লাহোর, 15 মার্চ: তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হল পুলিশকে ৷ দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পরে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কর্মী-সমর্থকেরা ৷ ইমরানের বাড়ির দিকে পুলিশ অগ্রসর হচ্ছে খবর পৌঁছোতেই লাহোরের জামান পার্কের দখল নিয়ে নেয় পিটিআই-এর কর্মী-সমর্থকরা (PTI workers take control of Zaman Park ) ৷ ইমরানের বাড়ি লাগোয়া জামান পার্ক এলাকা থেকে পিটিআই সমর্থকদের হঠাতে গেলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে দু'পক্ষ ৷ সূত্রের খবর, পিটিআই সমর্থকদের প্রবল প্রতিরোধের জেরে অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য় হয় পুলিশ (PTI supporters clash with police) ৷
ইমরানের গ্রেফতারির আশঙ্কায় মঙ্গলবার বিকাল থেকেই পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লাগোয়া ক্য়ানাল রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে কয়েক হাজার পিটিআই কর্মী-সমর্থকেরা ৷ সেখানেই পুলিশ তাদের ওপর প্রথমে জলকামান এবং পরে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ ৷ প্রাথমিকভাবে ক্য়ানাল রোড থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে পারলেও, পিটিআই সমর্থকরা এরপর কার্যত জামান পার্কের দখল নিয়ে নেয় ৷ অন্য়দিকে লাগাতার এই বিক্ষোভ অবরোধের জেরে এদিন রাত পর্যন্ত ইমরান খানের বাড়ির দরজা পর্যন্ত পৌঁছোতেই পারেনি সে দেশের পুলিশ ৷ দু'পক্ষের সংঘর্ষে মুহূর্তে গোটা এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোরও অভিযোগ করেছে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ ৷ অন্য়দিকে রাতেই এক ভিডিয়ো বার্তায় সমর্থকদের উদ্দেশে ইমরান খান বলেন, "আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি ৷ আমি ইতিমধ্য়েই জানিয়েছিলাম, ওরা (পুলিশ) আজ আসবে ৷ সেই মতোই এখন বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷ এমনকি তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর জওয়ানরাও আছে ৷ তাদের ধারণা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী এই ঘরে লুকিয়ে আছে ৷ অথচ সবচেয়ে বড় অপরাধীরা এখন সরকারে বসে আছে ৷"
এদিন টানা সাত ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ চলে ইমরানের দলের লোকেদের৷ প্রতিবাদ ক্রমে হিংসাত্মক হয়ে উঠলে কাঁদানে গ্য়াসের সেল ছুঁড়ে, লাঠি চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ ৷ এরপরই ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে কর্মীদের ফের উজ্জিবীত করে তোলার পাশাপাশি সমর্থকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র বিরোধীতা করেন ইমরান ৷ তিনি বলেন, "বিক্ষোভ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ৷ সংবিধান এবং দেশের আইন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার দেয় ৷" সেইসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, "ওরা আমাকে ভয় পেয়েছে৷ তাই এসব করে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরাতে চায়৷ এ লড়াই আপনারা থামাবেন না৷ স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের লক্ষে লড়াই আপনাদের চালিয়ে যেতে হবে ৷"
আরও পড়ুন: আজই গ্রেফতার ইমরান খান ? প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘিরে ফেলল পুলিশ