ETV Bharat / sitara

অবহেলায় পড়ে ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেনের বাড়ি

author img

By

Published : Dec 27, 2019, 4:51 PM IST

ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর পৈত্রিক বাড়িতে একটি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে । বাড়ির বাকি অংশ ভেঙে একটি সাইকেল গ্যারাজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পদ্মপুকুরের যে বাড়িতে মৃণাল সেন ছিলেন সেটিকে বিক্রি করে দিতে চলেছেন তাঁর ছেলে ।

dfg
fg

কলকাতা : পরিচালক ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন দু'জনেরই জন্ম বাংলাদেশে । কিন্তু, তাঁদের পরিচিতি ও দর্শকদের ভালোবাসা কখনওই এপার বাংলা মেনে চলেনি । যে সব ছবি তাঁরা উপহার দিয়েছেন তা আজও একইভাবে সংরক্ষিত দর্শকদের মনে । যদিও অবহেলায় পড়ে রয়েছে তাঁদের বাড়িগুলি ।

ইতিমধ্যেই ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর পৈত্রিক বাড়িতে একটি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে । বাড়ির বাকি অংশ ভেঙে একটি সাইকেল গ্যারাজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজশাহী সাংস্কৃতিকর্মীরা সাহেব বাজার জ়িরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধন প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন । সেখানে উপস্থিত ছিল ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি, বরেন্দ্র ফিল্ম সোসাইটির সদস্যরা । ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

sdf
ঋত্বিক ঘটকের বাংলাদেশের বাড়ি (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক)

ঋত্বিক ঘটকের ছবিতে বার বারই উঠে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়, দেশভাগ এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলি । তার মধ্যে 'অযান্ত্রিক', 'সুবর্ণরেখা', 'মেঘে ঢাকা তারা', 'তিতাস একটি নদীর নাম', 'নাগরিক', 'ছিন্নমূল' ছবিগুলি অন্যতম । অন্যদিকে মৃণাল সেন ছিলেন ভারতীয় ছবির প্যারালাল সিনেমার অন্যতম রূপকার । উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রথম ছবি করেছিলেন মৃণাল সেন । এরপর 'নীল আকাশের নিচে' এবং 'বাইশে শ্রাবণ' ছবির মাধ্যমে বহুল পরিচিতি পান তিনি । এঁদের জন্ম বাংলাদেশে হলেও দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতায় ছিলেন তাঁরা ।

df
রাজশাহীতে চলছে প্রতিবাদ (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক))

ঋত্বিক ঘটকের কলকাতার বাড়িও আজ প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে । অন্যদিকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পদ্মপুকুরের যে বাড়িতে মৃণাল সেন ছিলেন সেটিকে বিক্রি করে দিতে চলেছেন তাঁর ছেলে । ইতিমধ্যেই ঘর থেকে আসবাবপত্র, পুরস্কার, বই সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে ।

df
ঋত্বিক ঘটকের বাংলাদেশের বাড়ি (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক)

এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী মমতা শংকর বলেন, "পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরেই আমি বাংলা চলচ্চিত্রে প্রবেশ করতে পেরেছিলাম । কী বলব বলুন তো ? আমার আর কোনও ভাষা নেই । এটা যদি পৃথিবীর অন্য কোনও জায়গায় হত, তাহলে বাড়িটিকে আর্কাইভ করে রাখা হত । সত্যিই আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি ।"

দেখুন ভিডিয়ো

কলকাতা : পরিচালক ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন দু'জনেরই জন্ম বাংলাদেশে । কিন্তু, তাঁদের পরিচিতি ও দর্শকদের ভালোবাসা কখনওই এপার বাংলা মেনে চলেনি । যে সব ছবি তাঁরা উপহার দিয়েছেন তা আজও একইভাবে সংরক্ষিত দর্শকদের মনে । যদিও অবহেলায় পড়ে রয়েছে তাঁদের বাড়িগুলি ।

ইতিমধ্যেই ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীর পৈত্রিক বাড়িতে একটি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে । বাড়ির বাকি অংশ ভেঙে একটি সাইকেল গ্যারাজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজশাহী সাংস্কৃতিকর্মীরা সাহেব বাজার জ়িরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধন প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন । সেখানে উপস্থিত ছিল ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি, বরেন্দ্র ফিল্ম সোসাইটির সদস্যরা । ওই বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

sdf
ঋত্বিক ঘটকের বাংলাদেশের বাড়ি (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক)

ঋত্বিক ঘটকের ছবিতে বার বারই উঠে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়, দেশভাগ এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলি । তার মধ্যে 'অযান্ত্রিক', 'সুবর্ণরেখা', 'মেঘে ঢাকা তারা', 'তিতাস একটি নদীর নাম', 'নাগরিক', 'ছিন্নমূল' ছবিগুলি অন্যতম । অন্যদিকে মৃণাল সেন ছিলেন ভারতীয় ছবির প্যারালাল সিনেমার অন্যতম রূপকার । উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রথম ছবি করেছিলেন মৃণাল সেন । এরপর 'নীল আকাশের নিচে' এবং 'বাইশে শ্রাবণ' ছবির মাধ্যমে বহুল পরিচিতি পান তিনি । এঁদের জন্ম বাংলাদেশে হলেও দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতায় ছিলেন তাঁরা ।

df
রাজশাহীতে চলছে প্রতিবাদ (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক))

ঋত্বিক ঘটকের কলকাতার বাড়িও আজ প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে । অন্যদিকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পদ্মপুকুরের যে বাড়িতে মৃণাল সেন ছিলেন সেটিকে বিক্রি করে দিতে চলেছেন তাঁর ছেলে । ইতিমধ্যেই ঘর থেকে আসবাবপত্র, পুরস্কার, বই সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে ।

df
ঋত্বিক ঘটকের বাংলাদেশের বাড়ি (ফোটো সৌজন্য : ফেসবুক)

এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী মমতা শংকর বলেন, "পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরেই আমি বাংলা চলচ্চিত্রে প্রবেশ করতে পেরেছিলাম । কী বলব বলুন তো ? আমার আর কোনও ভাষা নেই । এটা যদি পৃথিবীর অন্য কোনও জায়গায় হত, তাহলে বাড়িটিকে আর্কাইভ করে রাখা হত । সত্যিই আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি ।"

দেখুন ভিডিয়ো
Intro:অমিত চক্রবর্তী, কলকাতা: চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন দুজনেই জন্মেছিলেন বাংলাদেশ কিন্তু তাদের পরিচিতি এবং সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের ভালোবাসা কোনো সময়তেই এপার বাংলা ওপার বাংলার মেনে চলেনি। বিশ্ব বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সমসাময়িক হলেও,দুজনেই সমান্তরালভাবে কাজ করেছেন বাংলা এবং হিন্দি তে। এবং যে সকল ছায়াছবি তারা দুজনেই দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন তা আজও ইতিহাসের খাতায় রয়ে গেছে। একদিকে ঋত্বিক ঘটকের ছবিতে যেখানে বারবার উঠে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়, দেশভাগ এবং নারী অধিকারের সমর্থন চিরাচরিত এবং সাবলীল প্রচেষ্টা। অন্যদিকে মৃণাল সেন ছিলেন ভারতীয় ছবির প্যারালাল সিনেমার অন্যতম রূপকার।যার শুরু হয়েছিল এই পশ্চিমবাংলাতে ১৯৫০ সালে।যখন বাণিজ্য ধর্মী ছবির পাশাপাশি বিষয় ভিত্তিক ছবি ও প্রাধান্য পেতে শুরু করে। মৃণাল সেন তাঁর প্রথম ছবি করেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ১৯৫৫ সালে। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পেলেও সে ভাবে দর্শক প্রশংসা পায়নি। এরপর নীল আকাশের নিচে এবং বাইশে শ্রাবণ তাকে প্রথম দর্শকদের মধ্যে পরিচিতি গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এরপরই ভারত সরকারের সহায়তায় তিনি পরিচালনা করেন ভুবন সোম। যে ছবি ভারতীয় চলচ্চিত্রের নতুন ধারার ছবি হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকে।

আর অন্যদিকে ঋত্বিক ঘটক ও দর্শকদের উপহার দিতে থাকেন নাগরিক,অযান্ত্রিক, সুবর্ণরেখা, মেঘে ঢাকা তারা, তিতাস একটি নদীর নাম, নাগরিক, ছিন্নমূল এর মতন অসংখ্য ভিন্নধর্মী সামাজিক বিষয় অবলম্বনে একের পর এক সেরা এবং ঐতিহাসিক ছবি। এই দুই মহান পরিচালকের জন্ম বাংলাদেশে হলেও তাদের শেষ জীবন পর্যন্ত তারা এই কলকাতা শহরেই ছিলেন ।এবং তাদের কাজ ছড়িয়ে রয়েছে বাঙালি তথা ভারতবাসীর মনে।

সত্যজিৎ রায় এর পাশাপাশি এই দুই বিশ্ব বরেণ্য পরিচালক ভারতীয় তথা বাংলা সিনেমা কে বিশ্ব সিনেমার সামনে স্বগৌরবে তুলে ধরেছিলেন। সেই দুই বিখ্যাত মানুষেরই বসতবাড়ি কোন রকম ভাবেই সংরক্ষণ করার বিষয়ে সরকার তথা তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আগ্রহ লক্ষ করা গেল না। ইতিমধ্যেই ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহী জেলার পৈত্রিক বাড়িতে একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সম্প্রতিবাংলাদেশ এর রাজশাহী জেলার পক্ষ থেকে সেই বসতবাড়ির বাকি অংশ ভেঙে ফেলে সেখানে একটি সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজশাহী সংস্কৃতিকর্মীরা,নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধন প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। যেখানে ঋত্বিক ঘটক ফিলম সোসাইটি, রাজশাহী ফিলম সোসাইটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এবং বরেন্দ্র ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে একযোগে সরকারের কাছে এই বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়। ঋত্বিক ঘটকের কলকাতার বাড়ি আজ প্রায় ভগ্নস্তূপে আকার নিয়েছে। তার পরিবারের বংশধরেরা এখনো জীবিত রয়েছেন এবং নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন যে তাদের সেই ঐতিহাসিক বাড়িটিকে সংরক্ষণ করবার। আর অন্যদিকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পদ্মপুকুরের যে বাড়িতে মৃণাল সেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, সেটিকে তার আমেরিকা প্রবাসী ছেলে সেটিকে বিক্রি করে দিতে চলেছেন। ইতিমধ্যেই ঘরের থেকে সমস্ত আসবাবপত্র থেকে শুরু করে পুরস্কার, বই সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে।

দুই বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক এর বসতবাড়ি কে এভাবে ভগ্নস্তূপ এবং বিক্রি করে দেওয়া প্রসঙ্গে অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর জানালেন," পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরেই আমি বাংলা চলচ্চিত্রে প্রবেশ করতে পেরেছিলাম। কি বলব বলুন তো। এছাড়া আমার আর কোন ভাষা নেই। এটা যদি পৃথিবীর অন্য কোন জায়গায় হত, তাহলে সেটাকে আর্কাইভ করে রাখা হতো। সেই জায়গাটাকে মন্দির করে রাখা হতো।সত্যিই আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি"।



Body:ভিডিও কপি


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.