ETV Bharat / science-and-technology

বৃষ্টির গন্ধ ভালো লাগে কেন !

author img

By

Published : Oct 15, 2020, 7:00 AM IST

Updated : Feb 16, 2021, 7:31 PM IST

বর্ষণকালীন প্রকৃতির যে সুগন্ধ, তার একটা খটমট নামও রেখেছেন বিজ্ঞানীরা ৷ নাম হল "পেট্রিকো" ৷ পেট্রিকোর উৎস সন্ধানে গবেষণা শুরু করে মিলেছে বহু অবাক করা উত্তর ৷

Why do you like the smell of rain!
Why do you like the smell of rain!

বৃষ্টি যেমন কৃষকের চাই, তেমন কবিরও প্রয়োজন ৷ যেহেতু জলই জীবন, ফসল উৎপাদনে সহায়ক ৷ তবে, কবির "ফসল" কবিতার ক্ষেত্রে প্যাশানটা বড় বিষয় ৷ সেই প্যাশান উসকে দিতে না-কি ওস্তাদ বৃষ্টির গন্ধ ! কেবল কবিই বা কেন, সকলেই মরসুমের নতুন বৃষ্টির গন্ধ ভালোবাসে ৷ যাকে চেনা বাংলায় বলে সোঁদা মাটির গন্ধ ! কিন্তু বৃষ্টির গন্ধ কেন ভালো লাগে ? ভেবে দেখেছি কি প্রকৃতির প্রকৃত রহস্যটা কী ?

সম্প্রতি জানা গিয়েছে, এর পেছনে রয়েছে বৃষ্টির সময় চলা একাধিক রাসায়নিক বিক্রিয়া ৷ অন্যতম কারণ বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া ৷ আসলে এইসব ব্যাকটেরিয়া, সবুজ গাছপালা, এবং বিদ্যুৎ চমকানো- সবটা মিলে বৃষ্টির সময়কার ভেজা মাটি ও নির্মল বাতাসের মনোরম অনুভূতি তৈরি হয় মানুষের মনে ৷ সবটা মিলিয়ে বর্ষণকালীন প্রকৃতির যে সুগন্ধ, তার একটা খটমট নামও রেখেছেন বিজ্ঞানীরা ৷ নাম হল "পেট্রিকো" ৷ পেট্রিকোর উৎস সন্ধানেই গবেষণা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা ৷

এইখানে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া ভালো, মূলত তিন জিনিসের ফল বৃষ্টির অদ্বিতীয় গন্ধ ৷ সেই তিন হল, ভেজা মাটি, গাছ ও বজ্রপাত ৷

ভেজা মাটি

সেই 1960 সালেই অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষক জানিয়েছিলেন, বৃষ্টি যখন প্রথমবার শুষ্ক মাটি স্পর্ষ করে তখন যে সোঁদা গন্ধ তৈরি হয়, তা এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট গন্ধ ৷ বিজ্ঞানীদরে কথায়, আপনি যখন বৃষ্টির গন্ধ পান তখন আসলে ব্যকটেরিয়ার তৈরি করা অণুর গন্ধ পান ৷ অণুর নাম জিওসমিন ৷ যা সাধারণত থাকে উর্বর মাটিতে ৷ উল্লেখ্য, বর্তমান সুগন্ধি তৈরির কাঁচামাল হিসেবে জিওসমিন বিখ্যাত ৷

গাছ

গবেষকদের মতে, গাছে থাকে সুগন্ধি তৈরিতে সক্ষম বহুরকম রাসায়নিক ৷ গাছে, পাতায় থাকা সেই অণুগুলিতে বৃষ্টি পড়লে তা আঘাত প্রাপ্ত হয়, এবং বাতাসে ডানা মেলে মানুষের নাক অবধি পৌঁছায় ৷ বিজ্ঞানীরা আরও জানান, শুকনো ভেষজ গুড়ো করলে যেমন তা বাতাসে ছড়ায়, অতিরিক্ত ঘ্রাণ পাওয়া যায়, সেইভাবেই দীর্ঘ শুষ্ক মরসুমের পর বৃষ্টি হলে গাছের শুকিয়ে যাওয়া অংশগুলি থেকে নতুন সুবাস তৈরি হয় ৷ এইসঙ্গে বৃষ্টির সময় যেহেতু গাছ নয়া সজীবতা পায়, ফলে সে নানা রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সুঘ্রাণ ছড়াতে থাকে ৷

বজ্রপাত

এই ঘটনা রীতিমতো কৌতূহলের ৷ বৃষ্টির সময় সুঘ্রাণ তৈরিতে ভূমিকা রয়েছে বজ্রপাতেরও ! বিজ্ঞানীদের মতে, একটানা বৃষ্টির মধ্যে মাঝেমাঝেই বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক আবেশ তৈরি হয় ৷ এর ফলে ওজন গ্যাসের গন্ধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে ৷ যা বৃষ্টির গন্ধকে নতুন মাত্রা দেয় ৷

তাছাড়া ঝড়ে, বৃষ্টিতে বাতাস স্বচ্ছ হয়ে ওঠে, এর ফলেও কিছু সুগন্ধ ছড়ায় বাতাসে ৷ আর মানুষের ভালো লাগে, কবির কবিতা পায় ৷ কিন্তু বৃষ্টির সুগন্ধের আবার নাম ! "পেট্রিকো" মানে কী ?

1964 সালে বিজ্ঞানী ইসবেল জয় বেয়ার ও রিচার্ড থমাসের এক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় প্রখ্যাত নেচার পত্রিকায় ৷ প্রবন্ধের নাম ছিল "নেচার অব আর্গলেশাস ওডর" ৷ সেখানেই প্রথমবার "পেট্রিকো" শব্দটি ব্যবহৃত হয় ৷ গ্রিক শব্দ "পেত্রোস" ও "ইকোর" থেকে উদ্ভূত শব্দ ৷ পেত্রোসের অর্থ পাথর আর ইকোর মানে হল ঈশ্বরের শিরায় প্রবাহিত তরল ৷ সেই তরলই কি বৃষ্টির সময় আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ! মুগ্ধ হয় মানুষ !

বৃষ্টি যেমন কৃষকের চাই, তেমন কবিরও প্রয়োজন ৷ যেহেতু জলই জীবন, ফসল উৎপাদনে সহায়ক ৷ তবে, কবির "ফসল" কবিতার ক্ষেত্রে প্যাশানটা বড় বিষয় ৷ সেই প্যাশান উসকে দিতে না-কি ওস্তাদ বৃষ্টির গন্ধ ! কেবল কবিই বা কেন, সকলেই মরসুমের নতুন বৃষ্টির গন্ধ ভালোবাসে ৷ যাকে চেনা বাংলায় বলে সোঁদা মাটির গন্ধ ! কিন্তু বৃষ্টির গন্ধ কেন ভালো লাগে ? ভেবে দেখেছি কি প্রকৃতির প্রকৃত রহস্যটা কী ?

সম্প্রতি জানা গিয়েছে, এর পেছনে রয়েছে বৃষ্টির সময় চলা একাধিক রাসায়নিক বিক্রিয়া ৷ অন্যতম কারণ বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া ৷ আসলে এইসব ব্যাকটেরিয়া, সবুজ গাছপালা, এবং বিদ্যুৎ চমকানো- সবটা মিলে বৃষ্টির সময়কার ভেজা মাটি ও নির্মল বাতাসের মনোরম অনুভূতি তৈরি হয় মানুষের মনে ৷ সবটা মিলিয়ে বর্ষণকালীন প্রকৃতির যে সুগন্ধ, তার একটা খটমট নামও রেখেছেন বিজ্ঞানীরা ৷ নাম হল "পেট্রিকো" ৷ পেট্রিকোর উৎস সন্ধানেই গবেষণা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা ৷

এইখানে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া ভালো, মূলত তিন জিনিসের ফল বৃষ্টির অদ্বিতীয় গন্ধ ৷ সেই তিন হল, ভেজা মাটি, গাছ ও বজ্রপাত ৷

ভেজা মাটি

সেই 1960 সালেই অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষক জানিয়েছিলেন, বৃষ্টি যখন প্রথমবার শুষ্ক মাটি স্পর্ষ করে তখন যে সোঁদা গন্ধ তৈরি হয়, তা এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট গন্ধ ৷ বিজ্ঞানীদরে কথায়, আপনি যখন বৃষ্টির গন্ধ পান তখন আসলে ব্যকটেরিয়ার তৈরি করা অণুর গন্ধ পান ৷ অণুর নাম জিওসমিন ৷ যা সাধারণত থাকে উর্বর মাটিতে ৷ উল্লেখ্য, বর্তমান সুগন্ধি তৈরির কাঁচামাল হিসেবে জিওসমিন বিখ্যাত ৷

গাছ

গবেষকদের মতে, গাছে থাকে সুগন্ধি তৈরিতে সক্ষম বহুরকম রাসায়নিক ৷ গাছে, পাতায় থাকা সেই অণুগুলিতে বৃষ্টি পড়লে তা আঘাত প্রাপ্ত হয়, এবং বাতাসে ডানা মেলে মানুষের নাক অবধি পৌঁছায় ৷ বিজ্ঞানীরা আরও জানান, শুকনো ভেষজ গুড়ো করলে যেমন তা বাতাসে ছড়ায়, অতিরিক্ত ঘ্রাণ পাওয়া যায়, সেইভাবেই দীর্ঘ শুষ্ক মরসুমের পর বৃষ্টি হলে গাছের শুকিয়ে যাওয়া অংশগুলি থেকে নতুন সুবাস তৈরি হয় ৷ এইসঙ্গে বৃষ্টির সময় যেহেতু গাছ নয়া সজীবতা পায়, ফলে সে নানা রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সুঘ্রাণ ছড়াতে থাকে ৷

বজ্রপাত

এই ঘটনা রীতিমতো কৌতূহলের ৷ বৃষ্টির সময় সুঘ্রাণ তৈরিতে ভূমিকা রয়েছে বজ্রপাতেরও ! বিজ্ঞানীদের মতে, একটানা বৃষ্টির মধ্যে মাঝেমাঝেই বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক আবেশ তৈরি হয় ৷ এর ফলে ওজন গ্যাসের গন্ধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে ৷ যা বৃষ্টির গন্ধকে নতুন মাত্রা দেয় ৷

তাছাড়া ঝড়ে, বৃষ্টিতে বাতাস স্বচ্ছ হয়ে ওঠে, এর ফলেও কিছু সুগন্ধ ছড়ায় বাতাসে ৷ আর মানুষের ভালো লাগে, কবির কবিতা পায় ৷ কিন্তু বৃষ্টির সুগন্ধের আবার নাম ! "পেট্রিকো" মানে কী ?

1964 সালে বিজ্ঞানী ইসবেল জয় বেয়ার ও রিচার্ড থমাসের এক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় প্রখ্যাত নেচার পত্রিকায় ৷ প্রবন্ধের নাম ছিল "নেচার অব আর্গলেশাস ওডর" ৷ সেখানেই প্রথমবার "পেট্রিকো" শব্দটি ব্যবহৃত হয় ৷ গ্রিক শব্দ "পেত্রোস" ও "ইকোর" থেকে উদ্ভূত শব্দ ৷ পেত্রোসের অর্থ পাথর আর ইকোর মানে হল ঈশ্বরের শিরায় প্রবাহিত তরল ৷ সেই তরলই কি বৃষ্টির সময় আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ! মুগ্ধ হয় মানুষ !

Last Updated : Feb 16, 2021, 7:31 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.