কলকাতা : জয়ার এই পদক্ষেপকে বাহবা জানিয়েছেন টলিউড চলচ্চিত্র জগৎ। তাঁদের বক্তব্য, বাংলা ছবির একটা নতুন দিক খুলে দিয়েছেন জয়া। এই বিষয়ে ETV ভারত সিতারার সঙ্গে কথা বললেন পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সায়ন্তন ঘোষাল।
- দুই দশক অ্যানিমেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ধ্রুব। তাঁর দুটি ট্রেজ়ার হান্ট ছবি 'গুপ্তধনের সন্ধানে' এবং 'দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন'-এ দর্শক তাঁর অ্যানিমেটর সত্তার প্রমাণ পেয়েছেন। জয়ার 3D ছবি প্রসঙ্গে ধ্রুব বললেন, "আমার তো মনে হয়, যত নতুন নতুন দিক খোলে গল্প বলার, সেটা সবসময়ই প্রচণ্ড এক্সাইটিং। আমরা যে দর্শকের সামনে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় এনে দিতে পারছি, আশপাশের মানুষ এত কাজ করছেন, তাতে এটাই মনে হচ্ছে যে,আমরা খুব এক্সাইটিং সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এরকম কাজ হলে আগামী দিনে আমাদেরও নতুন কাজ করার দরজা খুলে যাবে। আমার তরফ থেকে আমি সবসময় জয়ার টিমকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। জানি প্রোজেক্ট সত্যিই খুব সফল হবে।" তাহলে কি ধ্রুবর ছবিতে 3D'র টাচ পাওয়া যাবে? কোনও পরিকল্পনা আছে কি? জানতে চাওয়ায় ধ্রুব বলেন, "এই মুহূর্তে সত্যিই আমি কিছু ভাবিনি। কারণ, 3D নিয়ে কাজ করতে গেলে তো 3D-র জন্য উপযুক্ত হতে হয়। এই মুহূর্তে হয়তো যে কাজগুলো করেছি বা আগামী দিনে যেগুলো করব সেই বিষয়গুলো 3D-কে সাপোর্ট করবে না। কিন্তু আগামী দিনে যদি সে সুযোগ আসে নিশ্চয়ই বানাব। 3D ছবি সারা পৃথিবী জুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। সিনেমাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। ছোটোদের কাছে তো এটাই এন্টারটেইনমেন্ট। ওরা তো আর কিছু দেখেনি। আমার তো মনে হয় এটা সেলুলয়েডের সার্বিক উন্নতি। ওই দিকেই যেতে হবে।"
- আর-একজন পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল ইতিমধ্যেই অ্যাডভেঞ্চারমূলক ছবি বানিয়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতে। তাঁর প্রত্যেকটি ছবিতে কম্পিউটার গ্রাফিক্স প্রশংসা পেয়েছে। সে 'যখের ধন'-ই হোক কিংবা 'আলিনগরের গোলকধাঁধা'। আগামীদিনের পরিচালকদের মধ্যে প্রতিশ্রুতিবান সায়ন্তন। জয়ার এই পদক্ষেপে উচ্ছ্বসিত সায়ন্তন ETV ভারত সিতারাকে বললেন, "প্রথমত এটা শুনে খুব ভালো লাগছে, যে জয়া এহসান এরকম একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি প্রথম থেকেই যেহেতু অ্যাডভেঞ্চার ঘেঁষা ছবি করেছি, 3D ছবি তৈরি করার কথা যে ভাবিনি, সেটা বলা ভুল। প্রচুর আলোচনা হয়েছে। তবে কিছু প্রযুক্তিমূলক গোলযোগ কিংবা সমস্যা আছে এখানে। শুধুমাত্র যে শুট করে ফেললাম, সেটা কিন্তু নয়। খরচের একটা ব্যাপার আছে। স্ক্রিপ্টের একটা ব্যাপার থাকে। বিষয়বস্তুর উপর অনেককিছু নির্ভর করে। 3D দু'রকম হয়। একটা হল, 3Dতে শুট করলাম। অন্যটা, 3Dতে রূপান্তরিত করলাম। এরপরেও যেটা আছে, সেটা হল বাংলায় 3D স্ক্রিন ক'টা আছে। কারণ, বাংলা ছবি তৈরি করতে গেলে তো এটা আমাকে মাথায় রাখতে হবে যে, যেই টাকাটা আমি 3D তৈরি করতে গিয়ে খরচ করলাম সেটা উঠে এল কিনা। সত্যি কথা বলতে গেলে, এটা খুব খরচসাপেক্ষ। কিন্তু আমার খুবই ভালো লাগছে, যে জয়াদি নতুন একটা উদ্যোগ নিয়েছে।" পশ্চিমবঙ্গের টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি 3D ছবি তৈরির ক্ষেত্রে কতটা প্রস্তুত প্রশ্ন করায় সায়ন্তন বলেন, "শুধুমাত্র হলের প্রশ্ন নয়, অনেকগুলো প্রযুক্তিমূলক দিক আছে এর মধ্যে। বাজেট তার মধ্যে অন্যতম। প্রযুক্তিমূলক কিছু করতে গেলেই, আমাদের ভাবতে হয়। তবে সেটার কারণ শুধুমাত্র বাজেট নয়। অনেক ব্যাপার আছে এর মধ্যে। 'যখের ধন' করার সময় অনেক ভেবে আমাদের বানাতে হয়েছিল। যেহেতু অনেক ভিজ়ুয়াল ইফেক্টস ছিল। এগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হয়। এই ধরনের ছবি দেখার জন্য আমাদের বাংলার দর্শক প্রস্তুত। দর্শক তো 'অ্যাভেঞ্জার্স' দেখছে। দর্শককে এখানে আন্ডারএস্টিমেট করার কোনও মানেই হয় না। আমরা প্রস্তুত কিনা, সেটাই আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করতে হবে। কারণ, ছবির মান আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনে প্ল্যানে আছি। আমার যা ধারণা, সৃজিতদাও ভেবেছিল কাকাবাবু 3D-তে করবে। এই একই কারণে পিছিয়ে এসেছিল।"
একটি দৈনিক সংবাদপত্রকে জয়া জানিয়েছেন, শুটিং অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। ছবির প্রাণকেন্দ্র কলকাতা শহর। বাংলাদেশে বসেই কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে পুরনো কলকাতাকে। যেহেতু 3D ছবি তাই মুম্বইয়ের একটি টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। সেই সময় প্রাণ বাঁচাতে ওপার বাংলা থেকে শ'য়ে শ'য়ে লোক আশ্রয় নিয়েছিল শহর কলকাতায়। তেমনই দু'জন শরণার্থী মানুষের গল্প বলবে 'অলাতচক্র'। একজন বাংলাদেশী লেখক দানিয়েল ও অন্যজন কর্কটরোগে আক্রান্ত তায়েবার। দেখানো হবে তাঁদের সম্পর্ক। আর দেখানো হবে মুক্তিযুদ্ধের কিছু মনে দাগ কাটা দৃশ্য। 'অলাতচক্র'কে রুপোলি পরদায় তুলে ধরবেন পরিচালক হাবিবুর রহমান।
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">
বাংলাদেশের অতি জনপ্রিয় লেখক আহমেদ সোফার জীবনকাহিনি 'অলাতচক্র'। অনেকে মনে করছেন এটি তাঁর আত্মজীবনীও হতে পারে। ছবিতে অভিনয় করছেন জয়াও। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন মামুনুর রশিদ, আজাদ আব্দুল কালাম, শিল্পী সরকার অপু, নুসরাত জাহান জৈরি, সায়েদ মোশারফ।