে কোন ছবিতে কাজ করবেন?
- রামকমল ও অরিত্র : আমরা এই মুহূর্তে একটা সোশ্যাল ড্রামা, একটি রোম্যান্টিক থ্রিলার, একটি মার্ডার মিস্ট্রি এবং একটি বায়োপিকের উপর কাজ করছি। নামগুলো এখনই বলা যাবে না।
- ETV ভারত সিতারা : রামদা আপনি কি অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অফার পাচ্ছেন? অরিত্রর কি অন্য কোনও পরিচালকের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
- রামকমল ও অরিত্র : অন্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অনেক অফার পাচ্ছে রামদা। কিন্তু এই মুহূর্তে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সঙ্গে বেশকিছু প্রজেক্টে জড়িয়ে আছেন। এবং প্রযোজক হিসেবে আমারও রামদার সঙ্গেই এখন কাজ করার কথা। তবে আমরা নতুন লেখকের অভিনেতা-পরিচালকদের জন্য দরজা খোলা রেখেছি। নতুন কিছু করতে চাইছি। যেটা একেবারেই ইউনিক।
- ETV ভারত সিতারা : একে অপরকে কি কমপ্লিমেন্ট দিতে চান?
- রামকমল ও অরিত্র : না আমরা কোনও কমপ্লিমেন্ট দিতে চাই না। আমরা চাই মানুষ আমাদের কমপ্লিমেন্ট দিক। 'কেক ওয়াক'-এর জন্য আমরা খুব ভালো রিভিউ পেয়েছি। কিছু মানুষ আমাদের ব্যাপারে লেখেওনি আমাদের বাহবাও দেয়নি। এর মানে এটা নয় আমাদের নিজেদের ডাল তৈরি করতে হবে। কমপ্লিমেন্ট দেওয়া মাঝে মাঝে সত্যি হয় না। আমরা এই বিষয়টাকে এড়িয়ে চলি। হালকা চলে বলতে গেলে, মনে হবে 'কফি উইথ করণ' শোতে রয়েছি।
Intro:অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস মানেই এখন ভেসে আসে দুটো নাম - পরিচালক রামকমল মুখার্জি এবং প্রযোজক অরিত্র দাস। তিন বছরে মুম্বইতে বসে একের পর এক ছবি তৈরি করেছেন এই বাঙালি প্রযোজক-পরিচালক জুটি। ইতিমধ্যেই কাজ করে ফেলেছেন ইশা দেওল, সেলিনা জেটলি, লিলিট দুবের মতো তারকাদের সঙ্গে। অমিতাভ বচ্চন তাঁদের ছবির প্রথম পোস্টার লাঞ্চ করেন। মুম্বই থেকে ETV ভারত সিতারার সঙ্গে কথা বললেন রামকমল এবং অরিত্র।
Body:ETV ভারত সিতারা : অনেক বড় বড় নাম আপনাদের ছবিগুলো সঙ্গে জুড়ে গেছে। বিষয়টা সময় দাঁড়িয়ে ভাবতে কীরকম মনে হয়? এরকমটা আশা করেছিলেন কখনও?
রামকমল ও অরিত্র : একটা খুব ইন্টারেস্টিং সময় দিয়ে আমরা যাচ্ছি। যখন আমরা আমাদের প্রথম ছবি বানাতে চেয়েছিলাম, অনেক নেগেটিভিটি এসেছিল, অনেক সমস্যা হয়েছিল। প্রথমে কেউ আমাদের বিশ্বাস করতে চাইনি। সবাই ভেবেছিল আমরা পাগল হয়ে গিয়েছি। তারপর যখন 'কেকওয়াক' বানালাম সবাই আমাদের খুব সিরিয়াসলি নিতে শুরু করল।
ETV ভারত সিতারা : এই পরিচালক-প্রযোজক দ্বয়ের জুটি, পরপর এতগুলো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করলেন, কীরকম মনে হচ্ছে এখন?
রামকমল ও অরিত্র : আমরা চারটে ছবি তৈরি করা শেষ করেছি। তিনটে হিন্দি ভাষায়, আর একটি বাংলায়। আমাদের ইচ্ছে পঞ্চম ছবিটি দুর্গা পুজোতে শুটিং করব। এবং আমাদের ষষ্ঠ ছবিটির ঘোষণাও করব। এই দুটো ছবি হিন্দিতেই তৈরি করব। একে অপরের সঙ্গে চারটি বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করে আমরা দুজনেই ভীষণ খুশি। আমার পরিচালক রামকমল মুখার্জি ছবির বিষয়বস্তুকে খুব ভালো বুঝতে পারেন, বিষয়টির গভীরে চলে যেতে পারেন। বিভিন্ন OTT প্লাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে কাজ করছি।
ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দুজনের একসঙ্গে এই যাত্রা কীভাবে শুরু হল?
রামকমল ও অরিত্র : 'বিন কুচ কাহে' ধারাবাহিকটি রামদা যখন শেষ করলেন, ঠিক করলেন একটি হিন্দি ছবি প্রযোজনা করবেন। দুটো প্রজেক্টে তিনি কাজ করেছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে, সেই দুটি বন্ধ হয়ে যায়। রামদান নিজের অ্যাসোসিয়েটরাই তাঁকে ঠকিয়েছিল। খুব খারাপ সময় মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন। খুব খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তারমধ্যে আমি আমার কর্পোরেট চাকরি করতে করতে বোর হয়ে যাই। এই একঘেয়েমি কাটাতে ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চেষ্টা করি। তখনই আমার সঙ্গে রামদার আলাপ হয় একটা সোশ্যাল গ্যাদারিংয়ে। রামদাই আমাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তারপর আমরা একসঙ্গে মিলে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস তৈরি করি। এটা ভেবে তৈরি করি, যে কোনও না কোনওদিন আমরা ছবি তৈরি করব। এভাবেই সবকিছু শুরু হয় আরকী...
ETV ভারত সিতারা : মুম্বইতে বাঙালিরা ভালো, বলা ভালো হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বাঙালি। শুরুটা মসৃণ ছিল, নাকি রোলার কোস্টারের রাইডের মতো কঠিন ছিল?
রামকমল ও অরিত্র : মুম্বই খুব সুন্দর জায়গা। এই শহরটার মাহাত্ম্য এটাই, সকলকেই দুই হাত বাড়িয়ে আপন করে নেয়। আপনার যদি প্রতিভা থাকে এবং আপনি যদি পরিশ্রমী হন, এই শহর আপনাকে ফিরিয়ে দেবে না। শুরুর দিকে মসৃণ ছিল না একেবারেই, অনেক চড়াই-উৎরাই দিয়ে যেতে হয়েছে। তারপর নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।
ETV ভারত সিতারা : অ্যাসর্টেড মোশন পিকচারস আপনাদের সন্তান। একে বড় হতে দেখতে কী অনুভূতি হয়?
রামকমল ও অরিত্র : আমরা সবাই গুটি গুটি পায়ে হাটা শুরু করেছি। আমাদের মাত্র তিন বছর বয়স। এক বছরে আমরা চারটে ছবি বানিয়েছি। তার মধ্যে দুটো রিলিজ করেছে। আমরা পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ছবির কাজ শুরু করতে চলেছি দু'মাসের মধ্যে। এই বছরের শেষে আমরা আরও তিনটে ছবির ঘোষণা করব। একটি ননফিকশন শোয়েরও ঘোষণা করব। নিজেদের কোম্পানি বড় হচ্ছে দেখতে ভালো লাগে। এর জন্য আমরা আমাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা সব সময় আমাদের পাশে থেকেছেন।
ETV ভারত সিতারা : আপনাদের দু'জনের কেমিস্ট্রিকে কীভাবে বর্ণনা করবেন?
রামকমল ও অরিত্র : রামদা আমার বড় ভাইয়ের মতো। রামদার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা। ইন্ডাস্ট্রিতে আগের থেকেই খুব ভালো রেপুটেশন ছিল। আমি দেখেছি প্রত্যেকটা কাজেই রামদা কীরকম মনোযোগী। সারাক্ষণ ধরে কিছু না কিছু ভেবে যাচ্ছেন, নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসছেন। অসম্ভব প্রফেশনাল এবং অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সকলেই তাঁর মতামতকে অসম্ভব মান্যতা দেয়। আমি নিজে রামদার থেকে অনেককিছু শিখেছি। খুব মজা করতে ভালোবাসেন। একেক সময় সেন্স অফ হিউমার দিয়ে সকলকে মাত করে দেন। আমরা এমন একটা সম্পর্ক শেয়ার করি, যেটা সম্পূর্ণভাবে ট্রান্সপ্যারেন্ট।
ETV ভারত সিতারা : আপনারা সবচেয়ে বেশি কিসে বিশ্বাস করেন?
রামকমল ও অরিত্র : পারফরম্যান্স এবং পার্সিভিয়ারেন্স।
ETV ভারত সিতারা : আপনাদের প্রথম প্রজেক্ট কীভাবে শুরু হয়েছিল?
রামকমল ও অরিত্র : এটা একটা লম্বা গল্প। এর জন্য একটা আলাদা সাক্ষাৎকারের দরকার। আসলে আমাদের প্রথম প্রজেক্ট কোনদিনও শুধুই হয়নি। সে অনেক ব্যাপার। আলোচনা করতে মন চায় না। সেই সময়ই রামদা ঠিক করেন শুধু আমাদের সঙ্গেই কাজ করবেন, অন্য কারোর সঙ্গে নয়। অন্য পরিচালক, ইনভেস্টারস, প্রযোজকরা শেষ মুহূর্তে সরে আসেন। আর তখনই রামদা 'কেকওয়াক' নিয়ে আসেন। আমরা ছবিটা নিয়ে ইশা দেওয়ালের কাছে যাই। তারপর তো আপনারা সকলেই জানেন...
ETV ভারত সিতারা : আপনাদের মধ্যে ঝগড়া হয় না?
রামকমল ও অরিত্র : হ্যাঁ নিশ্চয়ই। ঝগড়া হবে না? ঝগড়া না করলে তো ভালো কিছু পাওয়াই যায় না। কিন্তু সেই ঝগড়াটা হয় ভালো কনটেন্টের জন্যে, ভালো প্রযোজনার জন্য। ব্যক্তিগত কারণে আমরা কখনও ঝগড়া করি না। আমি জানি রামদা কখনওই চাযন না আমি হেরে যাই। রামদা আমার পথ প্রদর্শক। আমি যদি প্রযোজক হিসেবে সফল হই, সবচেয়ে বেশি রামদাই খুশি হবেন।
ETV ভারত সিতারা : ঝগড়া হলে কে ক্যাটালিস্টের মতো এসে আপনাদের ঝগড়া মিটায়?
রামকমল ও অরিত্র : সেই পর্যায়ে ঝগড়াই হয় না। কোনও ক্রিয়েটিভ ঝগড়া হল, তারপর সবচেয়ে ভালো আইডিয়াটাই বেছে নেওয়া হয়।
ETV ভারত সিতারা : এরপরে কোন ছবিতে কাজ করবেন?
রামকমল ও অরিত্র : আমরা এই মুহূর্তে একটা সোশ্যাল ড্রামা, একটি রোম্যান্টিক থ্রিলার, একটি মার্ডার মিস্ট্রি এবং একটি বায়োপিকের উপর কাজ করছি। নামগুলো এখনই বলা যাবে না।
ETV ভারত সিতারা : রামদা আপনি কি অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অফার পাচ্ছেন? অরিত্রর কি অন্য কোনও পরিচালকের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
রামকমল ও অরিত্র : অন্য প্রযোজনা সংস্থা থেকে অনেক অফার পাচ্ছে রামদা। কিন্তু এই মুহূর্তে অ্যাসর্টেড মোশন পিকচার্সের সঙ্গে বেশকিছু প্রজেক্টে জড়িয়ে আছেন। এবং প্রযোজক হিসেবে আমারও রামদার সঙ্গেই এখন কাজ করার কথা। তবে আমরা নতুন লেখকের অভিনেতা-পরিচালকদের জন্য দরজা খোলা রেখেছি। নতুন কিছু করতে চাইছি। যেটা একেবারেই ইউনিক।
Conclusion:ETV ভারত সিতারা : একে অপরকে কি কম্পিউটার দিতে চান?
রামকমল ও অরিত্র : না আমরা কোনও কমপ্লিমেন্ট দিতে চাই না। আমরা চাই মানুষ আমাদের কমপ্লিমেন্ট দিক। কেককের জন্য আমরা খুব ভালো রিভিউ পেয়েছি। কিছু মানুষ আমাদের ব্যাপারে লেখেওনি আমাদের বাহবাও দেয়নি। এর মানে এটা নয় আমাদের নিজেদের ডাল তৈরি করতে হবে। কম্প্লেমেন্ট দেওয়া মাঝে মাঝে সত্যি হয় না। আমরা এই বিষয়টাকে এড়িয়ে চলি। হালকা চলে বলতে গেলে, মনে হবে 'কফি উইথ করণ' শোতে রয়েছি।