কলকাতা : পরিচালক ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন দু'জনেরই জন্ম বাংলাদেশে । কিন্তু, তাঁদের পরিচিতি ও দর্শকদের ভালোবাসা কখনওই এপার বাংলা মেনে চলেনি । যে সব ছবি তাঁরা উপহার দিয়েছেন তা আজও একইভাবে সংরক্ষিত দর্শকদের মনে । যদিও অবহেলায় পড়ে রয়েছে তাঁদের বাড়িগুলি ।
ইতিমধ্যেই ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর পৈত্রিক বাড়িতে একটি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে । বাড়ির বাকি অংশ ভেঙে একটি সাইকেল গ্যারাজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজশাহী সাংস্কৃতিকর্মীরা সাহেব বাজার জ়িরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধন প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন । সেখানে উপস্থিত ছিল ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি, বরেন্দ্র ফিল্ম সোসাইটির সদস্যরা । ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
ঋত্বিক ঘটকের ছবিতে বার বারই উঠে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়, দেশভাগ এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলি । তার মধ্যে 'অযান্ত্রিক', 'সুবর্ণরেখা', 'মেঘে ঢাকা তারা', 'তিতাস একটি নদীর নাম', 'নাগরিক', 'ছিন্নমূল' ছবিগুলি অন্যতম । অন্যদিকে মৃণাল সেন ছিলেন ভারতীয় ছবির প্যারালাল সিনেমার অন্যতম রূপকার । উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রথম ছবি করেছিলেন মৃণাল সেন । এরপর 'নীল আকাশের নিচে' এবং 'বাইশে শ্রাবণ' ছবির মাধ্যমে বহুল পরিচিতি পান তিনি । এঁদের জন্ম বাংলাদেশে হলেও দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতায় ছিলেন তাঁরা ।
ঋত্বিক ঘটকের কলকাতার বাড়িও আজ প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে । অন্যদিকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পদ্মপুকুরের যে বাড়িতে মৃণাল সেন ছিলেন সেটিকে বিক্রি করে দিতে চলেছেন তাঁর ছেলে । ইতিমধ্যেই ঘর থেকে আসবাবপত্র, পুরস্কার, বই সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে ।
এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী মমতা শংকর বলেন, "পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরেই আমি বাংলা চলচ্চিত্রে প্রবেশ করতে পেরেছিলাম । কী বলব বলুন তো ? আমার আর কোনও ভাষা নেই । এটা যদি পৃথিবীর অন্য কোনও জায়গায় হত, তাহলে বাড়িটিকে আর্কাইভ করে রাখা হত । সত্যিই আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি ।"