ETV Bharat / sitara

Tolly Stars Reaction on school Opening : সব চললেও বন্ধ স্কুল, এবার মুখ খুলল টলিউড - tolly stars give their reaction on school opening

সব চলছে বহাল তবিয়তে। খুলছে না স্কুল। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে । এবার মুখ খুললেন টলিপাড়ার অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও (Tollywood Stars share their thought on School Opening)।

Tolly Stars Reaction on school Opening
খুলছে না স্কুল কী বলছে টলিউড
author img

By

Published : Jan 23, 2022, 12:15 PM IST

Updated : Jan 23, 2022, 3:46 PM IST

কলকাতা, 23 জানুয়ারি: "যতদিন না গর্জে উঠব, ততদিন সুরাহা হবে না। অভিভাবক হিসেবে বলছি, এবার মনে হয় গর্জে ওঠা দরকার প্রত্যেক অভিভাবকের। আমার সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নষ্ট করে দিচ্ছে। মা-বাবা হিসেবে সন্তানের এতো বড়ো ক্ষতিতেও যদি আওয়াজ না তুলি তাহলে তো মা-বাবা হওয়ার যোগ্য নই। " ফেসবুক খুললেই সবার আগে ভেসে উঠছে এমন কিছু লাইন । আর তার নীচে অগণিত অভিভাবকের স্বাক্ষর । দাবি, অবিলম্বে খুলতে হবে স্কুল । করোনার আগমনে সবচেয়ে বড় কোপ পড়েছে স্কুল-কলেজের ওপর । পড়ুয়ারদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তা মেনে নিয়েছিলেন সকলেই ৷ কিন্তু বিকল্প অনলাইন ক্লাসের সমস্যাও কম নয় ৷ অনেক টালবাহানার পর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য স্কুলের দরজা খুলেছে। ফের করোনার জেরে তাতেও পড়ল বাধা । কলেজের ক্ষেত্রেও একই হাল । অনলাইন ক্লাসের জেরে কমছে পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ । অনেকের কাছেই এই সুবিধাটুকুও নেই । যার জেরে মানসিক চাপে আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন অনেক ছাত্রছাত্রী ৷ একইভাবে অনলাইন ক্লাসের জেরে বাড়ছে চোখের সমস্যাও । ওদিকে এ রাজ্যের বুকে গঙ্গাসাগর মেলা, ক্রিস্টমাস ইভ সবই চলছে । পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের উপস্থিতিতে খুলে দেওয়া হয়েছে সিনেমা হলও। কিন্তু দরজা বন্ধ স্কুল-কলেজের ।

Tolly Stars Reaction on school Opening
পায়েল দে

এবার এই নিয়ে নানা মুখ খুলল টলিপাড়াও (Tollywood Stars share their thought on School Opening)। অভিনেত্রী পায়েল দে বলেন, "একজন মা হিসেবে বলব, বারবার মনে হচ্ছে যে সবই যখন প্রোটোকল মেনে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাহলে বাচ্চাদের স্কুলটাও যদি বিধিনিষেধ এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে খোলা হত খুব ভাল হত । শিক্ষার থেকে বড় কিছু তো হয় না জীবনে । বাচ্চারা পিছিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছু থেকে । ওরা যদি স্কুলে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে থাকে তাহলে বোধহয় ওদের কনফিডেন্স বাড়ে । মোটিভেটেড হবে ওরা । বাচ্চারা যত বেশি মানু্ষের সঙ্গে মিশবে তত বোধহয় ওদের ইমিউনিটি পাওয়ার স্ট্রং হবে । জানি স্কুল খুললে হয়ত অনেক সমস্যা হবে । সবাই মাস্ক পরবে না, দূরত্ব বজায় রাখবে না । বাচ্চারা সবসময় সব কিছু তো নিয়ম মেনে করতে পারে না । তবু তারও তো একটা বিকল্প আছে নিশ্চয়ই । সেদিকে খেয়াল রেখে যদি স্কুলটা খোলা যায় ভাল হয় । আরেকটা দিকও বলব এই প্রসঙ্গে, অনেক বাবা-মা আছেন, যাঁদের সামর্থ নেই স্মার্ট ফোন কেনার ৷ তাঁরা বাধ্য হয়ে ধার দেনা করে হয়ত কিনছে শুধুমাত্র বাচ্চার লেখাপড়ার জন্য । এদের কথাও ভাবা উচিত ।"

Tolly Stars Reaction on school Opening
ঋষভ বসু

অন্য়দিকে অভিনেতা ঋষভ বসুর বক্তব্য, "আমার মনে হয় একটা দেশ, রাজ্য বা জাতির পক্ষে সর্বোপরি মানবজীবনের ক্ষেত্রে এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হতে পারে না । কারণ শিক্ষাই একমাত্র সারা পৃথিবীকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারে । আর সেটাই এখন একপ্রকার স্তব্ধ । সবার বাড়িতে সব কিছুর সেট আপ নেই । সবকিছু শেখার উপায় নেই বাড়িতে বসে । তাই প্রতিষ্ঠান খুব দরকার । গ্রামেগঞ্জে যেখানে ইন্টারনেটের তেমন সুবিধা নেই সেখানকার ছেলেমেয়েগুলো কী করবে? তাদের পক্ষে অনলাইন ক্লাস করা কী সম্ভব? লেখাপড়া করাটা অধিকার । সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওরা । সেই জায়গায় গঙ্গাসাগর হচ্ছে, নানা রকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে, আইপিএল খেলা চলেছে । নেতারা এটা নিয়ে খুব একটা বিচার বিবেচনা করছেন না বলে আমার মনে হয় । এটা ঠিক, জনসমাগমে এলে হয়ত বাচ্চাদের কোভিড হতে পারে । কিন্তু টিকাকরণ তো শুরু হয়েছে । তাই অফিস কাছারির মত বিধিনিষেধ মেনে যদি স্কুল কলেজ চালু করা যায় ভাল হয় ৷ তাতে সভ্যতা এগোবে । ওরাই তো ভবিষ্যৎ আমাদের । সব যদি প্রোটোকল মেনে চলতে পারে স্কুল নয় কেন?"

Tolly Stars Reaction on school Opening
ঋষভ বসু

অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায় বলেন, "সব চলছে এটায় আমি সহমত হতে পারলাম না । কারণ সিনেমা হলে ৫০ শতাংশ মানুষ নিয়ে চলার কারণে অনেক ছবি আটকে গেছে । তার মধ্যে আমার 'ভটভটি'-ও আছে । এপ্রিলে রিলিজ করার কথা ছিল । সেটা কবে হবে কেউ জানে না । প্রায় দু'বছর ধরে 'ভটভটি' অপেক্ষা করছে । আমার মনে হয় ওমিক্রন কিংবা তার পরবর্তী যদি কিছু আসে তাদের আর পাঁচটা রোগের মতোই ট্রিট করতে হবে । এদেরকে প্রাণঘাতী, ভয়ঙ্কর বলে প্যানিক করতে দেওয়া চলবে না । এতেই মানু্ষ ভয় পেয়ে যায় । আর এই প্যানিকের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা জড়িয়ে আছে । স্কুল বন্ধের প্রসঙ্গে বলব, যে কোনও জায়গাতেই বাচ্চাদের একটু বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় । তাই হয়ত স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত । তারা যদি আক্রান্ত হয় সেই কারণে । এতে আখেরে কোনও লাভ হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না ৷ এতে শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটা বড় ধাক্কা আসছে । প্রাইমারি শিক্ষার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যাচ্ছে । যারা পড়াশোনা করতে ভালোবাসে তারা বাড়িতে থাকলেও পড়বে, স্কুলে গেলেও পড়বে । যারা স্কুলের বাইরে সেভাবে পড়াশোনায় অভ্যস্ত নয়, স্কুলের নিয়মানুবর্তিতার মধ্যেই লেখাপড়া করতে অভ্যস্ত তাদের জন্য খুব খারাপ হচ্ছে । অনেকের আবার ভালই হচ্ছে । কম পড়াশোনা করে দিব্যি কাটাতে পারছে তারা। একটা ফাঁক তৈরি হয়ে যাচ্ছে তাদের। স্কুল খুললেই চলবে না। সেফটি সিকিউরিটির কথাও মাথায় রাখতে হবে। দেখতে হবে, তারা যাতে কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ওরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। স্কুল বন্ধ করে ওদের ভবিষ্যৎটা ক্ষতিগ্রস্ত করছি কিনা সেটা বিবেচনা করার বিষয় । তবে এক্ষুণি স্কুল খুলে দাও কিংবা বন্ধ থাকুক এটা আমি বলতে পারছি না । কারণ এই হিসেবটা আমার কাছে নেই যে বাচ্চাদের মধ্যে কত শতাংশ আক্রান্ত আর কত শতাংশ নয় ।"

Tolly Stars Reaction on school Opening
তথাগত মুখোপাধ্যায়

আরও পড়ুন : শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে বিশেষ ওয়েবিনার 'উজ্জীবন চর্চা'

অভিনেতা দেবনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সবই চলছে । কেবল স্কুল নয় । যারা ধরুন মাধ্যমিক পাশ করেছে কিংবা ফাইভ সিক্সে পড়ে তারা অন্তত স্কুল কী জিনিস জানে । কিন্তু যারা নার্সারি কিংবা তার থেকে সামান্য উঁচু ক্লাসে পড়ে তারা তো জানেই না স্কুল কী জিনিস । স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া, খেলাধুলো, বন্ধু, দুষ্টুমি এসব ওরা কিছুই জানছে না । একথা ঠিক যে, রিস্ক ফ্যাক্টর আছেই । বাচ্চারা যদি বিপুল পরিমাণে অসুস্থ হতে শুরু করে তা হলে আঙুল উঠবে সরকারের দিকে । তা হলে সেখানেও সেই ভোটের রাজনীতির কথা চলে আসে । আমার কথা হল, যদি সপ্তাহে অন্তত দু'দিন করেও ছেলেমেয়েগুলো স্কুলে যেতে পারত ভাল হত । সব ক্লাস না হয় একদিনে হল না । সাবধানতা সব জায়গায় মেনে সব স্বাভাবিক করার কিংবা বলার চেষ্টা চলছে । তাহলে স্কুলটা খুলে একবার দেখা হোক না । পানশালা খোলা, বাজার দু'দিন খোলা, সিনেমা হল পঞ্চাশ শতাংশ লোকের উপস্থিতিতে চলছে । স্কুলের বেলাতেই দোষ । বাবা-মায়েরা বাইরে থেকে এসে তো পরিষ্কার হয়ে নিজের বাচ্চার কাছেই আগে যায় । বাচ্চারা ঘুরতে যাচ্ছে না? তারা বেরোচ্ছে না? না হলে এমন নিয়ম করা হোক যে বাচ্চাদের রাস্তায় দেখা গেলেই শাস্তি দেওয়া হবে । তা তো হচ্ছে না । শুধু স্কুলের বেলাতেই সব গন্ডগোল।" একই সঙ্গে অনলাইনে পড়াশোনার নানা সমস্যা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "অনলাইনে লেখাপড়ায় তো লেখাপড়ার প্রতি মনও কম ওদের । প্রাইভেট টিউশনও করছে অনলাইনে । এতে মন বসে? চোখের ক্ষতি হচ্ছে, ওবেসিটি বাড়ছে । সমস্যা এহেন অনেক আছে । যারা সরকারি স্কুলে পড়ে তাদের মাইনে দেওয়ার ব্যাপার নেই । যারা বেসরকারি স্কুলে পড়ে তাদের জন্য প্রতি মাসে মাইনে গুনতে হচ্ছে অভিভাবককে। অথচ স্কুলের কোনও খরচই হচ্ছে না তেমন । যারা সামর্থের বাইরে গিয়ে ছেলেমেয়েকে ইংরেজি মাধ্যমে টাকা খরচ করে পড়াচ্ছেন তাদের কথা ভাবুন? অনেকে তো চাকরিও হারিয়েছে এই প্যান্ডেমিকে । কেউ আবার অর্ধেক বেতন পান। তাঁদের চলবে কীভাবে? অন্তত ছেলেমেয়েগুলো স্কুলে গিয়ে কিছু শিখলে তাঁরা মনকে সান্ত্বনা দিতে পারবেন। সবশেষে স্কুল খুলুক এটাই প্রার্থনা।"

কলকাতা, 23 জানুয়ারি: "যতদিন না গর্জে উঠব, ততদিন সুরাহা হবে না। অভিভাবক হিসেবে বলছি, এবার মনে হয় গর্জে ওঠা দরকার প্রত্যেক অভিভাবকের। আমার সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নষ্ট করে দিচ্ছে। মা-বাবা হিসেবে সন্তানের এতো বড়ো ক্ষতিতেও যদি আওয়াজ না তুলি তাহলে তো মা-বাবা হওয়ার যোগ্য নই। " ফেসবুক খুললেই সবার আগে ভেসে উঠছে এমন কিছু লাইন । আর তার নীচে অগণিত অভিভাবকের স্বাক্ষর । দাবি, অবিলম্বে খুলতে হবে স্কুল । করোনার আগমনে সবচেয়ে বড় কোপ পড়েছে স্কুল-কলেজের ওপর । পড়ুয়ারদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তা মেনে নিয়েছিলেন সকলেই ৷ কিন্তু বিকল্প অনলাইন ক্লাসের সমস্যাও কম নয় ৷ অনেক টালবাহানার পর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য স্কুলের দরজা খুলেছে। ফের করোনার জেরে তাতেও পড়ল বাধা । কলেজের ক্ষেত্রেও একই হাল । অনলাইন ক্লাসের জেরে কমছে পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ । অনেকের কাছেই এই সুবিধাটুকুও নেই । যার জেরে মানসিক চাপে আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন অনেক ছাত্রছাত্রী ৷ একইভাবে অনলাইন ক্লাসের জেরে বাড়ছে চোখের সমস্যাও । ওদিকে এ রাজ্যের বুকে গঙ্গাসাগর মেলা, ক্রিস্টমাস ইভ সবই চলছে । পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের উপস্থিতিতে খুলে দেওয়া হয়েছে সিনেমা হলও। কিন্তু দরজা বন্ধ স্কুল-কলেজের ।

Tolly Stars Reaction on school Opening
পায়েল দে

এবার এই নিয়ে নানা মুখ খুলল টলিপাড়াও (Tollywood Stars share their thought on School Opening)। অভিনেত্রী পায়েল দে বলেন, "একজন মা হিসেবে বলব, বারবার মনে হচ্ছে যে সবই যখন প্রোটোকল মেনে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাহলে বাচ্চাদের স্কুলটাও যদি বিধিনিষেধ এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে খোলা হত খুব ভাল হত । শিক্ষার থেকে বড় কিছু তো হয় না জীবনে । বাচ্চারা পিছিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছু থেকে । ওরা যদি স্কুলে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে থাকে তাহলে বোধহয় ওদের কনফিডেন্স বাড়ে । মোটিভেটেড হবে ওরা । বাচ্চারা যত বেশি মানু্ষের সঙ্গে মিশবে তত বোধহয় ওদের ইমিউনিটি পাওয়ার স্ট্রং হবে । জানি স্কুল খুললে হয়ত অনেক সমস্যা হবে । সবাই মাস্ক পরবে না, দূরত্ব বজায় রাখবে না । বাচ্চারা সবসময় সব কিছু তো নিয়ম মেনে করতে পারে না । তবু তারও তো একটা বিকল্প আছে নিশ্চয়ই । সেদিকে খেয়াল রেখে যদি স্কুলটা খোলা যায় ভাল হয় । আরেকটা দিকও বলব এই প্রসঙ্গে, অনেক বাবা-মা আছেন, যাঁদের সামর্থ নেই স্মার্ট ফোন কেনার ৷ তাঁরা বাধ্য হয়ে ধার দেনা করে হয়ত কিনছে শুধুমাত্র বাচ্চার লেখাপড়ার জন্য । এদের কথাও ভাবা উচিত ।"

Tolly Stars Reaction on school Opening
ঋষভ বসু

অন্য়দিকে অভিনেতা ঋষভ বসুর বক্তব্য, "আমার মনে হয় একটা দেশ, রাজ্য বা জাতির পক্ষে সর্বোপরি মানবজীবনের ক্ষেত্রে এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হতে পারে না । কারণ শিক্ষাই একমাত্র সারা পৃথিবীকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারে । আর সেটাই এখন একপ্রকার স্তব্ধ । সবার বাড়িতে সব কিছুর সেট আপ নেই । সবকিছু শেখার উপায় নেই বাড়িতে বসে । তাই প্রতিষ্ঠান খুব দরকার । গ্রামেগঞ্জে যেখানে ইন্টারনেটের তেমন সুবিধা নেই সেখানকার ছেলেমেয়েগুলো কী করবে? তাদের পক্ষে অনলাইন ক্লাস করা কী সম্ভব? লেখাপড়া করাটা অধিকার । সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওরা । সেই জায়গায় গঙ্গাসাগর হচ্ছে, নানা রকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে, আইপিএল খেলা চলেছে । নেতারা এটা নিয়ে খুব একটা বিচার বিবেচনা করছেন না বলে আমার মনে হয় । এটা ঠিক, জনসমাগমে এলে হয়ত বাচ্চাদের কোভিড হতে পারে । কিন্তু টিকাকরণ তো শুরু হয়েছে । তাই অফিস কাছারির মত বিধিনিষেধ মেনে যদি স্কুল কলেজ চালু করা যায় ভাল হয় ৷ তাতে সভ্যতা এগোবে । ওরাই তো ভবিষ্যৎ আমাদের । সব যদি প্রোটোকল মেনে চলতে পারে স্কুল নয় কেন?"

Tolly Stars Reaction on school Opening
ঋষভ বসু

অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায় বলেন, "সব চলছে এটায় আমি সহমত হতে পারলাম না । কারণ সিনেমা হলে ৫০ শতাংশ মানুষ নিয়ে চলার কারণে অনেক ছবি আটকে গেছে । তার মধ্যে আমার 'ভটভটি'-ও আছে । এপ্রিলে রিলিজ করার কথা ছিল । সেটা কবে হবে কেউ জানে না । প্রায় দু'বছর ধরে 'ভটভটি' অপেক্ষা করছে । আমার মনে হয় ওমিক্রন কিংবা তার পরবর্তী যদি কিছু আসে তাদের আর পাঁচটা রোগের মতোই ট্রিট করতে হবে । এদেরকে প্রাণঘাতী, ভয়ঙ্কর বলে প্যানিক করতে দেওয়া চলবে না । এতেই মানু্ষ ভয় পেয়ে যায় । আর এই প্যানিকের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা জড়িয়ে আছে । স্কুল বন্ধের প্রসঙ্গে বলব, যে কোনও জায়গাতেই বাচ্চাদের একটু বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় । তাই হয়ত স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত । তারা যদি আক্রান্ত হয় সেই কারণে । এতে আখেরে কোনও লাভ হচ্ছে বলে আমার মনে হয় না ৷ এতে শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটা বড় ধাক্কা আসছে । প্রাইমারি শিক্ষার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যাচ্ছে । যারা পড়াশোনা করতে ভালোবাসে তারা বাড়িতে থাকলেও পড়বে, স্কুলে গেলেও পড়বে । যারা স্কুলের বাইরে সেভাবে পড়াশোনায় অভ্যস্ত নয়, স্কুলের নিয়মানুবর্তিতার মধ্যেই লেখাপড়া করতে অভ্যস্ত তাদের জন্য খুব খারাপ হচ্ছে । অনেকের আবার ভালই হচ্ছে । কম পড়াশোনা করে দিব্যি কাটাতে পারছে তারা। একটা ফাঁক তৈরি হয়ে যাচ্ছে তাদের। স্কুল খুললেই চলবে না। সেফটি সিকিউরিটির কথাও মাথায় রাখতে হবে। দেখতে হবে, তারা যাতে কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ওরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। স্কুল বন্ধ করে ওদের ভবিষ্যৎটা ক্ষতিগ্রস্ত করছি কিনা সেটা বিবেচনা করার বিষয় । তবে এক্ষুণি স্কুল খুলে দাও কিংবা বন্ধ থাকুক এটা আমি বলতে পারছি না । কারণ এই হিসেবটা আমার কাছে নেই যে বাচ্চাদের মধ্যে কত শতাংশ আক্রান্ত আর কত শতাংশ নয় ।"

Tolly Stars Reaction on school Opening
তথাগত মুখোপাধ্যায়

আরও পড়ুন : শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে বিশেষ ওয়েবিনার 'উজ্জীবন চর্চা'

অভিনেতা দেবনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সবই চলছে । কেবল স্কুল নয় । যারা ধরুন মাধ্যমিক পাশ করেছে কিংবা ফাইভ সিক্সে পড়ে তারা অন্তত স্কুল কী জিনিস জানে । কিন্তু যারা নার্সারি কিংবা তার থেকে সামান্য উঁচু ক্লাসে পড়ে তারা তো জানেই না স্কুল কী জিনিস । স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া, খেলাধুলো, বন্ধু, দুষ্টুমি এসব ওরা কিছুই জানছে না । একথা ঠিক যে, রিস্ক ফ্যাক্টর আছেই । বাচ্চারা যদি বিপুল পরিমাণে অসুস্থ হতে শুরু করে তা হলে আঙুল উঠবে সরকারের দিকে । তা হলে সেখানেও সেই ভোটের রাজনীতির কথা চলে আসে । আমার কথা হল, যদি সপ্তাহে অন্তত দু'দিন করেও ছেলেমেয়েগুলো স্কুলে যেতে পারত ভাল হত । সব ক্লাস না হয় একদিনে হল না । সাবধানতা সব জায়গায় মেনে সব স্বাভাবিক করার কিংবা বলার চেষ্টা চলছে । তাহলে স্কুলটা খুলে একবার দেখা হোক না । পানশালা খোলা, বাজার দু'দিন খোলা, সিনেমা হল পঞ্চাশ শতাংশ লোকের উপস্থিতিতে চলছে । স্কুলের বেলাতেই দোষ । বাবা-মায়েরা বাইরে থেকে এসে তো পরিষ্কার হয়ে নিজের বাচ্চার কাছেই আগে যায় । বাচ্চারা ঘুরতে যাচ্ছে না? তারা বেরোচ্ছে না? না হলে এমন নিয়ম করা হোক যে বাচ্চাদের রাস্তায় দেখা গেলেই শাস্তি দেওয়া হবে । তা তো হচ্ছে না । শুধু স্কুলের বেলাতেই সব গন্ডগোল।" একই সঙ্গে অনলাইনে পড়াশোনার নানা সমস্যা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "অনলাইনে লেখাপড়ায় তো লেখাপড়ার প্রতি মনও কম ওদের । প্রাইভেট টিউশনও করছে অনলাইনে । এতে মন বসে? চোখের ক্ষতি হচ্ছে, ওবেসিটি বাড়ছে । সমস্যা এহেন অনেক আছে । যারা সরকারি স্কুলে পড়ে তাদের মাইনে দেওয়ার ব্যাপার নেই । যারা বেসরকারি স্কুলে পড়ে তাদের জন্য প্রতি মাসে মাইনে গুনতে হচ্ছে অভিভাবককে। অথচ স্কুলের কোনও খরচই হচ্ছে না তেমন । যারা সামর্থের বাইরে গিয়ে ছেলেমেয়েকে ইংরেজি মাধ্যমে টাকা খরচ করে পড়াচ্ছেন তাদের কথা ভাবুন? অনেকে তো চাকরিও হারিয়েছে এই প্যান্ডেমিকে । কেউ আবার অর্ধেক বেতন পান। তাঁদের চলবে কীভাবে? অন্তত ছেলেমেয়েগুলো স্কুলে গিয়ে কিছু শিখলে তাঁরা মনকে সান্ত্বনা দিতে পারবেন। সবশেষে স্কুল খুলুক এটাই প্রার্থনা।"

Last Updated : Jan 23, 2022, 3:46 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.