ঢাকা, 15 মে: ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে তছনছ পশ্চিম মায়ানমার ৷ মায়ানমারের সিতওয়ে শহরে রবিবার দুপুরে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়টি ৷ যার জেরে 700-র বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি সবরকম সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে গিয়েছে পশ্চিম মায়ানমারের সমুদ্র উপকূলের শহরগুলিতে ৷ সংবাদ সংস্থা এপি-র খবর অনুযায়ী, উদ্ধারকারী রাকিন ইয়ুথ ফিলাট্রফিক অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে মায়ানমার উপকূল 3.6 মিটার (12 ফুট) গভীর জলে আটকে থাকা প্রায় এক হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে ৷ তবে, কোনও প্রাণহানি হয়েছে কিনা এখনও জানা যায়নি ৷
মোকার প্রভাবে বহু মানুষ আহত হয়েছেন ৷ সংখ্যাটা সাতশোর বেশি বলে জানা গিয়েছে ৷ আশ্রয় স্থলগুলিতে প্রায় 20 হাজারের উপর মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ৷ পাশাপাশি, বৌদ্ধ মঠগুলিতেও কয়েক হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ৷ রবিবার রাকিন রাজ্যের সিতওয়ে শহরে দুপুরের পর আছড়ে পড়ে ৷ ঝড়ের সময় থেকে বহু মানুষ বাড়ির উঁচু জায়গায় এবং ছাদে আশ্রয় নিয়েছে ৷ সমুদ্রের জল স্থলভাগে প্রবেশ করেছে ৷ সোমবার সকালেও জলস্তর প্রায় 1.5 মিটার অর্থাৎ, প্রায় 5 ফুট পর্যন্ত ছিল ৷
মায়ানমারের আবহাওয়া দফতরে জানিয়েছে, 200-210 কিলোমিটার গতিবেগে ঘূর্ণিঝড় মোকার ল্যান্ডফল হয়েছে ৷ আর সেই সময় বহু বাড়ির ছাদের চাল উড়ে গিয়েছে ৷ তবে কোনও কোনও সূত্রের দাবি, আছড়ে পড়ার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় 260 কিলোমিটারের আশপাশে ছিল । এই দাবি সঠিক কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ঝডের দাপটে বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনাও সামনে এসেছে ৷ বিদ্যুতের খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার ও রাস্তার গাছ ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ৷ সিতওয়ে, গও-সহ প্রায় চারটি শহর মোকার প্রভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে মায়ানমার সেনার জনসংযোগ বিভাগ ৷ মায়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াংগন থেকে 425 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কোকো আইল্যান্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: মোকার শঙ্কা সরতেই বঙ্গে ঝড়-বৃষ্টির কথা শোনাল হাওয়া অফিস
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মোকার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কক্সবাজার এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ৷ বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’-কে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপ মিলিয়ে প্রায় তিনশোর বেশি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ পাশাপাশি, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বহু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ৷ বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি, রাষ্ট্রসংঘের উদ্ধারকারী দল সেখানে কাজ করছে ৷ শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে ৷ সেখানকার একটি রোহিঙ্গা শিবির ঘূর্ণঝড়ের কারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ বহু মানুষ আহত হয়েছেন ৷ সেখানে প্রায় 12টির মতো অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে ৷