ETV Bharat / science-and-technology

উষ্ণায়নে বিপন্ন প্রাণ, বরফ গলে খাদ্য সংকটে মেরুপ্রদেশের ভালুক ; কী বলছেন বিজ্ঞানীরা ? - Greenland

উষ্ণায়নের ফলে সমস্যায় বন্যপ্রাণ ৷ সংকটের মুখে গোটা বিশ্বও ৷

উষ্ণায়নে বিপন্ন প্রাণ, বরফ গলে খাদ্য সংকটে মেরুপ্রদেশের ভালুক ; কী বলছেন বিজ্ঞানীরা ?
author img

By

Published : Aug 5, 2019, 7:07 AM IST

Updated : Feb 16, 2021, 7:51 PM IST

নুক, 5 অগাস্ট : কিছুদিন আগেই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল ৷ মর্মস্পর্শী বললে হয়তো ভুল হবে না ৷ বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সামিল একটি মেরু ভালুকের ভিডিয়ো সেটি ৷ অনাহারে ভুগছে সে ৷ হাড় জিরজিরে ৷ খাবারের সন্ধানে হানা দিয়েছে লোকালয়ে৷ কিন্তু কেন এই অবস্থা মেরুপ্রদেশের প্রাণীটির৷ উত্তর একটাই, বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ৷

প্রতিদিন প্রায় 12,325 ক্যালোরি দরকার মেরু প্রদেশের এই ভালুকটির ৷ দিনের 35 শতাংশ সময় সক্রিয় থাকে ৷ মেরু ভালুকের মূল খাদ্য বলতে সিল ৷ তাতেই মেটে প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চাহিদা ৷ কিন্তু মেরু প্রদেশে বরফ গলায় বাড়ছে সমস্যা৷

image, polar bear
IUCN-এর তালিকায় বিপন্ন প্রাণীটির সংখ্যা কমছে ক্রমশ ৷

অধ্যাপক ব্লেইন গ্রিফিন জানান, যত বেশি বরফ গলছে, তত বেশি সাঁতরে শিকার ধরতে হচ্ছে ভালুকগুলিকে ৷ তত বেশি ক্যালোরি ক্ষয় হচ্ছে ৷ তত বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হচ্ছে ৷ কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে তো সিলের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে ৷ বিপন্ন হচ্ছে খাদ্যশৃঙ্খল ৷ একটি স্ত্রী ভালুক যদি 9 দিনে 685 কিমি পর্যন্ত রাস্তা পাড়ি দেয় খাবারের সন্ধানে, প্রায় 22 কিলোগ্রামের কাছাকাছি ওজন কমে যেতে পারে ৷ অনেক ক্ষেত্রেই মায়ের থেকে স্তন্যপান করতে না পেরে পথেই মারা যাচ্ছে শিশু ভালুকও ৷ IUCN-এর তালিকায় বিপন্ন প্রাণীটির সংখ্যা কমছে ক্রমশ ৷

  • "When scientists say bears are going extinct, I want people to realize what it looks like," says photographer Paul Nicklen pic.twitter.com/foBaqXqOQ4

    — National Geographic (@NatGeo) December 9, 2017 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

গ্রিফিনের মতোই আরও বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের দাবি, যত বেশি সাঁতার কাটবে প্রাণীগুলি, তত ছোটো হবে আকার ৷ কমবে প্রজননের হার ৷ মৃত্যুও হতে পারে ৷ হাডসন বে-র পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ বেউফোর্ট সাগরে এই প্রবণতা ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে ৷ যত বেশি বরফ গলবে, না খেতে পেয়ে মারা যাবে প্রাণীগুলি ৷

10 দিনে 18 কিলোগ্রামের কাছাকাছি ওজন কমে যায় তাদের, জানিয়েছেন পোলার বিয়ার ইন্টারন্যাশনালের বিজ্ঞানী স্টিভেন আমস্ট্রাপ ৷ বরফ গলায় 2050 সালের মধ্যে মেরুপ্রদেশে ভালুক সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ কমে যাবে, 2010 সালে স্টিভেনের গবেষণায় ছিল এই তথ্য ৷ মার্কিন ভূতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণও বলছে, যে হারে বরফ গলে যাচ্ছে মেরু প্রদেশে, ওরা সঙ্কটে পড়ছে, 2050 সালের মধ্যে শুধুই ছবিতে দেখা যাবে প্রাণীগুলিকে ।

ক্যানাডার অ্যালবের্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মেরু ভালুক বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু ডেরোচার বলছেন, একটা ভালুক 95000 বর্গ মাইল পর্যন্ত অতিক্রম করতেই পারে ৷ তবে যতটা ওজন কমে যায়, আবার তত তাড়াতাড়িই ওজন বাড়িয়েও নিতে পারে সিল শিকার করে ৷ কিন্তু সিলই যদি না থাকে, প্রাণীগুলি খাবে কী ?

সুমেরু মহাসাগর থেকে 1500 কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রাশিয়ার উত্তরে সাইবেরিয়ার একটি শহরে মেরু ভালুককে খাবারের জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরতে দেখা গেছিল সম্প্রতি । কখনও জঞ্জালের স্তূপে কখনও বা শিল্প শহরটির ইতিউতি ঘুরছিল সে । সুমেরু বিন্দুর উপর দিকে থাকা, পৃথিবীর মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি শহর নরিলিস্ক । উত্তর মেরুর শেষ সীমানার এই শহরের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনও শহরের স্থল-সংযোগ নেই । রাশিয়ার সাইবেরিয়ার অন্তর্গত এই শহরটি সুমেরু বৃত্ত থেকে 400 কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত । শহরটিতে 1 লাখ 80 হাজার মানুষ বাস করেন । গত চার দশকেরও বেশি সময়ে সেই অঞ্চলে কখনও মেরু ভালুকের দেখা মেলেনি, এরপরই শুরু হয় বিতর্ক ৷ খাবার খুঁজতেই শহরাঞ্চলে এসে পড়েছিল, না পথ হারিয়ে এসে পড়েছিল ভালুকটি? বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রথমটাই ৷​

প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা জানাচ্ছে বিশ্বব্যাপী আপাতত 22-31 হাজার মেরু ভালুক রয়েছে । বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এই শ্বেত ভালুকরা তাদের বাসস্থান হারাচ্ছে, খাবার পাচ্ছে না । যত বেশি করে গাছ কাটা পড়ছে, বাড়ছে ক্লোরোফ্লুওরো কার্বনের পরিমাণ ৷ কার্বন নিঃসরণ কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিপদটা কিন্তু আসলে প্রত্যেকেরই ৷ সারা বিশ্বে আবহাওয়ার পরিবর্তন যদি আটকানো না যায়, বিশ্বজুড়ে বরফ যদি গলতেই থাকে, তবে একদিন গোটা বিশ্বই জলের তলায় চলে যাবে । এক এক করে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়ে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাব সকলেই ।

নুক, 5 অগাস্ট : কিছুদিন আগেই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল ৷ মর্মস্পর্শী বললে হয়তো ভুল হবে না ৷ বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সামিল একটি মেরু ভালুকের ভিডিয়ো সেটি ৷ অনাহারে ভুগছে সে ৷ হাড় জিরজিরে ৷ খাবারের সন্ধানে হানা দিয়েছে লোকালয়ে৷ কিন্তু কেন এই অবস্থা মেরুপ্রদেশের প্রাণীটির৷ উত্তর একটাই, বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ৷

প্রতিদিন প্রায় 12,325 ক্যালোরি দরকার মেরু প্রদেশের এই ভালুকটির ৷ দিনের 35 শতাংশ সময় সক্রিয় থাকে ৷ মেরু ভালুকের মূল খাদ্য বলতে সিল ৷ তাতেই মেটে প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চাহিদা ৷ কিন্তু মেরু প্রদেশে বরফ গলায় বাড়ছে সমস্যা৷

image, polar bear
IUCN-এর তালিকায় বিপন্ন প্রাণীটির সংখ্যা কমছে ক্রমশ ৷

অধ্যাপক ব্লেইন গ্রিফিন জানান, যত বেশি বরফ গলছে, তত বেশি সাঁতরে শিকার ধরতে হচ্ছে ভালুকগুলিকে ৷ তত বেশি ক্যালোরি ক্ষয় হচ্ছে ৷ তত বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হচ্ছে ৷ কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে তো সিলের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে ৷ বিপন্ন হচ্ছে খাদ্যশৃঙ্খল ৷ একটি স্ত্রী ভালুক যদি 9 দিনে 685 কিমি পর্যন্ত রাস্তা পাড়ি দেয় খাবারের সন্ধানে, প্রায় 22 কিলোগ্রামের কাছাকাছি ওজন কমে যেতে পারে ৷ অনেক ক্ষেত্রেই মায়ের থেকে স্তন্যপান করতে না পেরে পথেই মারা যাচ্ছে শিশু ভালুকও ৷ IUCN-এর তালিকায় বিপন্ন প্রাণীটির সংখ্যা কমছে ক্রমশ ৷

  • "When scientists say bears are going extinct, I want people to realize what it looks like," says photographer Paul Nicklen pic.twitter.com/foBaqXqOQ4

    — National Geographic (@NatGeo) December 9, 2017 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

গ্রিফিনের মতোই আরও বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের দাবি, যত বেশি সাঁতার কাটবে প্রাণীগুলি, তত ছোটো হবে আকার ৷ কমবে প্রজননের হার ৷ মৃত্যুও হতে পারে ৷ হাডসন বে-র পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ বেউফোর্ট সাগরে এই প্রবণতা ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে ৷ যত বেশি বরফ গলবে, না খেতে পেয়ে মারা যাবে প্রাণীগুলি ৷

10 দিনে 18 কিলোগ্রামের কাছাকাছি ওজন কমে যায় তাদের, জানিয়েছেন পোলার বিয়ার ইন্টারন্যাশনালের বিজ্ঞানী স্টিভেন আমস্ট্রাপ ৷ বরফ গলায় 2050 সালের মধ্যে মেরুপ্রদেশে ভালুক সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ কমে যাবে, 2010 সালে স্টিভেনের গবেষণায় ছিল এই তথ্য ৷ মার্কিন ভূতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণও বলছে, যে হারে বরফ গলে যাচ্ছে মেরু প্রদেশে, ওরা সঙ্কটে পড়ছে, 2050 সালের মধ্যে শুধুই ছবিতে দেখা যাবে প্রাণীগুলিকে ।

ক্যানাডার অ্যালবের্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মেরু ভালুক বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু ডেরোচার বলছেন, একটা ভালুক 95000 বর্গ মাইল পর্যন্ত অতিক্রম করতেই পারে ৷ তবে যতটা ওজন কমে যায়, আবার তত তাড়াতাড়িই ওজন বাড়িয়েও নিতে পারে সিল শিকার করে ৷ কিন্তু সিলই যদি না থাকে, প্রাণীগুলি খাবে কী ?

সুমেরু মহাসাগর থেকে 1500 কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রাশিয়ার উত্তরে সাইবেরিয়ার একটি শহরে মেরু ভালুককে খাবারের জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরতে দেখা গেছিল সম্প্রতি । কখনও জঞ্জালের স্তূপে কখনও বা শিল্প শহরটির ইতিউতি ঘুরছিল সে । সুমেরু বিন্দুর উপর দিকে থাকা, পৃথিবীর মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি শহর নরিলিস্ক । উত্তর মেরুর শেষ সীমানার এই শহরের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনও শহরের স্থল-সংযোগ নেই । রাশিয়ার সাইবেরিয়ার অন্তর্গত এই শহরটি সুমেরু বৃত্ত থেকে 400 কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত । শহরটিতে 1 লাখ 80 হাজার মানুষ বাস করেন । গত চার দশকেরও বেশি সময়ে সেই অঞ্চলে কখনও মেরু ভালুকের দেখা মেলেনি, এরপরই শুরু হয় বিতর্ক ৷ খাবার খুঁজতেই শহরাঞ্চলে এসে পড়েছিল, না পথ হারিয়ে এসে পড়েছিল ভালুকটি? বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রথমটাই ৷​

প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা জানাচ্ছে বিশ্বব্যাপী আপাতত 22-31 হাজার মেরু ভালুক রয়েছে । বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এই শ্বেত ভালুকরা তাদের বাসস্থান হারাচ্ছে, খাবার পাচ্ছে না । যত বেশি করে গাছ কাটা পড়ছে, বাড়ছে ক্লোরোফ্লুওরো কার্বনের পরিমাণ ৷ কার্বন নিঃসরণ কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিপদটা কিন্তু আসলে প্রত্যেকেরই ৷ সারা বিশ্বে আবহাওয়ার পরিবর্তন যদি আটকানো না যায়, বিশ্বজুড়ে বরফ যদি গলতেই থাকে, তবে একদিন গোটা বিশ্বই জলের তলায় চলে যাবে । এক এক করে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়ে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাব সকলেই ।

Samastipur (Bihar), Aug 05 (ANI): Local lives affected due to flood situation in Bihar. Their houses damaged due to waterlogging caused by heavy rains in Samastipur. They displaced from their houses and shifted to temporary huts. Around 1.25 lakh people have evacuated from multiple districts in the state so far. However, a total of 1,243 villages are still facing the brunt of the calamity.
Last Updated : Feb 16, 2021, 7:51 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.