মাল, 14 জানুয়ারি: সেনা সরানোর আর্জি নিয়ে নয়াদিল্লির দরবারে মলদ্বীপ ৷ বিবৃতি দিল ভারতও ৷ সদ্য চিন সফর শেষ করে ভারতীয় সেনাকে দেশ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজু ৷ একটি সাংবাদিক বৈঠকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি মুইজু আনুষ্ঠানিকভাবে 15 মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনা বাহিনী প্রত্যাহার করতে বলেছেন ৷ এবার সেই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরই উত্তর দিয়েছে দিল্লি ৷ মলদ্বীপের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা চায় ভারত ৷ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খোঁজা হবে বলে দিল্লির তরফে জানানো হয়েছে ৷
দিল্লির তরফে বলা হয়েছে, রবিবারই দুই দেশের আধিকারিকদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে ৷ যেখানে বলা হয়েছে, সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিষয়ে যাওয়ার আগে বুঝতে হবে দুই দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়টি ৷ যেখানে মলদ্বীপে মানবিক সাহায্য পৌঁছনর মতো পরিস্থিতি রাখা প্রয়োজন বলে মনে করে ভারত ৷ যাতে ভারত মলদ্বীপকে সময় বিশেষে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারে সেই পথ খোলা রাখতে হবে ৷ সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে দুই দেশকেই পরবর্তী আলোচনায় যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত ৷ এই নিয়ে আরও একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে করা হবে বলে জানাচ্ছে দিল্লি ৷ এদিকে, রবিবার দ্বীপরাষ্ট্রের এক প্রবীণ আধিকারিক বলেন, প্রায় দু'মাস আগে প্রথমবার সেনা অপসারণ চাওয়া হয়েছিল। এর প্রায় দু'মাস পর সেনা সরানোর সময়ই বেঁধে দিল মলদ্বীপ সরকার ।
সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মলদ্বীপে 88 জন ভারতীয় সামরিক কর্মী রয়েছেন । সান অনলাইন সংবাদপত্র জানিয়েছে, ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না । এটি রাষ্ট্রপতি মুইজু ও তাঁর প্রশাসনের ঘোষিত সিদ্ধান্ত। মহম্মদ মুইজু 2023 সালের নভেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ৷ নির্বাচনী প্রচারেই তাঁর ভারত বিরোধী মনোভাব প্রকাশ্যে এসেছিল ৷ মুইজু জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি মলদ্বীপ থেকে প্রায় 75 জন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের ছোট দলকে দেশ থেকে সরিয়ে দেবেন এবং মলদ্বীপের 'প্রথম ভারত' নীতিতেও পরিবর্তন আনবেন ৷ সেনা প্রত্যাহারের সময় ঠিক করে দিয়ে তারই শুরুটা হয়ে গেল বলে মত কূটনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।
অতীতে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানরাই বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্ক বিবেচনা করে প্রথমে ভারত সফর করেছিলেন ৷ তারপরে চিন সফরে যান ৷ চিন মলদ্বীপে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে দ্বীপরাষ্ট্রে তার প্রভাব বিস্তার করেছে । মুইজুই প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি প্রথমে চিন সফরে যান ৷
সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর এই সফরকে ঘিরে অবমাননাকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী ৷ প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরকে মলদ্বীপের খরচে লাক্ষাদ্বীপে পর্যটন বাড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয় । এরপরেই এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয় । পরে অবশ্য ওই তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছে মলদ্বীপ সরকার ৷
আরও পড়ুন: