কলকাতা : আজ তৃতীয় পর্যায়ের ডায়ালিসিস করা হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে । পাশাপাশি তাঁর শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কোথা থেকে হচ্ছে তা জানার জন্য সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফিও করা হয়েছে বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে ।
মিন্টোপার্কের কাছে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে 25 দিন ধরে ভরতি রয়েছেন সৌমিত্রবাবু । তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আজ ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অরিন্দম কর বলেন, "কোভিড এনকেফ্যালোপ্যাথির কারণে সৌমিত্রবাবুর কনসাসনেস ইমপ্রুভ করছে না । এটা ভালো খবর নয় । এখনও সংকটজনক রয়েছেন তিনি । আজ তাঁর তৃতীয় পর্যায়ের ডায়ালিসিস হয়েছে । বেশ কিছু কোমর্বিডিটির কারণে তাঁর শরীরে যে সব জটিলতা দেখা দিয়েছে, সেগুলি দূর করার চেষ্টা করছি । বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যাতে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে সেই চেষ্টাও চলছে । নিউরোলজিকাল সমস্যাগুলির চিকিৎসা পুরোপুরি করা যাচ্ছে না । আমাদের সব চেষ্টা সত্ত্বেও সৌমিত্রবাবুর কনশাসনেস ইম্প্রুভ করা যাচ্ছে না । এই সমস্যা থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে পারছেন না । এটাই তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা । আমরা আশা করছি যে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে । যদিও বাস্তবে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে । তবে আমরা সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, "সৌমিত্রবাবুর রক্তক্ষরণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না । তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ওঠানামা করছে । আজ চার ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়েছে । তাঁর শরীরে আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঠিক কোথায় হচ্ছে, সেটা দেখার জন্য সিটি অ্যাঞ্জিওগ্রাফিও করা হয়েছে । রক্তক্ষরণ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে । আগামীকাল এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । তাঁর শরীরে ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ স্থিতিশীল রয়েছে । তবে অক্সিজেনের মাত্রা খুব একটা ভালো নয় ।"
6 অক্টোবর সৌমিত্রবাবুর কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । তড়িঘড়ি তাঁকে মিন্টো পার্কের ওই হাসপাতালে ভরতি করা হয় । এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি । হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর ঠিকই ছিলেন । লেখালেখিও করছিলেন । কিন্তু 9 অক্টোবর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে । অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাঁকে ITU-তে স্থানান্তরিত করা হয় । তারপর চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন তিনি । কয়েকদিন আগে তাঁর কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে । ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন । কিন্তু তার মধ্যে 20 অক্টোবর স্নায়ুর সমস্যার জেরে ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় । এখনও ICU-তে রয়েছেন তিনি । এদিকে আজ সকালের দিকে তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অনেকটাই কমে গিয়েছিল । প্লেটলেট দেওয়ার পর হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে । যদিও তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও উদ্বেগে রয়েছেন চিকিৎসকরা ।